দেশজুড়ে

নারায়ণগঞ্জে চালু হলো আইসিইউ, দুর্নীতির তদন্ত দাবি সেলিম ওসমানের

অবশেষে নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুরে অবস্থিত ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট (করোনা) হাসপাতালে ১০ শয্যার নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) উদ্বোধন করা হয়েছে। সরকারিভাবে আইসিইউ শয্যা ও ভেন্টিলেটর পাওয়ার পর এমপি সেলিম ওসমানের উদ্যোগে আরও ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে অন্যান্য যন্ত্রপাতি ক্রয় করে নারায়ণগঞ্জবাসীর জন্য দ্রুত আইসিইউ সেবা প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়। তবে আইসিইউ চালুর পেছনে যার অবদান সবচেয়ে বেশি সেই এমপি শামীম ওসমান উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত না থাকায় অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান আইসিইউ ইউনিটটি উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি এমপি সেলিম ওসমান বিগত দিনে হাসপাতালের অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা তুলে ধরে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দেন। পাশাপাশি দোষীদের শাস্তির আওতায় আনার কথা বলেন।

তিনি বলেন, পাঁচ বছর ধরে আমি এই হাসপাতাল নিয়ে কাজ করছি। আমি সাবেক একজন এমপি, ডিসি, এসপি, ব্যবসায়ী নেতা, সাংবাদিক সবাইকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে কাজ শুরু করেছিলাম। পাঁচ বছরে দেখেছি এই হাসপাতালে শুধু চুরি আর চুরি। আমাকেও বোকা বানানো হয়েছে। আমি ব্যর্থ হয়েছি। একটি চক্র সবকিছু গ্রাস করে রেখেছিল। আমি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের বিচার দাবি করলাম। তাকে ট্রান্সফার করে রাজশাহী পাঠিয়ে দেয়া হলো। আসলে তাকে বাঁচিয়ে দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, বিগত দিনে যারা হাসপাতাল থেকে লুটপাট করেছে সেই সবকিছুর হিসাব তাদের বুঝিয়ে দিয়ে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

Advertisement

ডাক্তারদের সম্মুখযোদ্ধা আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, এই হাসপাতালটিকে ৩০০ শয্যা হাসপাতাল বলা হয়। আসলে এটা এখন প্রস্তাবিত ৫০০ শয্যা হাসপাতাল। যার উন্নয়ন কাজের জন্য একটি অংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে। ফলে হাসপাতালটি এখন ৩০০ শয্যাও নেই। এর মাঝেও আমাদের ডাক্তার-নার্সরা অনেক কষ্ট করে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের ডাক্তাররা হচ্ছেন সম্মুখযোদ্ধা। উনারা রোগীকে সুস্থ করতে যুদ্ধটা করবেন করোনার বিরুদ্ধে। আর আমরা যুদ্ধটা করব সেই সকল চোরদের বিরুদ্ধে যারা করোনাকে পুঁজি করে লুটপাট করছে। করোনাকে নিয়ে ব্যবসা করছে সেই সকল করোনা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে।

সাংবাদিকদের সহযোগিতা চেয়ে তিনি বলেন, আমি সাংবাদিক ভাইদের সহযোগিতা চাই। আপনার লেখনির মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে সচেতন করেন।

তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি সরকারি হাসপাতালটির উন্নয়ন করার জন্য। আমরা নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে প্রায় দুই কোটি টাকার মতো একটি ফান্ড তৈরি করেছি। কিন্তু হাসপাতালটি সরকারি হওয়ায় আমাদের সেই অর্থ ব্যয় করতে সরকারি অনুমোদনের প্রয়োজন রয়েছে। আমরা এবার সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে অনুমোদন আনব। আমি বেঁচে থাকতে নারায়ণগঞ্জের মানুষের কোনো কষ্ট হতে দেব না।

করোনাকালীন নানা অনিয়ম আর দুর্নীতির কথা তুলে ধরে সেলিম ওসমান বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন দেশের মানুষকে করোনা থেকে রক্ষা করতে প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন তখন দেখা যাচ্ছে আওয়ামী লীগের কিছু অসাধু নেতা চাল-চুরিতে ব্যস্ত। হাসপাতালে ডাক্তারদের খাওয়ার খচর হয় ২০ কোটি টাকা। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে ওই সকল অসাধু নেতারা দলীর নেত্রীর নির্দেশ অমান্য করছেন।

Advertisement

শাহাদাত হোসেন/বিএ