জাতীয়

নেই কেমিস্ট-ল্যাব, গলির ভেতর তৈরি হচ্ছে স্যানিটাইজার

করোনাভাইরাসের প্রকোপে সারাদেশের মতো চট্টগ্রামেও বেড়েছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার-স্যাভলনের মতো জীবাণুনাশকের চাহিদা। এই বাড়তি চাহিদাকে পুঁজি করে চট্টগ্রামে শুরু থেকেই তৎপর কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। বিভিন্ন কোম্পানির নাম ব্যবহার করে এসব নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিক্রি হচ্ছে ফুটপাতসহ বিভিন্ন দোকানে।

Advertisement

সোমবার (২৯ জুন) বেলা ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ৫ ঘণ্টা অভিযান চালানো হয় চট্টগ্রাম নগরের দেওয়ানহাট এলাকার এ আর চট্টলা কেমিক্যাল নামের একটি প্রতিষ্ঠানে। কারখানাটিতে অভিযান চালিয়ে ২০ লাখ টাকার ক্ষতিকর রাসায়নিক জব্দ করে কারখানাটি সিলগালা করে দেয়া হয়। ক্ষতিকর রাসায়নিক দিয়ে নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার-স্যাভলন ও হারপিক তৈরি করায় প্রতিষ্ঠানটিকে ৫০ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করেছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

একই আদেশে এই কারখানার মালিক মো. রাশেদকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. উমর ফারুক জাগো নিউজকে বলেন, ‘করোনা প্রাদুর্ভাব শুরুর পর থেকে নগরের রিয়াজউদ্দিন বাজার ও হাজারী লেনসহ প্রায় প্রতিটি মোড়েই হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্ক, ফেসশিল্ডসহ নানা ধরনের সুরক্ষা সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু এইসব স্যানিটাইজার নকল করে বাজারজাত করছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। বিভিন্ন কোম্পানির নাম ব্যবহার করে এসব নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিক্রি হচ্ছে ফুটপাতসহ বিভিন্ন দোকানে। এসব নকল পণ্য ব্যবহারের কারণে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ তো দূরের কথা, উল্টো সংক্রমণ আরও বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

Advertisement

তিনি বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ দুপুরে নগরের দেওয়ান হাট এলাকার মধ্যম সুপারিওয়ালা পাড়ার এ আর চট্টলা কেমিক্যাল নামের একটি কারখানায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালিত হয়৷ অভিযানে এ আর চট্টলা কেমিক্যাল নামের ওই কারখানায় সরেজমিনে দেখা যায়, নকল বিভিন্ন সুরক্ষা সামগ্রী বানাতে অবৈধভাবে শ’খানেক ড্রামে ক্ষতিকর কেমিক্যাল মজুত করা হয়েছে।’

ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের সহকারী পরিচালক হোসাইন মোহাম্মদ ইমরান বলেন, ‘নকল হ্যান্ডরাব, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, স্যাভলন ও হারপিক তৈরি করা হচ্ছিল কারখানাটিতে। এগুলোর জন্য ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের কোনো অনুমোদন নেই। কোনো ধরনের ল্যাব টেস্ট করার ব্যবস্থা নেই।’

ম্যাজিস্ট্রেট মো. উমর ফারুক বলেন, ‘কারখানার মালিক মো. রাশেদ কোনো ধরনের ক্যামিস্ট বা ল্যাব ছাড়াই বিভিন্ন ব্রান্ডের পণ্যের বোতল ও মোড়ক নকল করে ক্ষতিকর রাসায়নিকের এসব মিশ্রণ বোতলজাত করছে। জিজ্ঞাসাবাদে রাশেদ জানান, খালি বোতল, লেবেল, কার্টুন নিজেরা বাজার থেকে কিনে রং, ফ্লেভার, স্পিরিট ইত্যাদি মিশিয়ে নামীদামি কোম্পানির মতো হুবহু নকল করে নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার-স্যাভলন বাজারজাত করে আসছিলেন তিনি।’

তিনি জানান, এসব অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটিকে ৫০ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা ও প্রতিষ্ঠানের মালিক রাশেদকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই সঙ্গে অভিযানে ২০ লাখ টাকার ক্ষতিকর রাসায়নিক জব্দ করে কারখানাটি সিলগালা করা হয়।

Advertisement

আবু আজাদ/এমএফ/জেআইএম