ফরিদপুরে পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁর তীর সংরক্ষণ কাজ সম্পন্ন হওয়ায় চোখে মুখে হাসি ফুটেছে ভাঙনের আতঙ্কে থাকা এলাকাবাসীর।
Advertisement
দীর্ঘ ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে এ দু'পাড়ে প্রতি বছর ভাঙনের শিকার হয় মানুষ। নিঃস্ব হয় শত শত পরিবার। কিন্তু চলতি বর্ষা মৌসুমে এ প্রথমবারের মতো ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে নদী পাড়ে মানুষগুলো।
ফরিদপুর পানি উন্নয়ন উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ জানান, ভাঙনের হাত থেকে স্থানীয়দের রক্ষায় ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে পদ্মা নদীতে চরভদ্রাসন উপজেলায় প্রায় ২৯২ কোটি টাকা ব্যায়ে ৩.৪ কি:মি. তীর সংরক্ষণ বাঁধ ও ১০ কি: মিটার ড্রেজিং এবং সদরপুর উপজেলায় ২৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে আড়িয়াল খাঁ নদের ৫ দশমিক ৩৮ কিলোমিটার নদী তীর সংরক্ষণ ও ৬.৩ কিলোমিটার নদের ড্রেজিং কাজের অনুমোদন পায়।
তিনি বলেন, ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড উক্ত প্রকল্পের তীর সংরক্ষণ ও ড্রেজিয়ের জন্য পদ্মায় ১২ এবং আড়িয়াল খাঁয় ১৭ গ্রুপকে কার্যাদেশ দেয়। ইতোমধ্যে কাজের ৭৫ শতাংশ শেষ করেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
Advertisement
আর এ কাজ সম্পন্ন হওয়ার মধ্যে দিয়ে গত ৫০ বছর ধরে নদী দুটি আগ্রাসনে যে ভূসম্পদের ক্ষতি সাধন হতো তার থেকে চলতি বর্ষা মৌসুমে রক্ষা পাচ্ছে নদ-নদী পাড়ের মানুষ।
সরকারের এ বড় প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হওয়ায় হাসি ফুটেছে কয়েক হাজার মানুষের মুখে। স্থানীয়রা পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁর পাড়ে তীর সংরক্ষণ কাজ দেখে আশায় বুক বাধছে।
আড়িয়াল খাঁ নদের চন্দ্রপাড়া এলাকার বিপুল মাতুব্বর বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে এ পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁর ভাঙন দেখেছি। এখন এ কাজ শেষ হওয়ায় নতুন করে বসত গড়ার স্বপ্ন দেখছি আবার।
সদরপুর উপজেলার দরগা বাজারের বাসিন্দা তারাপদ ঘোষ জানান, তার বাড়ি এ আড়িয়াল খাঁয় তিন বার ভেঙেছে। প্রতিবছর বর্ষা এলেই চিন্তায় থাকতে হতো। কিন্তু এবারই দরগা বাজার এলাকাবাসী নিচিন্তে ঘুমতে পারবে।
Advertisement
একই সুরে কথা বলেন, চরভদ্রাসন উপজেলার হাজিগঞ্জ বাজারে ব্যবসায়ী আবুল কালাম। তিনি বলেন, এ বাজার চারবার নদীর গর্ভে চলে গেছে। অবশেষে বাজার সংলগ্ন এলাকায় পদ্মায় স্থায়ী বাঁধ হওয়ায় ব্যবসায়ী ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে।
স্থানীয় এমপি মুজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে এ এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের চোখের পানি মুছে, মুখে হাসি ফুটেছে। জানমালের নিরাপত্তার পাশাপাশি আর্থিক স্বচ্ছলতাও ফিরে আসবে। ঘুচবে এ অঞ্চলের মানুষের নদী ভাঙনের আতঙ্ক।
তিনি আরও বলেন, প্রতি বছরেই বর্ষা মৌসুমে পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁর ভাঙনে রাস্তা-ঘাট, বাড়ি-ঘর ও ফসলি জমির ক্ষয়ক্ষতি হতো। ভাঙন রোধে ড্রেজিং ও তীর সংরক্ষণে ব্লক দিয়ে বাঁধের কাজ ৭৫ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। আশা করছি অল্প কয়েকদিনের মধ্যে কাজ শেষ হবে।
বি কে সিকদার সজল/এমএএস/জেআইএম