করোনাভাইরাস মহামারির কারণে পশ্চিমা দেশগুলো থেকে বাতিল হয়েছে গার্মেন্টসের অসংখ্য ক্রয়াদেশ। তবে সময়ের দাবির প্রেক্ষিতে পণ্য উৎপাদনে পরিবর্তন এনে এখনও অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছে বাংলাদেশের কিছু পোশাক কারখানা। ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে বিপুল পরিমাণ মেডিকেল গাউন, গ্লাভস-জাতীয় সুরক্ষা উপকরণ রপ্তানি করেছে তারা।
Advertisement
করোনার কারণে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে ইতোমধ্যেই কাজ হারিয়েছেন লাখ লাখ পোশাকশ্রমিক। সেখানে, ঢাকার অদূরে সাভারের কিছু কারখানায় এখনও সপ্তাহে ছয়দিন দৈনিক আট ঘণ্টা করে শ্রম দিচ্ছেন হাজার হাজার গার্মেন্টসকর্মী। তবে ফ্যাশন উপকরণ নয়, বরং বিশ্বজুড়ে চাহিদার শীর্ষে উঠে আসা ব্যক্তিগত সুরক্ষা উপকরণ (পিপিই) উৎপাদনে ঘাম ঝরাচ্ছেন তারা।
গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ৬৫ লাখ মেডিকেল গাউন রপ্তানি করেছে বেক্সিমকো। চলতি বছরেই অন্তত ২৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের সুরক্ষা উপকরণ রপ্তানির লক্ষ্য রয়েছে তাদের।
এ বিষয়ে বেক্সিমকোর প্রধান নির্বাহী নাভেদ হুসাইন বলেন, ‘আমরা গত ফেব্রুয়ারিতেই এটিকে (করোনা মহামারি) সুযোগ হিসেবে দেখতে পাই এবং তাৎক্ষণিকভাবে পিপিই উৎপাদন শুরু করি। এখন আমাদের ৪০ হাজার কর্মীর প্রায় ৬০ শতাংশই পিপিই তৈরিতে নিযুক্ত। করোনাভাইরাস গোটা বিশ্বকেই বদলে দিয়েছে।’
Advertisement
গত দুই দশকে গার্মেন্টস শিল্পে অভূতপূর্ব উন্নয়নের ফলে ইতোমধ্যেই বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। প্রায় ১৪০ কোটি জনসংখ্যার দেশ চীনই একমাত্র বাংলাদেশের ওপরে রয়েছে।
করোনাভাইরাস মহামারির আগে বাংলাদেশের চার হাজার কোটি ডলার বার্ষিক রপ্তানির প্রায় ৮০ ভাগই এসেছে গার্মেন্টস শিল্প থেকে। এ শিল্পে কাজ করছে দেশের প্রায় ৪০ লাখ মানুষ, এদের সিংহভাগই গ্রামের দরিদ্র নারী।
তবে মহামারির কারণে লকডাউন শুরুর পর গত এপ্রিলে পণ্য রপ্তানি একলাফে কমে যায় প্রায় ৮৪ শতাংশ। বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) তথ্যমতে, ইতোমধ্যই অন্তত ৩২ লাখ ডলারের ক্রয়াদেশ বাতিল না হয় স্থগিত হয়ে গেছে।
তবে বিজিএমইএ বলছে, মেডিকেল উপকরণ তৈরিতে ফের আশাবাদী হয়ে উঠেছে অনেক প্রতিষ্ঠান। এধরনের অন্তত ৩০টি কারখানায় চলছে মেডিকেল সুরক্ষা উপকরণ উৎপাদনের কাজ এবং এদের সংখ্যা দিনদিন আরও বাড়ছে।
Advertisement
সূত্র: এএফপি, আরব নিউজ
কেএএ/পিআর