জাতীয়

করোনা যুদ্ধে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়ায় সেনাপ্রধানের ধন্যবাদ

করোনা যুদ্ধে সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে সেনাবাহিনীকে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশ্যে চলমান করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা ও ঘূর্ণিঝড় আম্ফানসহ নানাবিধ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এ ধন্যবাদ জানান। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত চলমান নির্দেশনা অনুসরণ করে এ দরবারের আয়োজন করা হয়।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর)।

সেনাপ্রধান বলেন, প্রধানমন্ত্রী করোনা মোকাবিলায় যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। আমরা সৈনিক এবং এ যুদ্ধে আমরা সর্বোতভাবে নিয়োজিত থেকে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশ ও জনগণের কল্যাণে আত্মনিবেদন করছি। দেশের এ ক্রান্তিকালে সেনাবাহিনীকে জনগণের সেবায় আত্মনিয়োগের সুযোগ দেয়ার জন্য সেনাবাহিনীর সব সদস্যের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।

Advertisement

ভিটিসির মাধ্যমে সব সেনানিবাসে একযোগে সেনাবাহিনী প্রধান বক্তব্য দেন। সেনাপ্রধান বক্তব্যের শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করেন। এছাড়া তিনি ভাষা আন্দোলনের শহীদ এবং মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সব পদবির সদস্যদের উদ্দেশ্যে চলমান করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা ও ঘূর্ণিঝড় আম্ফানসহ নানাবিধ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন জেনারেল আজিজ আহমেদ।

তিনি করোনা মোকাবিলায় নিয়োজিত সেনাবাহিনীর সব চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী তথা সব পদবির সদস্যদের কঠোর পরিশ্রম ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির ভূয়সী প্রশংসা করেন। একই সঙ্গে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় জনগণের সাহায্যে নিরলস প্রচেষ্টার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

সেনাপ্রধান জাতি গঠনমূলক কর্মকাণ্ড যেমন: এন-৮ এক্সেস কন্ট্রোলড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজে সেনাবাহিনীকে সুযোগ দেয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। সব সেনা সদস্যকে নিষ্ঠার সঙ্গে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেন তিনি।

Advertisement

সেনাবাহিনীর সদস্যদের মনোবল অটুট রাখার লক্ষ্যে গৃহীত সময়োপযোগী কল্যাণমূলক পদক্ষেপসমূহ সবাইকে অবহিত এবং ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনাসমূহ উপস্থাপন করেন তিনি। সেনা সদস্যদের আবাসন সমস্যা সমাধান, জীবন বীমা সুবিধা চালু, দুস্থ মুক্তিযোদ্ধা ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যদের কর্মসংস্থানসহ অন্যান্য কল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডের বিস্তারিত তুলে ধরেন তিনি।

‘কঠোর প্রশিক্ষণই একজন সৈনিকের প্রকৃত কল্যাণ’ এই মূলমন্ত্রকে ধারণ করে প্রশিক্ষণ সুবিধা সম্প্রসারণ ও কার্যকরী প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য সেনাবাহিনী প্রধান সবাইকে নির্দেশনা প্রদান করেন।

সেনাবাহিনী প্রধান ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’-এর আলোকে একটি সক্ষম সেনাবাহিনী গঠনের লক্ষ্যে গৃহীত পদক্ষেপসমূহ তুলে ধরার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর দূরদৃষ্টি সম্পন্ন দিকনির্দেশনা ও নিরবচ্ছিন্ন সমর্থনের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

শৃঙ্খলা সেনাবাহিনীর প্রাণ এবং আনুগত্য সেনাবাহিনীর চালিকাশক্তি–এ চেতনাকে ধারণ করে সেনাবাহিনীর সব সদস্যকে চেইন অব কমান্ড অনুসরণ এবং কোনো ধরনের গুজবে প্ররোচিত না হওয়ার জন্য নির্দেশনা দেন তিনি।

সেনাপ্রধান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে যখনই দেশে কোনো ভালো কাজ হয়, তখনই স্বার্থান্বেষী মহল সেই কৃতিত্বকে মলিন করার অপচেষ্টা করে। সম্প্রতি সেনাবাহিনী করোনাযুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় যখন ভালো কাজ করছে, তখন ওই কুচক্রী মহল সেনাবাহিনীকে নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা করছে। সুশৃঙ্খল সেনাবাহিনীকে অতীতের মতো এ ধরনের অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে উপদেশ দেন তিনি।

জেনারেল আজিজ বলেন, সেনাবাহিনী সর্বদাই সরকার, দেশের সংবিধান ও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে দায়িত্ব পালনে অঙ্গীকারবদ্ধ।

দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল্যবোধকে ধারণ করে সেনাবাহিনীর প্রতিটি সদস্যকে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে সুরক্ষার জন্য যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান তিনি।

জেপি/এএইচ/জেআইএম