কৃষি ও প্রকৃতি

গরুর কৃত্রিম প্রজননে ব্যর্থতা, কৃষকরা হতাশ

ঝালকাঠির রামনগর এলাকার কৃষক হারুন অর রশিদের গোয়ালে ৫টি গরু। এরমধ্যে ১টি বলদ ও ৪টি গাভি। বড় গাভিটিকে প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে ডাক্তার এনে কৃত্রিম প্রজননের জন্য ইনজেকশন দেওয়া হয়। তাতে কোনো কাজ হয়নি। পরে আবার ইনজেকশন দেওয়া হয়। এভাবে ৪ বার ইনকেশন দেওয়ার পরেও কাজ হয় না। পরে বাধ্য হয়ে প্রাকৃতিক প্রজনন করান। তাতে গাভিটি গর্ভবতী হয়। এভাবেই কৃত্রিম প্রজননের ব্যর্থতার কথা জানান কৃষক হারুন অর রশিদ।

Advertisement

একই এলাকার নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক চাকরিজীবী বলেন, ‘আমার একটি গাভির ৩ বার কৃত্রিম প্রজননের চেষ্টা করি। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে কৃত্রিম প্রজননের জন্য যে ইনজেকশন দেওয়া হয়, তা অকার্যকর। তাই বারবার দেওয়ার পরেও কোনো সুফল পাওয়া যায় না।’

উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (প্রাণিস্বাস্থ্য) মু. জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রজননের লক্ষণ দেখার ১২ ঘণ্টা থেকে ১৮ ঘণ্টার মধ্যে কৃত্রিম প্রজননের ইনজেকশন পুশ করতে হয়। অনেক সময় গরুর মালিকও সময়মতো লক্ষণ বোঝেন না। লক্ষণ বুঝতে বুঝতে কৃত্রিম প্রজননের নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হয়ে যায়। তবে সময় অতিবাহিত হলেও গাভির দেহে উত্তেজনা থাকে। তখন কৃত্রিম প্রজননের ইনজেকশন দিলে তাতে সুফল পাওয়া যায় না। গাভির দেহ রোগাক্রান্ত না হলে প্রথমবারে সঠিক সময়ে কৃত্রিম প্রজননে গাভি গর্ভবতী হবে। সুস্থ গাভির প্রজনন বিফল হলে ১৮-২৪ দিনের মধ্যে পুনরায় লক্ষণ দেখা যাবে। রোগাক্রান্ত হলে দেখা যাবে না।’

কৃত্রিম প্রজনন শতকরা ৬০ ভাগ কার্যকর হয় বলে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহাম্মদ ছাহেব আলী বলেন, ‘যথাসময়ে এবং যথাস্থানে ইনজেকশন পুশ না করা, গাভির দেহে প্রজনন কোয়ালিটি না থাকা, হরমোন ঘাটতি, গাভি কৃমি আক্রান্ত, পুষ্টিহীন বীর্যকণা ব্যবহার এবং গাভির মাতৃত্বজনিত সমস্যা থাকলে কৃত্রিম প্রজননে সুফল পাওয়া যায় না। এ জন্য শতকরা ৪০ ভাগ প্রজনন বিফলে যায়।’

Advertisement

অনুর্বর স্পার্মের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর থেকে স্পার্ম সরবরাহ করা হয়। যেসব বলদ থেকে স্পার্ম সংগ্রহ করা হয়, তা অনেক সময় অস্বাস্থ্যকর হয়ে থাকে। আবার স্পার্ম সংগ্রহ করার পর সংরক্ষণশালায় বেশি দিন থাকলে তা অকার্যকর হতে পারে।’

মো. আতিকুর রহমান/এসইউ/এমকেএইচ