আমাদের আগেকার জীবন বদলে গেছে অনেকটাই। আগের খুব সকালে ওঠার অভ্যাসের বদলে বেলা করে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস হয়েছে অনেকেরই। কারণ এখনও অফিসে যাওয়ার তাড়া নেই অনেকের। কারণ তারা বাড়িতে থেকে অফিসের কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন। সকালটা ঘুমিয়ে কাটানোর কারণে রাতেও ঘুমাতে যেতে দেরি হয়। আবার ঘুম থেকে উঠতে না উঠতে অফিসের কাজ শুরু হয়ে যায়। তখন তাড়াহুড়ো করে বিছানায় বসেই ল্যাপটপে কাজ শুরু করেন অনেকে। বৈশ্বিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, ওয়ার্ক ফ্রম হোমে প্রায় ৭০% পেশাজীবী তাদের বিছানায় বসে কাজ করে থাকেন।
Advertisement
এটি ঠিক যে, ওয়ার্ক ফ্রম হোম আমাদের নানারকম সুবিধা দেয়, তবে অফিসের কাজের পাশাপাশি লক্ষ রাখতে হবে সেসব কাজ করতে গিয়ে যেন আমাদের স্বাস্থ্যের কোনো সমস্যা না হয়। এর জন্য জানা প্রয়োজন কোনটি করা ঠিক আর কোনটি করা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। যেমন বিছানায় বসে অফিসের কাজ করা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। আর এমনটাই প্রকাশ করেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া-
বিছানায় বসে কাজ না করার সবচেয়ে বড় কারণ হলো, এটি আসলে কাজের জন্য নয়। হার্ভার্ডের স্লিপ মেডিসিন বিভাগের মতে, যে জায়গায় ঘুমাচ্ছেন সেখান থেকে কারও কাজ করা উচিত নয়। শোবার ঘর এবং আপনার মধ্যে স্বাস্থ্যকর মানসিক সম্পর্ক নিশ্চিত করার জন্য ল্যাপটপ, টিভি এবং কাজের জিনিসগুলো সেখানে না রাখা গুরুত্বপূর্ণ ।
যখন আপনি বিছানায় বসে কাজ করেন এবং তারপরে সেখানে ঘুমানোর চেষ্টা করেন, তখন আপনার মন শোবার ঘরটিকে আরাম এবং ঘুমের জন্য উপযুক্ত ভাবে না।
Advertisement
যদি আপনার মস্তিষ্ক কাজের জায়গা এবং বিশ্রামের জায়গাটিকে গুলিয়ে ফেলতে শুরু করে, তবে এটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য জটিল সমস্যা ডেকে আনতে পারে। এটি আপনাকে নিয়মিত কর্মক্ষেত্রে থাকার অনুভূতি দিতে পারে, যা হওয়া উচিত নয়।
আপনি বিছানায় বসে কাজ করতে গেলে সঠিক ভঙ্গী বজায় রাখতে পারবেন না, ফলে পিঠে ব্যথা এবং অস্বস্তি হতে পারে। এছাড়াও, আপনি যদি আপনার শোবার ঘরে অনেকটা সময় কাজ করেন তবে ল্যাপটপের নীল আলো আপনার ঘুমে অসুবিধা সৃষ্টি করতে পারে। বিছানায় যাওয়ার অন্তত এক ঘণ্টা আগে সবরকম গ্যাজেট থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
বাসায় বসে অফিসের কাজ করলে নিজের জন্য একটি কর্মক্ষেত্র তৈরি করুন। এটি আপনার বিছানা থেকে দূরে থাকা উচিত। এটি ডাইনিং টেবিল বা লিভিং স্পেসের কোনো টেবিল হতে পারে। চাইলে স্টাডি রুমে বসে কাজ করতে পারেন। তবে কাজের জায়গাটি অবশ্যই শোবার ঘর থেকে আলাদা হতে হবে।
রুটিন মেনে চলতে প্রথমে কিছুটা সমস্যা হলেও, নিজের প্রয়োজনেই তার অভ্যাস করতে হবে। আগেভাগে ঘুমাতে যাওয়া এবং খুব সকালে ঘুম থেকে ওঠা একটি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস। এই অভ্যাস মেনে চলার চেষ্টা করুন। আমাদের শরীর ও মন যদি সঠিকভাবে বিশ্রাম না পায় তবে কাজে মনোযোগ দেয়া সম্ভব হয় না, আবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই নজর রাখতে হবে সেদিকেও।
Advertisement
এইচএন/এএ/জেআইএম