জেলা শৈলকুপা উপজেলার নবগ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান ১০ বিঘা জমি লিজ নিয়ে গড়ে তুলেছেন কৃষি খামার। খামারে তিনি বিভিন্ন মৌসুমী ফল ও ফসলের চাষ করেন। কিন্তু এবার ২০ শতক জমিতে অসময়ে চাষ করেছেন গ্রীষ্মকালীন তরমুজ। আম্ফান ঝড়ে প্রথম আসা ফুল ও কুড়ি নষ্ট হলেও তরমুজ চাষে লাভবান হয়েছেন তিনি।
Advertisement
স্থানীয় কৃষক নাসির মিয়া বলেন, ‘অসময়ে হাবিবুরের তরমুজ চাষ নিয়ে অনেকেই হাসাহাসি করেছেন। কিন্তু চাষে ফলন ভালো এবং স্বাদ ভালো হাওয়ায় এখন অনেকেই চাষ করতে তার কাছে পরামর্শ নিতে আসেন। আমি নিজেও ভাবছি, এ ফলের চাষ করবো।’
তরমুজ চাষি হাবিবুর রহমান বলেন, ‘দুই বছর আগে অন্যের ১০ বিঘা জমি লিজ নিয়ে একটি সমন্বিত কৃষি খামার করি। এরপর আধুনিক পদ্ধতির চাষাবাদের জন্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করি। তরমুজ সাধারণত শীতকালে বীজ রোপণ করে বৃষ্টি মৌসুমের আগেই তা শেষ হয়। কিন্ত কৃষি অফিস গত এপ্রিল মাসে আমাকে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষের জন্য উৎসাহিত করে।’
তিনি বলেন, ‘কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী ২০ শতক জমি তৈরি করি। সেখানে ৫টি বেড করে মাটির সঠিক আর্দ্রতা ধরে রাখতে মালচিং পেপার দিয়ে ঢেকে রাখি। এরপর এপ্রিলের ২২ তারিখে হাইব্রিড সোহেলি জাতের বীজ রোপণ করি। এতে খরচ হয় ১০-১৫ হাজার টাকা। বীজ রোপণের ৩০ দিনের মধ্যে গাছ মাচায় উঠে যায়। ৩৫ দিনের মধ্যে গাছে প্রচুর ফুল ও কুড়ি আসে। কিন্তু আম্ফানে অনেকটাই নষ্ট হয়। তারপরও মাচার ডোগায় ডোগায় ঝুলে আছে ছোট-বড় কয়েকশ তরমুজ।’
Advertisement
হাবিব বলেন, ‘অসময়ের এ তরমুজের ব্যাপক চাহিদা বাজারে। রোপণের পর ৬০-৬৫ দিনের মধ্যে তরমুজ বেচাকেনা শুরু হয়। প্রতিটি তরমুজ ৫০-৬০ টাকা দরে বিক্রি করি। আম্ফানের ক্ষতির পরও ১৫ শতক জমি থেকে ৩০-৩৫ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করতে পারবো।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার কুন্ডু বলেন, ‘শৈলকুপায় হাবিবুর রহমান অসময়ে তরমুজ চাষ করেছেন। কৃষক হাবিব বৃষ্টি মৌসুমের মধ্যে মাচা করে তরমুজ চাষ করে সফল হয়েছেন। আম্ফানে ক্ষতি না হলে বাম্পার ফলন হতো। অসময়ে কোনো ফল হলে তার প্রতি ক্রেতাদের একটু বেশি আগ্রহ থাকে। এ তরমুজ চাষ করে একজন চাষি ২ মাসে সব খরচ বাদে ৫০-৬০ হাজার টাকা আয় করতে পারেন।’
আব্দুল্লাহ আল মাসুদ/এসইউ/এমএস
Advertisement