লোকসান থেকে বাঁচতে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর ২৪ হাজার ৮৮৬ জন স্থায়ী শ্রমিককে গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে অবসরে পাঠানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী।
Advertisement
রোববার (২৮ জুন) শ্রমিক অবসায়নের মাধ্যমে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর ব্যবস্থাপনা মডেল সংস্কার নিয়ে অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এ কথা জানান।
লোকসানে থাকা পাটকলগুলোকে লাভজনক করার উপায় নিয়ে ছয় মাস ধরে চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ৪০ বছর ধরে আমরা কোনো লাভ করতে পারিনি। সবসময় লোকসান হচ্ছে। সরকার চিন্তা করছে কীভাবে গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে শ্রমিকদের টাকা বুঝিয়ে দিয়ে এই কারখানাগুলোকে আবার চালু করে আমাদের পাটখাতকে এগিয়ে নিতে পারি।
বস্ত্র ও পাট সচিব লোকমান হোসেন মিয়া বলেন, ‘পাটকলগুলোতে ২৪ হাজার ৮৮৬ জন স্থায়ী কর্মচারী রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে শ্রমিকদের চাকরির অবসান করতে। পাটকল শ্রমিকদের গোল্ডেন হ্যান্ডশেক দেয়ার পর পিপিপির মাধ্যমে পাটকলগুলোকে আধুনিকায়ন করে উৎপাদনমুখী করা হবে। তখন এসব শ্রমিক সেখানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চাকরির সুযোগ পাবেন।’
Advertisement
বস্ত্র ও পাট সচিব বলেন, ‘১৯৭২ সালে পাটকলগুলো জাতীয়করণ করা হয়। পরে বিভিন্ন সময় সরকারি-বেসরকারিকরণ করা হয়। এখন ২৫টি মিল সরকার পরিচালনা করছে।’
২০১৩ থেকে এ পর্যন্ত আট হাজার ৯৫৪ জন পাটকল শ্রমিক অবসরে গেছেন জানিয়ে সচিব বলেন, অর্থ সংকটে তাদের অবসরভাতা পরিশোধ সম্ভব হয়নি। তারা পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তাদের পাওনা বাবদ এক হাজার ৩০ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে।’
গত ৪৮ বছরে সরকারকে এ খাতে ১০ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে বলে জানান বস্ত্র ও পাট সচিব।
আগে যারা অবসরে গেছেন তাদেরও বকেয়াও একই সঙ্গে পরিশোধ করা হবে জানিয়ে পাটমন্ত্রী বলেন, ‘নতুন বাজেটের টাকা হাতে পাওয়ার পরই শ্রমিকদের সব টাকা দিয়ে দেয়া হবে। আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে শ্রমিকদের সব টাকা এক সাথে দেয়া হবে। এ জন্য চার হাজার ৮৬৯ কোটি টাকা লাগবে।’
Advertisement
মিলগুলো চালাতে সরকার ব্যর্থ কিনা- জানতে চাইলে পাটমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ব্যর্থ না। ব্যবসা করার দায়িত্ব সরকারের না, কিন্তু আমাদের ওপর এই দায়িত্ব পড়ে গিয়েছিল। সরকারিভাবে ব্যবসা সেবখাতই করে। প্রতিযোগিতামূলক বাজারেই ব্যবসা হয়, এটা ব্যর্থতা না।’
র্যাবের মহাপরিচালক খুলনা থেকে এই সংবাদ সম্মেলনে যুক্ত ছিলেন। সেখানে তার সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তা ছাড়াও পাটকল শ্রমিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
র্যাব মহাপরিচালক বলেন, সবাইকে সঙ্গে নিয়ে তিনি সরাসরি মন্ত্রীর বক্তব্য শুনেছেন। এরপর তিনি সবার সঙ্গে এ বিষয়ে সভা করবেন।
আরএমএম/বিএ/এমকেএইচ