ব্যাংকগুলোতে প্রতিদিনই বাড়ছে করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্তের সংখ্যা। এখন পর্যন্ত প্রাণঘাতী এ ভাইরাস ছয় শতাধিক ব্যাংকারকে সংক্রমিত করেছে। মারা গেছেন ২৮ জন। এছাড়া উপসর্গ দেখা দিয়েছে সহস্রাধিক ব্যাংক কর্মকর্তার।
Advertisement
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংকগুলোতে স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে অফিসে যাওয়া-আসা, ব্যাংক কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে অনেক সময় স্বাস্থ্যবিধি যথাযথ পরিপালন করা হচ্ছে না। সচেতনতার অভাবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার সম্ভব হচ্ছে না। এসব কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন ব্যাংকাররা। বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। তাই দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। পাশাপাশি অধিক কর্মীসমাগম ঠেকাতে অনলাইন ব্যাংকিংয়ে জোর দেয়া উচিত।
এদিকে ব্যাংকগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শনিবার (২৭ জুন) পর্যন্ত ব্যাংকার আক্রান্তের সংখ্যা ছয় শতাধিক ছাড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ২৮ জনের। তাদের মধ্যে সোনালী ব্যাংকের ৮ জন, রূপালী ব্যাংকের ২ জন, দি সিটি ব্যাংকের ৩ জন, এনসিসি ব্যাংকের চট্টগ্রাম আগ্রাবাদ শাখার ১ জন, উত্তরা ব্যাংকের শান্তিনগর শাখার ১ জন, জনতা ব্যাংকের ৩ জন, ন্যাশনাল ব্যাংকের ১ জন, অগ্রণী ব্যাংকের ৩ জন, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ২ জন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ১ জন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ২ জন এবং এক্সিম ব্যাংকের ১ জন।
এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন দেশের অন্যতম শিল্পপতি এস আলম গ্রুপ ও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের পরিচালক মোরশেদ আলম ও মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সেলিম।
Advertisement
করোনায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে। এর মধ্যে শুধু রাষ্ট্রায়ত্ত চার (সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী) ব্যাংকেই প্রায় ৩০০ কর্মকর্তার শরীরে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া উপসর্গ নিয়ে ছুটিতে গেছেন পাঁচ শতাধিক কর্মকর্তা। এরই মধ্যে মারা গেছেন ১৬ জন।
করোনার সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ব সোনালী ব্যাংক। এ ব্যাংকটিতে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যাও বেশি। এখন পর্যন্ত সোনালী ব্যাংকের প্রায় ১৫০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৮ জন কর্মকর্তা মারা গেছেন। অন্তত ২০০ জনের শরীরে করোনা উপসর্গ দেখা দেয়ায় ছুটিতে আছেন বলে জাগো নিউজকে জানান সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউর রহমান প্রধান।
করোনায় অগ্রণী ব্যাংকের দুইজন কর্মকর্তা মারা গেছেন জানিয়ে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সিইও) শামস্ উল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে ঝুঁকি নিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজ করছেন। এ পর্যন্ত প্রায় ৬০ জনের মতো কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন। এ মহামারিতে একজন পরিচালকসহ মোট তিন কর্মকর্তা মারা গেছেন।
এদিকে করোনায় বেসরকরি ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেযে বেশি আক্রান্ত ইসলামী ব্যাংকে ১০০ জন। মৃত্যুর সংখ্যা বেশি সিটি ব্যাংকে তিনজন। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকেও শতাধিক কর্মকর্তা ভাইরাসে আক্রান্ত। মারা গেছেন দুইজন। সবশেষ শুক্রবার (২৬ জুন) বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের চেঞ্জ ম্যানেজমেন্ট অ্যাডভাইজার আল্লাহ মালিক কাজেমী মৃত্যুবরণ করেছেন।
Advertisement
এসআই/বিএ/এমকেএইচ