একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান নেজামে ইসলামী পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা মো. সফি উদ্দিনসহ চারজনের বিরুদ্ধে হবিগঞ্জে মামলা দায়ের করা হয়েছে। রোববার দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমল-৭ এর আদালতে মামলাটি দায়ের করেন লাখাই উপজেলার মুড়িয়াউক গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইলিয়াস কামাল। আদালতের বিচারক মো. কাউসার আলম মামলাটি তদন্তের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত শাখার প্রধান সমন্বয়ক বরাবরে প্রেরণের নির্দেশ দেন। মামলার অপর আসামিরা হলেন, একই উপজেলার মুড়িয়াউক গ্রামের মো. জাহিদ মিয়া ও মো. তাজুল ইসলাম ওরফে পোকন রাজাকার এবং জিরুন্ডা গ্রামের মো. ছালেক মিয়া ওরফে ছায়েক মিয়া।মামলার বাদী মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার ইলিয়াস কামাল অভিযোগে উলেখ করেন, ১৯৭১ সালের ৩০ ও ৩১ অক্টোবর সফি উদ্দিনসহ অন্য আসামিরা লাখাই উপজেলার মানপুর ও মুড়িয়াউক গ্রামে অভিযান চালায়। তারা পাক হানাদার বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে বাদীর পিতা ইদ্রিছ মিয়া ও সহযোদ্ধা শাহজাহান মিয়ার বাবা আব্দুল জব্বারসহ গ্রামের অসংখ্য মানুষকে ধরে নৌকায় করে নিয়ে যায়। তাদের মাওলানা সফি উদ্দিনের বাড়ির টর্চার সেলে রেখে অমানুষিক নির্যাতন করে। পরে অনেককে ছেড়ে দিলেও মুক্তিযোদ্ধার পিতা হওয়ায় ইদ্রিছ মিয়া ও আব্দুল জব্বারকে আটক রেখে ফের নির্যাতন করে। এক পর্যায়ে তার প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় হানাদাররা তাদের গুলি করে হত্যার পর জিরুন্ডা মানপুর গ্রামের পার্শ্ববর্তী উজাদুর বিলে মরদেহ ফেলে দেয়। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে অভিযুক্ত রাজাকারেরা ওই উপজেলার মুড়িয়াউক, মানপুর, জিরুন্ডা, কৃষ্ণপুর, গদাইনগর, চন্ডিপুর, ভবানীপুরসহ আশপাশের গ্রামে লুটতরাজ, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, নৃশংস গণহত্যা ও শারীরিক নির্যাতন চালায়। মামলায় প্রবীণ সাংবাদিক, স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ মোট ১৫ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকন/এআরএ/আরআইপি
Advertisement