দেশজুড়ে আলোচিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ এবার করোনায় মারা যাওয়া ঘনিষ্ঠ বন্ধুর মরদেহ নিজ কাঁধে বহন করে চোখের জলে বিদায় জানালেন।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি সাহেবপাড়া এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা গিয়াস উদ্দিনের ছেলে শাকিল। তিনি ছিলেন কাউন্সিলর খোরশেদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু।
বৃহস্পতিবার কাউন্সিলর খোরশেদ ব্যক্তিগত ফেসবুকে এক আবেগঘন পোস্টে বলেন, আমার বন্ধু শাকিল বীর মুক্তিযোদ্ধা পিতার একমাত্র পুত্র। শাকিল করোনায় মারা গেছে। জানাজা শেষে শাকিলের মৃতদেহ যখন কবরস্থানে নিয়ে যাচ্ছি তখন শাকিলের বাবা আমাকে বললেন বাবা আমি একটু কাঁধে নিব। আমি বললাম চাচা আপনি পারবেন না। তিনি বললেন একমাত্র পুত্র হারানোর শোক বইতে পারলে খাটিয়াও পারবো। বললাম ঠিক আছে আমার সাথে ধরেন। তিনি খাটিয়ার এক প্রান্ত ধরে হাউমাউ করে কাঁদলেন আর কালেমা পড়লেন। পিতার কাঁধে পুত্রের লাশ হিমালয়ের চেয়ে ভারী।
খোরশেদ ফেসবুক পোস্টে আরও লিখেছেন, এসএসসি ১৯৯০ ব্যাচের সদস্য শাকিল বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। টিম খোরশেদ মরহুমের গোসল, কাফন, জানাজা ও দাফন সম্পন্ন করেছে। সহযোগিতায় ছিলেন ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন, সমাজসেবক ভেন্ডার ইকবাল হোসেন ও মিজমিজি সেবা সংঘ। আরও ছিলেন হাফেজ শিব্বির আহমেদ, সুমন দেওয়ান, লিটন মিয়া, রাফি, সেলিম মোল্লা ও নাইম।
Advertisement
কাউন্সিলর খোরশেদ বলেন, শাকিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন শেষে কন্টিনেন্টাল কুরিয়ার সার্ভিসের ডিজিএম পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি অনেক সামাজিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতেন। করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণকারী কয়েকজনের মৃতদেহও তিনি দাফন করেছিলেন।
তিনি বলেন, আজ আমার জন্য বেদনাবিধুর দিন। কিন্তু তার চেয়েও প্রয়াত শাকিলের বাবা-মায়ের জন্য আরও বেদনার। কারণ করোনা কেড়ে নিয়েছে তাদের একমাত্র পুত্রের প্রাণ। স্ত্রী হারিয়েছেন তার স্বামীকে। অল্প বয়সেই এতিম হতে হলো শাকিলের ছেলে ও মেয়েকে। এলাকায় বিরাজ করছে শোকের মাতম। তাই করোনার ভয়াবহতা সম্পর্কে আমাদের সচেতনতার বিকল্প নেই। তার জন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং বিনা কারণে ঘর থেকে বের হওয়া যাবে না।
মো. শাহাদাত হোসেন/বিএ
Advertisement