এক সময় ছিলেন ফুটবলার। বিভিন্ন ক্লাবের হয়ে আশির দশকে প্রথম বিভাগে ফুটবল খেলেছেন। তিনি ছিলেন ডিফেন্ডার। বল নিয়ে তার সামনে এলে অনেক ফুটবলারই ঘাবড়ে যেতেন। ফুটবল থেকে হঠাৎ চলচ্চিত্রে পা রাখেন।
Advertisement
নজরুল থেকে তার নাম দেয়া হয় কাবিলা। ১৯৮৮ সালে ‘যন্ত্রণা’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে অভিনয় জীবন শুরু করেন। প্রথম দিকে তিনি নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয় করে জনপ্রিয়তা অর্জন করলেও পরবর্তীকালে কৌতুকাভিনেতা হিসেবে আরও বেশি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। প্রায় হাজারের ওপর চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তাকে নিয়ে লিখেছেন অরণ্য শোয়েব-
কৌতুক অভিনেতা হিসেবে কাবিলা যখন অভিনয় শুরু করলেন তখন তার কণ্ঠে বরিশালের আঞ্চলিক ভাষা ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। পর্দায় তার চালচলন, পোশাক, অভিনয় দেখে দর্শক হাসিতে লুটিয়ে পড়েন। নির্মাতাদের কাছে তিনি হয়ে ওঠেন অনিবার্য এক অভিনেতা।
হঠাৎ করেই তার কণ্ঠনালীতে ভয়াবহ অসুখ দেখা দেয়। দুই বছর আগে গলায় অস্ত্রোপচারও করা হয়েছে। কিছুটা সুস্থ হলেও তার স্বভাবসুলভ স্বরে কথা বলতে পারেন না কাবিলা। সিনেমায় আগের মতো কাজ করেন না। বেছে বেছে পছন্দ হলে টুকটাক অভিনয় করার চেষ্টা করেন। সেক্ষেত্রে তার সংলাপ ডাবিং করা হয়।
Advertisement
এই মুহূর্তে সময় কাটছে তার গ্রামের বাড়ি বরিশালে। কাবিলা বলেন, ‘প্রায় দুই সপ্তাহের মতো হয়েছে আমি এখানে এসেছি। আগে ঢাকায়ই ছিলাম। এখানে এসেছি একটু ভালো লাগছে। প্রাণ ভরে খোলা হাওয়ায় হাঁটা চলা করা যাচ্ছে। ব্যায়াম করছি। নিজেকে ফিট রাখছি। আসলে গ্রামে আসলে আমার খুবই ভালো লাগে।’
গ্রামে সময় কাটছে কি করে, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘গ্রামে আমার একটি বাগানবাড়ি আছে। এখানে শুটিং স্পট করার চিন্তা ভাবনা করছি। এই বাগানবাড়ি নিয়েই এখন সময় কাটছে। তাছাড়া দুটো পুকুর আছে সেখানে মাছ চাষ হচ্ছে। এখানে ‘কাবিলা ফুটবল একাডেমি’ নামে একটি স্পোর্টস ক্লাবও আছে। মাঝে মধ্যে সেখানে গিয়ে ছেলেদের বিভিন্ন টিপস দিই। আড্ডা দিই। এভাবেই সময় কেটে যায়।’
‘ঢাকায় কিছু কাজ আছে। চলতি মাসের ৭ তারিখে যাবো। সেখানে কাজগুলো গুছিয়ে আবার গ্রামে আসবো’- যোগ করেন কাবিলা।
নিজের সিনেমার ব্যস্ততা প্রসঙ্গে মজার মানুষ কাবিলা বলেন, ‘শেষ শুটিং করেছিলাম দেবাশীষ বিশ্বাস পরিচালিত ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ ২’ ছবির জন্য। এরপর কিছু নতুন সিনেমার ব্যাপারে কথা হলেও এখন করোনার জন্য সব বন্ধ। অবস্থা পরিবর্তন হলে কিছু কাজ করবো। এই গলা নিয়ে কাজ করতে কষ্ট হয়। তবুও করতে হবে। কারণ এটা তো পেশা।’
Advertisement
‘তবে যেটা মনে হচ্ছে করোনা পুরোপুরি বিদায় নিতে সময় লাগবে। এতো দীর্ঘ সময় বেকার হয়ে থাকা সমস্যার। তাই অনেকে শুটিং শুরু করে দিয়েছেন। এমন অবস্থায় কাজ করা ঝুঁকির। তবুও যদি আমাকে কারও প্রয়োজন হয় যাদের শিডিউল দেয়া আছে, তবে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে কাজ করার চেষ্টা করবো। আমি চাইবো না আমার জন্য কোনো প্রযোজক ও পরিচালকের ক্ষতি হোক।’
শেষবেলায় সবার কাছে তিনি দোয়া চেয়েছেন। সবাইকে নিরাপদ ও সাবধানে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন কাবিলা।
এলএ/এমএস