নভেল করোনাভাইরাস শনাক্তের ছয় মাস পেরিয়ে যাওয়ার পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) অতি-সংক্রামক এই ভাইরাসের উৎস খুঁজতে আবারও একটি বিশেষজ্ঞ দল চীনে পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে। বিশ্বজুড়ে পাঁচ লাখের বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়া এই ভাইরাসের উৎস তদন্তে ডব্লিউএইচও'র বিশেষজ্ঞ দল আগামী সপ্তাহে চীন যাবে।
Advertisement
সোমবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রেয়েসুস জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ভাইরাসটির সংক্রমণের শুরু-সহ আমরা যখন এটি সম্পর্কে সবকিছু জানতে পারবো, তখন আমরা আরও ভালোভাবে লড়াই চালাতে পারবো। এটি প্রস্তুত করার জন্য আমরা আগামী সপ্তাহে আবারও একটি বিশেষজ্ঞ দল চীনে পাঠাবো।
চীনের মধ্যাঞ্চলের হুবেই প্রদেশের উহানের একটি সামুদ্রিক খাবারের বাজার থেকে ছয় মাস আগে এই ভাইরাসটি বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। নিউমোনিয়ার মতো রহস্যময় এই ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট রোগকে পরবর্তীতে কোভিড-১৯ নামকরণ করা হয়।
পরে ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিশ্বজুড়ে এই ভাইরাসের বিস্তারের কারণে মহামারি ঘোষণা করে। বর্তমানে বিশ্বের দুই শতাধিক দেশে এক কোটি ২০ হাজারের বেশি মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। শ্বাসকষ্টের রোগ হিসেবে পরিচিত এই ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে মারা গেছেন ৫ লাখের বেশি মানুষ।
Advertisement
প্রত্যেকদিনই প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে লাখ লাখ মানুষ আক্রান্ত হলেও এখন পর্যন্ত এর কোনও প্রতিষেধক কিংবা চূড়ান্ত ভ্যাকসিন পাওয়া যায়নি। তবে চীন ইতোমধ্যে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে অন্তত তিনটি ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু করেছে।
সোমবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, এই মহামারির শেষ এখনও অনেক দূরে। তিনি বলেন, বর্তমানে এক কোটিরও বেশি সংক্রমিত ও পাঁচ লাখের বেশি মৃত্যু নিয়ে যদি এখনও আমরা এই সঙ্কট উত্তরণে জাতীয় ঐক্য, বৈশ্বিক সমন্বয় এবং বিভাজন দূর করতে না পারি, তাহলে এই ভাইরাসের বিস্তারে তা সহায়ক হবে। আমি বলেছি, সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি এখনও আসেনি।
চীনগামী বিশেষজ্ঞ দলে কারা কারা থাকবেন সেব্যাপারে বিস্তারিত কোনও তথ্য জানাননি টেড্রোস। তবে গত ফেব্রুয়ারিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং চীনের যৌথ তদন্ত দলে ছিলেন ২৫ সদস্যের মেডিক্যাল বিশেষজ্ঞ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ছাড়াও ওই দলে চীন, হংকং এবং অন্য সাতটি দেশের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
বিশেষজ্ঞরা ভাইরাসটি বাদুড়ের মাধ্যমে মানবদেহে সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারে বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু সেই সময় ভাইরাসটির উৎস নিয়ে শুরু হয় রাজনৈতিক দোষারোপ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র করোনাভাইরাস চীনের উহানের একটি ল্যাবরেটরি থেকে ছড়িয়ে পড়েছে বলে দাবি করলেও কোনও ধরনের প্রমাণ দিতে পারেনি। যদিও পরবর্তীতে চীন এই ভাইরাসটি মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে উহানে পৌঁছেছিল বলে অভিযোগ করে।
Advertisement
সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।
এসআইএস/এমকেএইচ