করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারির ভয়াবহতা ইতোমধ্যে ছুঁয়ে গেছে বাংলাদেশকে। দেশের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, বিচারকসহ প্রশাসনের শতাধিক কর্তাব্যক্তির প্রাণ কেড়েছে করোনা। এনিয়ে গত তিন মাসে করোনায় মৃত্যু হয়েছে এক হাজার ৭৮৩ জনের। এছাড়া জ্বর, শ্বাসকষ্ট নিয়ে মৃত্যুর খবর আসছে প্রতিনিয়ত। প্রিয় মাতৃভূমির এমন অসহায় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা প্রবাসীরা বাড়িয়ে দিয়েছেন সহায়তার হাত। মহামারির ভয়াল কালো অন্ধকারে ফেলছেন আশার আলো।
Advertisement
বিশেষ করে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) মতো মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইরত দেশের ফ্রন্টলাইনারদের জন্য চিকিৎসার সরঞ্জামের সংস্থান ও গাইডলাইন তৈর করেছেন বিদেশে কর্মরত এ দেশেরই কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও পেশাজীবী। তাদের অনেকে আবার দেশের করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারণী পর্যায়েও ভূমিকা রাখছেন।
সম্প্রতি দেশের শীর্ষ নিউজপোর্টাল জাগো নিউজের অনুরোধে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও যুক্তরাজ্যে বসবাসরত এই বাংলাদেশি মহৎপ্রাণদের সঙ্গে কথা বলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ অ্যালামনাই অব নর্থ আমেরিকা’র সাবেক সভাপতি ডা. বি এম আতিকুজ্জামান।
অনলাইন প্লাটফর্মে যুক্ত হয়ে দেশের চিকিৎসা খাত ও মানুষের জন্য তাদের বর্তমান কাজ এবং নিজেদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে জাগো নিউজকে জানান তারা।
Advertisement
ডা. বি এম আতিকুজ্জামানের সঞ্চালনায় জাগো নিউজের অনলাইন আলোচনায় অংশ নেন কানাডায় বাংলাদেশের সাবেক অনারারি কনসাল জেনারেল ডা. মো. জামিলুর রহিম, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের কার্ডিয়াক সার্জন ও গবেষক ডা. শাকিল ফরিদ ও অস্ট্রেলিয়ায় কর্মরত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. আহমদ শরীফ শুভ।
ডা. বি এম আতিকুজ্জামান বলেন, ‘কোভিড মহামারির শুরু থেকে কোভিড-১৯ এর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সারাবিশ্বের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আমরা কথা বলছি। কয়েক দিন ধরে আমরা জানাচ্ছি প্রবাসী বাংলাদেশিরা কীভাবে বাংলাদেশকে সহায়তা করছেন। আপনারা জানেন যে, উত্তর আমেরিকা থেকে চিকিৎসকরা নানাভাবে সহায়তা করছে। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন অব নর্থ আমেরিকা, ইনস্টিটিউট অব নর্থ আমেরিকা, বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশসন। এর মধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন অত্যন্ত দক্ষতার সাথে খুব দরকারি চিকিৎসা সরঞ্জাম যেমন- হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা কিংবা অক্সিজেন কনসানন্ট্রেটর। একই সাথে শুরু থেকেই তারা পিপিই ও এন-৯৫ মাস্কসহ অন্যান্য সরঞ্জাম সরবরাহ করছেন। এছাড়া বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে একটি যোগসূত্র তৈরি করে তারা দেশের পাশে দাঁড়াচ্ছেন।’
কম্ব্যাট 'কোভিড -১৯' বাংলাদেশ
ডা. বি এম আতিকুজ্জামান শুরুতেই নিজেদের চালু করা একটি প্রকল্পের বিষয়ে বলেন, করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারির ভয়াবহ প্রভাব ইতোমধ্যে বাংলাদেশে পড়তে শুরু করেছে। এত মানুষের মৃত্যু আগে কখনোই এ দেশ দেখেনি। তাই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. পারভেজ করিম, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. জামাল উদ্দিন ও ডা. আনোয়ার মিয়া'র নেতৃত্বে এবং কয়েকজন বিএমএন সদস্যের আন্তরিক প্রচেষ্টায় ‘কম্ব্যাট কোভিড-১৯ বাংলাদেশ’ প্রকল্প চালু করেছেন।
Advertisement
এই সহযোগী উদ্যোগে অংশ নিয়েছে বিএমএন নিউইয়র্ক চ্যাপ্টার, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব নর্থ আমেরিকা (বিআইএনএ), বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিশু স্বাস্থ্য সচেতনতা ফাউন্ডেশন এবং যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত বাংলাদেশি আমেরিকান চিকিৎসকরা। ইতোমধ্যে এ প্রকল্পের অধীনে চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য বিভাগকে ১৭টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর সরবরাহ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১০টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর দেয়া হয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, বাকি সাতটি চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে সরবরাহ করা হয়েছে।
কানাডায় এক টুকরো বাংলাদেশ
জাগো নিউজের আহ্বানে অনলাইন আলোচনায় অংশ নিয়ে করোনা পরিস্থিতিতে কানাডায় বাংলাদেশিদের এবং বাংলাদেশের মানুষদের জন্য নিজেদের কার্যক্রম ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানিয়েছেন কানাডায় বাংলাদেশের সাবেক অনারারি কনসাল জেনারেল ডা. মো. জামিলুর রহিম।
ডা. মো. জামিলুর রহিম বলেন, ‘কানাডার বাংলাদেশ কমিউনিটি আমেরিকার মতো অত বড় নয়। এখানে করোনা সংক্রমণ শুরুর পর কমিউনিটি বেইজ কিছু কাজ হয়েছে। যেমন- কেউ হয়তো বাজারে যেতে পারছে না, তাকে বাজার করে দেয়া। এছাড়া অনেকে স্বাধীনভাবে ব্যক্তিগত পর্যায়ে অন্যদের সহায়তার চেষ্টা করেছেন। কেউ কেউ হোমমেইড মাস্ক বানিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছেন, আবার অনেকে বাইরে থেকে ইমপোর্ট করে এনেছেন। এখানে সংগঠন পর্যায়ে দু-একটা কাজ হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এখানে (কানাডা) যারা বাংলাদেশি চিকিৎসক আছেন, তারা অ্যালামনাইভিত্তিক কিছু কাজ করেছেন, যেমন- চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে। আমি যতটুকু দেখেছি, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে কিছু কাজ হয়েছে অ্যালামনাই থেকে। তারা সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের স্টাফদের জন্য এন-৯৫ মাস্ক পাঠিয়েছেন। আমরা যারা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের, তাদের একটি অ্যালামনাই আছে। আমরা অ্যালামনাই থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ফ্রন্টলাইন চিকিৎসকদের এন-৯৫ মাস্ক ও পিপিই দিয়েছি। লিমিটেড ক্যাপাসিটির মধ্যে আমাদের যতটুকু করার ক্ষমতা ছিল, আমরা ততটুকু করেছি।’
বিভিন্ন দেশের বাংলাদেশি চিকিৎসকরা একটি বড় পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন— জানিয়ে ডা. মো. জামিলুর রহিম বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশি ডাক্তার যারা আছেন, তারা আমাদের মতো বিভিন্ন দেশে যারা আছেন, তাদের সবাইকে এক করে আসলে কী করা যায় বাংলাদেশের জন্য, সে বিষয়ে তারা আলোচনা করছেন। ইতোমধ্যে একটি আলোচনা হয়েছে, আরও একটি আলোচনার সিদ্ধান্ত হচ্ছে। তারা আসলে বৃহত্তর পরিসরে কিছু একটা করার পরিকল্পনা করছেন।’
চট্টগ্রামবাসীর জন্য সুখবর এলো অস্ট্রেলিয়া থেকে
দেশে গত মার্চে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর মে মাসে চট্টগ্রামের পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হতে শুরু করে। জ্বর, শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ঘুরে মৃত্যুর খবর আসতে থাকে প্রতিদিনই। এর মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি স্লোগান ওঠে— ‘শ্বাস নিতে চায় চট্টগ্রাম’। সেই স্লোগান ছুঁয়ে যায় সাত সাগর আর তের নদীর ওপারে থাকা এ মাটির সন্তানদেরও। তাই তো সুদূর অস্ট্রেলিয়া থেকে সুখবরই শোনালেন সেখানকার বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. আহমদ শরীফ শুভ।
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামে একটা সংকট দেখা দিয়েছে, যখনই বিষয়টি আমরা জানতে পারলাম, তখন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা যারা এখানে আছেন তারা রেসপন্স শুরু করেন। এরই মধ্যে কন্ট্রিবিউশন কালেকশন শুরু হয়েছে। আমরা চিন্তা করেছি, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে বেশকিছু চিকিৎসা সরঞ্জামাদি সরবরাহ করব।’
ডা. আহমদ শরীফ শুভ বলেন, ‘আমাদের সবাই যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী এগিয়ে আসছে, এরই মধ্যে বেশকিছু অর্থের সংস্থান হয়েছে। আমরা আশা করছি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে শিপমেন্টের প্রক্রিয়াটি শুরু করতে পারব।’
তিনি জাগো নিউজকে বলেন, অস্ট্রেলিয়ার পার্থ থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের প্রচেষ্টায় ১০টি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলো শিপমেন্টের অপেক্ষায় আছে। এছাড়া মেলবোর্ন থেকে একজন ফিজিশিয়ান যিনি নিজ উদ্যোগে চারটি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা সংগ্রহ করেছেন। তিনিও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। সেগুলো ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছেছে।
সাউথ অস্ট্রেলিয়া স্টেটের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা ভালো অংকের অর্থ সংগ্রহ করেছেন। তারাও আগামী সপ্তাহে শিপমেন্ট শুরু করবেন। সেটা সমানভাবে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় বিতরণ করা হবে।’
‘কম্ব্যাট কোভিড-১৯ বাংলাদেশ’ প্রকল্পের অধীনে সম্প্রতি চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য বিভাগকে ১৭টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর সরবরাহ করা হয়
নিজেদের কার্যক্রম নিয়ে ডা. আহমদ শরীফ শুভ বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ায় যখন মহামারি শুরু হয় তখন আমাদের রেসপন্সটা একটু ধীরগতিতে ছিল। স্বাভাবিকভাবে যেটা হয়, সবাইকে সচেতন হয়ে সংগঠিত হতে একটু সময় লাগে। যা-ই হোক, সবাই সংগঠিত হওয়ার পর আমরা বিচ্ছিন্নভাবে সিডনিতে, মেলবোর্নে, পার্থে, ব্রিজবেনে সেখানকার যেসব বাংলাদেশি সংগঠন আছে তারা বিচ্ছিন্নভাবে কাজ করেছে। মেলবোর্নে ‘বাংলাদেশ ডিজাস্টার ফান্ড’ বলে একটি সংগঠন আছে। আমরা এ সংগঠনের মাধ্যমে বাংলাদেশের আটটি জেলায় ফুড পার্সেল বিতরণ করেছি। ‘বাংলাদেশ ডক্টরস সোসাইটি অব ভিক্টোরিয়া’ বলে আরও একটি সংগঠন আছে। বাংলাদেশ অরিজিনের সব ডাক্তার এই সংগঠনের সদস্য। তারাও বিভিন্ন জেলায় ফুড পার্সেল বিতরণ করেছেন।’
ডা. শাকিল ফরিদ রচিত ‘হ্যান্ডবুক’ পথ দেখাচ্ছে দেশের চিকিৎসকদের
ডা. শাকিল ফরিদ কনসালটেন্ট কার্ডিয়াক সার্জন হিসেবে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি হসপিটালে কাজ করছেন। তিনি করোনাভাইরাস মহামারিতে বিশাল অবদান রাখছেন। দেশের করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারণী পর্যায়েও ভূমিকা রাখছেন তিনি। এছাড়া তার নিজস্ব ওয়েবসাইট (shakilfarid.com) আছে। আমেরিকা ও ইংল্যান্ডে আছেন এমন ৫০ জন বিশেষজ্ঞ বাংলাদেশি চিকিৎসককে নিয়ে একটি গাইডবুক তৈরি করেছেন বাংলাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকদের জন্য। মাত্র ছয় সপ্তাহের ব্যবধানে যার চতুর্থ সংস্করণ বের হয়েছে।
এ বিষয়ে ডা. শাকিল ফরিদ বলেন, ‘আমরা সবাই বাংলাদেশের প্রোডাক্ট। দেশের এই খারাপ অবস্থায় কিছু একটা করা দরকার আমাদের। মার্চ মাসের শেষ দিকে আমরা গাইডবুকটি প্রস্তুতের কথা চিন্তা করি। তখন আমরা ভেবেছিলাম, আমাদের জুনিয়র ডাক্তারদের জন্য এটা করার; যাতে কম্প্রিহেনসিভ গাইডলাইন থাকে। কারণ ইন্টারনেটে অনেক রিসোর্স আছে, কিন্তু সবকিছু এক জায়গায় কম্পাইল করা নেই। তাই আমরা ঠিক করলাম আমরা একটা গাইডবই তৈরি করব।’
বই তৈরিতে নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং বিষয় হলো, ৪০ থেকে ৫০ জন এক্সপার্ট। তাদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশের, ইংল্যান্ডের ও আমেরিকার স্বনামধন্য চিকিৎসকরা। তারা কিন্তু তাদের ব্যস্ততার মাঝে সারাদিন পরিশ্রম করে এসে সারারাত লিখে খুব কম সময়ের মধ্যে অর্থাৎ এক সপ্তাহের মধ্যে আমাকে লিখে দিয়েছেন। আমি সিম্পলি বিষয়টি সমন্বয় করেছি, বইটি প্রকাশ করেছি এবং বইটি খুবই ইউজফুল।’
বইটি সম্পর্কে ডা. শাকিল ফরিদ বলেন, ‘এখন বইটির চতুর্থ সংস্করণ চলছে। প্রথম সংস্করণ বের করার পর চতুর্থ সংস্করণ বের করতে মাত্র ছয় সপ্তাহ সময় লেগেছে। এর মধ্যে আমরা কিন্তু অনেক কিছু পরিবর্তন করেছি, বাংলাদেশের পারিপার্শ্বিকতা মাথায় রেখে। আমাদের শেষ যে সংস্করণটি প্রকাশিত হয়েছে, সেখানে আমরা একেবারে উপজেলা পর্যায় থেকে একজন অ্যাসিসটেন্ট সার্জেন্টকে নিয়ে এসেছি। যিনি উপজেলা পর্যায়ে ব্যবস্থাপনা ও জোনিং পরিকল্পনাগুলো আমাদের দিয়েছেন। এজন্য অনেক বেশি ধন্যবাদ দিতে হবে যারা বিদেশি ডাক্তার আছেন তাদের, যারা আমাকে হেল্প করেছেন। তারা কিন্তু কখনোই না বলেননি, আমি যখনই বলেছি, আমাকে এই বিষয়টিতে লিখে দিন, শত ব্যস্ততার মাঝেও তারা আমাকে তা করে লিখে দিয়েছেন, এটা অ্যামেজিং ব্যাপার।’
‘এটা তো গেল গাইডলাইন ও এডুকেশনের সাইটটা, এরপর বাংলাদেশের চিকিৎসকদের সময় দেয়া। অনেক জুনিয়র চিকিৎসক আছেন, যারা অনেক ব্যাসিক জিনিস বুঝতে পারছেন না। এজন্য নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছি আমরা। দেখা যাচ্ছে যে, কাজের মাঝেও আমরা অনেক বাংলাদেশের জুনিয়র ডাক্তারকে এক থেকে দুই ঘণ্টা সময় দিচ্ছি। যাতে তারা উপকৃত হন’— বলেন ডা. শাকিল ফরিদ।
দেশের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর বিষয়ে জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আমার (স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ) অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের কথা জানি, আমরা মিটফোর্ড হাসপাতালে অনেক জিনিস দিয়েছি। এভাবে দেশের বিভিন্ন অ্যালামনাই কোনো না কোনোভাবে কন্ট্রিবিউট করছে। কেউ মেশিন কিনে দিচ্ছে, কেউ ক্যাশ দিচ্ছে।’
ডা. শাকিল ফরিদ বলেন, ‘সব খারাপ জিনিস থেকে একটি ভালো জিনিস বের হয়। এই করোনা পরিস্থিতিতে যে জিনিসটা হয়েছে, বাংলাদেশের সব ডাক্তারের সাথে বিদেশে অবস্থানরত ডাক্তারদের একটি যোগাযোগ স্থাপন হয়েছে, যেটা আগে ছিল না।’
আবু আজাদ/এমএআর/এমএস