বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের রাংতা গ্রামে একটি টং দোকানে রাব্বি হাওলাদার (৮) নামে এক শিশুকে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছে তার পরিবার।
Advertisement
পরিবারের দাবি, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে যার তার সঙ্গে অবাধে মেলামেশা ও ঘোরাফেরা ঠেকাতে রাব্বিকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। যাতে করোনা থেকে বাঁচতে পারে রাব্বি।
রাব্বি হাওলাদার উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের রাংতা গ্রামের আব্দুর রশিদ হাওলাদার ও শেফালী বেগম দম্পতির ছেলে। স্থানীয় একটি মাদরাসায় তৃতীয় শ্রেণিতে লেখাপড়া করে রাব্বি।
স্থানীয়রা জানায়, রাব্বি চঞ্চল। সারাদিন বাড়ির বাইরে থাকে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও গ্রামের ছেলেদের সঙ্গে খেলাধুলা ও ঘোরাফেরা করে। বাবা-মা তাকে বকাঝকা করেও কোনো কাজ হয়নি। বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) সকালে রাব্বি বাড়ি থেকে বের হয়। বন্ধুদের সঙ্গে ঘোরাফেরা করে। সন্ধ্যার পরও রাব্বি বাড়ি না গিয়ে এক দোকানে টিভি দেখে। রাতে ঘরে ফেরে। এ কারণে শুক্রবার (২৬ জুন) সকালে রাজিহার-গৌরনদী সড়কের রাংতা সেতুর পাশে টং দোকানে রাব্বিকে লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে রাখেন তার মা।
Advertisement
রাব্বির বাবা আব্দুর রশিদ হাওলাদার বলেন, রাব্বি কোনো কথাই শোনে না। মাদরাসা বন্ধ তিন মাস। এই তিন মাসে লেখাপড়া করেনি। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সারাদিন বাইরে ঘোরাফেরা করে। তাকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। শাসন ও বকাঝকা করেও লাভ হয়নি। তার কারণে পরিবারের অন্য সদস্যরাও করোনার ঝুঁকিতে রয়েছে। এজন্য রাব্বিকে সকাল থেকে দোকানের সঙ্গে বেঁধে রেখেছে তার মা। রাব্বি যাতে বন্ধুদের সঙ্গে ঘোরাফেরা ও মেলামেশা না করতে পারে। এতে করোনামুক্ত থাকবে রাব্বি। আমাদেরও দুশ্চিন্তা দূর হলো।
এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সুশান্ত বালা বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে শিকল দিয়ে শিশুকে বেঁধে রাখা অমানবিক। করোনা সংক্রমণ থেকে নিরাপদে রাখতে তাকে বোঝাতে হবে। শাস্তি দিলে অনেক সময় শিশুদের মনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। বেঁধে রাখা সমাধানের পথ নয়।
আগৈলঝাড়া থানা পুলিশের ওসি আফজাল হোসেন বলেন, এ ধরনের ঘটনা আমার জানা নেই। কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সাইফ আমীন/এএম/পিআর
Advertisement