জাতীয়

২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৪৮৯ জন করোনায় আক্রান্ত

দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের (কোভিড) সংক্রমণ এবং এতে মৃত্যু ক্রমেই বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩ হাজার ৪৮৯ জনের শরীরে শনাক্ত হয়েছে এ ভাইরাস। ফলে এখন পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৭২ হাজার ১৩৪ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন আরও ৪৬ জন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২ হাজার ১৯৭ জনে।

Advertisement

বুধবার (৮ জুলাই) দুপুরে করোনাভাইরাস বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। অনলাইনে বুলেটিন উপস্থাপন করেন অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

নমুনা সংগ্রহ এবং পরীক্ষা

অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৫ হাজার ৮৮৩টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ১৫ হাজার ৬৭২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো আট লাখ ৮৯ হাজার ১৫২টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও তিন হাজার ৪৮৯ জনের মধ্যে। ফলে শনাক্ত করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল এক লাখ ৭২ হাজার ১৩৪ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ৪৬ জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ১৯৭ জনের। তাদের মধ্যে পুরুষ এক হাজার ৭৪১ জন ও নারী ৪৫৬ জন। শতাংশের হিসেবে পুরুষ ৭৯ দশমিক ২৪ এবং নারী ২০ দশমিক ৭৬ শতাংশ। 

Advertisement

বয়স ও বিভাগ অনুযায়ী মৃত্যু

মৃত ৪৬ জনের মধ্যে ২০ বছরের বেশি বয়সী দুজন, ত্রিশোর্ধ্ব দুজন, চল্লিশোর্ধ্ব একজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ১৫ জন, ষাটোর্ধ্ব ১৬ জন, সত্তরোর্ধ্ব ছয়জন, ৮০ বছরের বেশি বয়সী তিনজন এবং ৯০ বছরের বেশি বয়সী একজন।

মৃতদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ১৪, রাজশাহী বিভাগের তিনজন, খুলনা বিভাগের ৯ জন, রংপুর বিভাগের একজন, সিলেট বিভাগের চারজন এবং বরিশাল বিভাগের তিনজন। এর মধ্যে ৩৮ জন মারা গেছেন হাসপাতালে বাকি আটজন বাসায়।

করোনাভাইরাসে মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে- ঢাকা বিভাগে ৫০ দশমিক ৮০ শতাংশ, চট্টগ্রামে ২৫ দশমিক ৯৯ শতাংশ, রাজশাহীতে ৫ দশমিক এক শতাংশ, খুলনায় ৪ দশমিক ৮২ শতাংশ, বরিশালে ৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ, সিলেটে ৪ দশমিক ৩২ শতাংশ, রংপুরে ৩ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ২ দশমিক ৩৭ শতাংশ রয়েছেন।

Advertisement

২৪ ঘণ্টায় সুস্থ

গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ২ হাজার ৭৩৬ জন। মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৮০ হাজার ৮৩৮ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় যে ৪৬ জন মারা গেছেন, তাদের মধ্যে পুরুষ ৩৮ জন এবং নারী আটজন।

শনাক্ত, সুস্থতা ও মৃত্যুর হার

বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ২২ দশমিক ২৬ শতাংশ। সবমিলিয়ে, নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ। এখন পর্যন্ত রোগী শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৪৭ দশমিক ৯৬ এবং মৃত্যুর হার এক দশমিক ২৮ শতাংশ।

আইসোলেশন-কোয়ারেন্টাইনের তথ্য

গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ৭৯২ জনকে। এ পর্যন্ত মোট আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে ৩৩ হাজার ১৪৩ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৮০৯ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ১৬ হাজার ২৮৭ জন।বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন ১৬ হাজার ৮৫৬ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে ২ হাজার ৬৯১ জনকে, এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে তিন লাখ ৮৪ হাজার ২৯৯ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৩ হাজার ১৩৪ জন। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইন থেকে মোট ছাড় পেয়েছেন ৩ লাখ ২১ হাজার ৩০১ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৬২ হাজার ৯৯৮ জন।

গতকালের পরিস্থিতি

মঙ্গলবার ৫৫ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। হিসেব অনুযায়ী গতকাল পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছিল দুই হাজার ১৫১ জনে। একইদিন আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছিলেন আরও তিন হাজার ২৭ জন। গতকাল পর্যন্ত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল এক লাখ ৬৮ হাজার ৬৪৫ জন।

বৈশ্বিক পরিস্থিতি

করোনাভাইরাসের ছোবলে গোটা বিশ্ব এখন মৃত্যুপুরী। গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে ছড়ানোর পর বিশ্বজুড়ে এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা এখন প্রায় এক কোটি ২০ লাখ। মৃতের সংখ্যা পাঁচ লাখ ৪৬ হাজার ছাড়িয়েছে। তবে সাড়ে ৬৯ লাখের বেশি রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। প্রথম মৃত্যু হয় ১৮ মার্চ।

এমইউ/এফআর/এমকেএইচ