দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৩ হাজার ৫০৪ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৩৩ হাজার ৯৭৮ জনে। একই সময়ে ৩৪ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এ ভাইরাস। ফলে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৬৯৫ জনে।
Advertisement
শনিবার (২৭ জুন) করোনা বিষয়ক স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত অনলাইন হেলথ বুলেটিনে এই তথ্য জানান অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
তিনি জানান, দেশে নতুন করে আরও একটি করোনা পরীক্ষার ল্যাব যুক্ত হয়েছে। এতে মোট ল্যাবের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৬৭টি। তবে আজকে ৫৮টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পাওয়া গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৫ হাজার ৫৯টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। আর আগের নমুনাসহ পরীক্ষা করা হয় ১৫ হাজার ১৫৭টি।
নাসিমা সুলতানা বলেন, মোট নমুনা পরীক্ষায় দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৪ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল এক হাজার ৬৯৫ জনে। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৩ হাজার ৫০৪ জন। ফলে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল এক লাখ ৩৩ হাজার ৯৭৮ জনে।
Advertisement
তিনি জানান, এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা হলো ৭ লাখ ১২ হাজার ৯৯টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরও তিন হাজার ৫০৪ জনের মধ্যে। শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ১২ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের এ অতিরিক্ত এ মহাপরিচালক জানান, নতুন করে যে ৩৪ জন মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ৩২ জন ও নারী দু’জন। শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুহার এক দশমিক ২৭ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারী ৩৪ জনের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়- ২০-৩০ বছর বয়সী একজন, ৩০-৪০ বছর বয়সী একজন, ৪০-৫০ বছর বয়সী ৬ জন, ৫০-৬০ বছর বয়সী ৬ জন, ৬০-৭০ বছর বয়সী ১৩ জন এবং ৭০ এর বেশি বয়সী ৭ জন রয়েছেন। এর মধ্যে ১৩ জন ঢাকা বিভাগের, ১০ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৪ জন সিলেট বিভাগের, ৪ জন রাজশাহী বিভাগের, একজন খুলনা বিভাগের ও রংপুরে বিভাগের ২ জন রয়েছেন। ৩০ জন হাসপাতালে এবং ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বাসায়।
করোনা সুস্থতার সংখ্যা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও এক হাজার ১৮৫ জন। সবমিলিয়ে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা এখন ৫৪ হাজার ৩১৮ জন। সুস্থতার হার ৪০ দশমিক ৫৪ শতাংশ।’
তিনি আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ৭২৬ জনকে এবং এ পর্যন্ত মোট আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে ২৪ হাজার ৯৩ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৪৯০ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৯ হাজার ৮২৬ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন ১৪ হাজার ২৬৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে দুই হাজার ৩১২ জনকে, এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে তিন লাখ ৩৬ হাজার ৭০২ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৫২০ জন, এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইন থেকে মোট ছাড় পেয়েছেন দুই লাখ ৭৭ হাজার ১৫৭ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৬৩ হাজার ৯১৩ জন।
Advertisement
গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে ছড়ানো করোনাভাইরাস গোটা বিশ্বকে বিপর্যস্ত করে দিয়েছে। বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৯৯ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। মৃতের সংখ্যাও ৫ লাখ ছুঁই ছুঁই করছে। তবে ৫৩ লাখের বেশি রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। আর প্রথম মৃত্যু হয় ১৮ মার্চ।
এফআর/এমএস