করোনাভাইরাসের কারণে মালয়েশিয়ায় গ্লাভস ব্যবসা চাঙা হয়ে উঠেছে। হঠাৎ পণ্যটির চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এ খাতে বিনিয়োগকারীদের আঙুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে। গ্লাভ পাওয়ার হাউস হিসেবে মালয়েশিয়ার উত্থান গত শতকের আশির দশকে। সেই সময়ে এইডস মহামারির কারণে পণ্যটির চাহিদা অনেক বেড়ে গিয়েছিল।
Advertisement
স্বল্প শ্রমিক ব্যয়, পর্যাপ্ত রাবার চাষ, সঙ্গে দেশটির বৃহৎ তেল শিল্প, সবকিছু মিলিয়ে মালয়েশিয়ার গ্লাভস উৎপাদকরা মহামারির কারণে সৃষ্ট সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন বরাবরই। বিশ্বের ৬৫ শতাংশ রাবার গ্লাভস সরবরাহকারী মালয়েশিয়ায় বর্তমানে এ খাতে অন্তত চারজন বিলিয়নেয়ার রয়েছেন। তাদের দু’জনই শতকোটি ডলারের সম্পদের মালিক বনেছেন চলতি বছরে।
সর্বশেষ এ তালিকায় নাম লিখিয়েছেন সুপারমাক্স করপোরেশনের থাই কিম সিম। গত জুন মাসে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়ে যাওয়ায় তার সম্পদমূল্য ১০০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে বলে সম্প্রতি ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার ইনডেক্সে বলা হয়েছে।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় গ্লাভস উৎপাদক টপ গ্লোভ করপোরেশন, হার্তালেগা হোল্ডিংস বারহাদ ও কোসান রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ বারহাদ সবাই এ চাহিদা বৃদ্ধির সুবিধাভোগী হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে সুপারম্যাক্স। চলতি বছর এখন পর্যন্ত কোম্পানিটির বাজার মূলধন বেড়েছে পাঁচগুণ।
Advertisement
সিজিএস-সিআইএমবি রিসার্চের গবেষক ওয়াল্টার বলেছেন, ‘করোনার মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা থেকে শুরু করে রিটেইল-সব খাতেই গ্লাভস ব্যবহারের নতুন একটি রীতি চালু হয়েছে। আর যত বেশি গ্লাভস ব্যবহার হবে, এর উৎপাদকরাও দীর্ঘমেয়াদে বেশি লাভবান হবে’।
ওয়াল্টার বলেন, ‘সুপারমাক্সের সাফল্যের কাহিনিটা একটু আলাদা। অন্য উৎপাদকদের বেশিরভাগই সাপ্লায়ার হিসেবে কাজ করে। কিন্তু সুপারম্যাক্স নিজেদের একটি ব্র্যান্ড চালু করেছে এবং এর মাধ্যমে সফলতা পেয়েছে’।
থাই কিম সিম ১৯৮৭ সালে স্ত্রী তান বি গিওককে সঙ্গে নিয়ে সুপারম্যাক্স প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথম দিকে তারা ল্যাটেক্স গ্লাভস বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত ছিল। ১৯৮৯ সালে তারা ম্যানুফ্যাকচারিং শুরু করে। মালয়েশিয়ার প্রথম কোম্পানি হিসেবে নিজেদের ব্র্র্যান্ডের জন্য গ্লাভস তৈরি শুরু করে তারা। মূলত মালয়েশীয় সরকার দেশটির নিজস্ব পণ্যের ব্র্যান্ডিংয়ে জোর দেয়ার কারণেই সুপারম্যাক্স এ উদ্যোগ নেয়। বর্তমানে তারা ল্যাটেক্স এক্সামিনেশন গ্লাভসের বৈশ্বিক চাহিদার ১২ শতাংশ পূরণ করছে। বিশ্বের ১৬০টির বেশি দেশে রফতানি হচ্ছে তাদের পণ্য।
মালয়েশিয়ার এসব গ্লাভস মুঘলদের সম্পদ আরো বাড়বে বলে ধরে নেয়া যায়। কারণ চলতি বছর রাবার গ্লাভসের বৈশ্বিক চাহিদা ১১ শতাংশ বেড়ে ৩৩ হাজার পিসে উন্নীত হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। আর এর দুই-তৃতীয়াংশেরই জোগান দেবে মালয়েশীয় উৎপাদকরা।
Advertisement
এমআরএম/এমকেএইচ