জাতীয়

ক্ষতিকর কেমিক্যালে হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি, জরিমানা সাড়ে ১৮ লাখ

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষার জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও হ্যান্ড রাব ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। একই পরামর্শ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থারও৷ কিন্তু নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও হ্যান্ড রাব ব্যবহারে সুরক্ষার বদলে হতে পারে ক্যান্সার। হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা হ্যান্ড রাব তৈরিতে মূলত ব্যবহার করা হয় আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল যা জীবাণু নাশ করে। কিন্তু অসাধু ব্যবসায়ীরা আইসোপ্রোফাইল ব্যবহার না করে কমদামি ইন্ডাস্ট্রিয়াল কেমিক্যাল মিথানলে তৈরি করছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও রাব।

Advertisement

শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের সহযোগিতায় র‌্যাব-১০ এ একটি দল রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে নয়টি মামলায় আটটি প্রতিষ্ঠানকে মোট সাড়ে ১৮ লাখ টাকা জরিমানা, দুজনকে বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান ছাড়াও দুটি প্রতিষ্ঠানকে সিলগালার নির্দেশ দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত।

অভিযানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো, আখতারুজ্জামান। তিনি জাগো নিউজকে জানান, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও হ্যান্ড রাব তৈরিতে মূলত ব্যবহার করতে হয় আইসোপ্রোফাইল অ্যালকোহল যা শরীরের জন্য ক্ষতিকারক নয় বরং জীবাণুনাশক। কিন্তু একটি সংঘবদ্ধ অসাধু ব্যবসায়ীচক্র আইসোপ্রোফাইল‌ অ্যালকোহল ব্যবহার না করে শরীরের জন্য ক্ষতিকারক ইন্ডাস্ট্রিয়াল কেমিক্যাল মিথানল ব্যবহারে তৈরি করছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও হ্যান্ড রাব। সাথে ব্যবহার করছে বিষাক্ত রং।

তিনি বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনা থেকে সুরক্ষার জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও হ্যান্ড রাব বিশেষ কার্যকরী। কিন্তু নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও হ্যান্ড রাবের মতো সুরক্ষা সামগ্রী ব্যবহারে জীবাণু তো নাশ হয়ই না বরং তৈরি করে ক্যান্সারের ঝুঁকি।

Advertisement

ম্যাজিস্ট্রেট মো. আখতারুজ্জামান বলেন, অভিযানে প্রায় চার হাজার বোতল হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও হ্যান্ড রাব, ৫০ কেজি ওজনের ১৪টি ড্রামে খোলা হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং দুই হাজার লিটার জি লিকুইড হ্যান্ড স্যানিটাইজার জব্দ করা হয়।

ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও হ্যান্ড রাব তৈরি, মজুত ও বিক্রির অভিযোগে লক্ষ্মী পারফিউমারির মালিক জনিকে দুই লাখ টাকা, কামাল পারফিউমারি ও কেমিক্যালের মালিক মো. কামাল হোসেনকে পাঁচ লাখ টাকা, দীন পারফিউমারির মালিক তাজুল ইসলামকে ৫০ হাজার টাকা, সুমি এন্টারপ্রাইজের মালিককে দুই লাখ টাকা, আজতারা পারফিউমারির মালিক শামসুল ইসলামকে এক লাখ টাকা, জসিম পারফিউমারির মালিক মো. সেন্টুকে এক লাখ টাকা, দি বোরহান পারফিউমারির মালিক আব্দুর রহমানকে ছয় লাখ টাকা, বোরহান পারফিউমারি হাউসের মালিক মোহাম্মদ রেজাউলকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

এছাড়া কামাল কেমিক্যালসের মালিক মোস্তফা কামালকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং একই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার আবু কাওসারকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। পাশাপাশি দুটি প্রতিষ্ঠানকে সিলগালার নির্দেশ দেয়া হয়।

জেইউ/বিএ/জেআইএম

Advertisement