জাতীয়

ভাড়া দিতে দেরি, ছাত্রদের সার্টিফিকেট ময়লার গাড়িতে দিলেন বাড়িওয়ালা

‘একজন শিক্ষার্থীর সারাজীবনের অর্জন তার সার্টিফিকেট। সেই সার্টিফিকেট ও মূল্যবান জিনিসপত্রসহ সবকিছু সিটি করপোরেশনের গাড়িতে তুলে দিয়েছে বাড়িওয়ালা। যখন জানতে পারলাম সঙ্গে সঙ্গে ঢাকায় চলে আসি। এসে দেখি জিনিসপত্র কিছুই নেই; বাড়িওয়ালা সব ফেলে দিয়েছে।’

Advertisement

সার্টিফিকেট আর মূল্যবান সব জিনিসপত্র হারিয়ে এভাবেই অশ্রুসিক্ত নয়নে বর্ণনা দিচ্ছিলেন ঢাকা কলেজের স্নাতক শেষবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মাদ সজীব। দীর্ঘ চারবছর ধরে রাজধানীর কলাবাগান এলাকার ৪/এ, ওয়েস্টার্ন স্ট্রিটের রুবী ভবনের নিচতলায় থাকতেন তিনি।

শুধু সজীব নয়, মেসে থাকার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, ল্যাপটপসহ শিক্ষাজীবনে অর্জিত মূল্যবান সব সার্টিফিকেট হারিয়েছেন একই ফ্ল্যাটে থাকা আরও আট শিক্ষার্থী। আর অভিযুক্ত বাড়িওয়ালার নাম মুজিবুল হক ওরফে কাঞ্চন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কোনো ধরনের নোটিশ না দিয়েই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আর জিনিসপত্রসহ ফ্ল্যাটে ব্যবহৃত সবকিছু বাসা থেকে বের করে তুলে দেয়া হয়েছে সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়িতে। আর কাজটি করেছেন বাড়িওয়ালা মুজিবুল হক ওরফে কাঞ্চন। খবর পেয়ে শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ এলাকা থেকে ফ্ল্যাটে চলে এলেও ঢুকতে পারেননি তারা। পাননি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও।

Advertisement

ভুক্তভোগী সজীব জাগো নিউজকে বলেন, ‘মার্চের ৫ তারিখ পর্যন্ত ভাড়া পরিশোধ করে আমরা বাড়ি চলে যাই। এরপর বাড়িওয়ালার বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি বিল বাবদ আরও ১৫ হাজার টাকা মোবাইলে পাঠাই। বাকি টাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে ঢাকায় এসে পরিশোধ করার কথা ছিল। টাকা পাঠানোর পরেই বাড়িওয়ালা আর ফোন রিসিভ করেননি। পরে জানতে পারি, আমাদের মালামাল সব ফেলে দেয়া হয়েছে। ঢাকায় ফিরে কিছুই আর অবশিষ্ট পাইনি। আমরা আমাদের সার্টিফিকেটসহ জিনিসপত্রগুলো ফেরত চাই, আমরা এর বিচার চাই।’

বাড়িওয়ালার এমন অমানবিক আচরণে ভুক্তভোগীর তালিকায় রয়েছেন উচ্চমাধ্যমিকে চার পরীক্ষার্থীও। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের সঙ্গে এই শিক্ষার্থীদের খোয়া গেছে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহনের মূল রেজিস্ট্রেশন কার্ড। এখন পরীক্ষায় অংশ নেয়া নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা।

এ বিষয়ে কথা বলতে বাড়ির মালিক মুজিবুল হক ওরফে কাঞ্চনকে একাধিকবার ফোন করলেও তার মুঠোফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

এই ঘটনায় মামলা হয়েছে জানিয়ে নিউমার্কেট জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল হাসান জাগো নিউজকে বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে মামলা হয়েছে। আমরা অভিযুক্ত বাড়ির মালিককে ধরতে তার বাসায় অভিযান চালিয়েছি। আসামিকে পাওয়া যায়নি। তবে চেষ্টা চলছে। আমরা আসামিকে ধরে ফেলব।’

Advertisement

নাহিদ হাসান/এসআর/বিএ