খেলাধুলা

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার আগে সময় নেয়ার পক্ষে নান্নু

দেশের বাইরে তিনটি আর ঘরের মাঠে দুইটি- বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের মোট পাঁচটি সিরিজ স্থগিত হয়ে গেছে। সামনের দিনগুলোয় আছে শুধু এশিয়া কাপ (সেপ্টেম্বরে), টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ (অক্টোবর-নভেম্বর) আর শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ঘরের মাঠে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ (ডিসেম্বর বা জানুয়ারিতে)।

Advertisement

এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। তবে এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের ভবিষ্যত অনিশ্চিত। না হওয়ার সম্ভবনাই খুব বেশী। কারণ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়াই এটি আয়োজন অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে।

যে দেশে খেলা হবে, সে দেশই যখন সম্ভব নয় বলে মনে করছে সেখানে ঐ আসর হবার সম্ভাবনা খুব কম বলেই ধরে নেয়া যায়। আগামী ১০ জুলাই সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে আইসিসি। এশিয়া কাপের ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত আসবে খুব শিগগিরই।

এখন যদি এ দুই আসর না হয় তাহলে এবছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টাইগারদের মাঠে নামার সম্ভাবনা খুব কম। তবে আগামী দুই মাস অর্থাৎ আগস্ট বা সেপ্টেম্বরের ভেতর করোনার তীব্রতা কমে অবস্থা ভাল হলে, তখন হয়তো স্থগিত হওয়া সিরিজগুলো আয়োজনের সম্ভাবনা থাকবে। অবশ্য সেটা নির্ভর করবে প্রথমত করোনা ভাল হওয়ার ওপর, পাশাপাশি যাদের সঙ্গে সিরিজগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে সেই দেশের ক্রিকেট দলের ফ্রি থাকার ওপর।

Advertisement

করোনা পরিস্থিতি ভাল হলেও চটজলদি বন্ধ হয়ে যাওয়া সিরিজ চালুর সম্ভাবনা কম। যে ৫টি সিরিজ বন্ধ রাখা হয়েছে, সেই দেশগুলো যদি করোনা সংকট কাটার পর ফ্রি থাকে তবেই না খেলার প্রশ্ন। ঐ দলগুলো আবার অন্যত্র ব্যস্ত হয়ে পড়লে আর নিকট ভবিষ্যতে বন্ধ হওয়া সিরিজ খেলার সম্ভাবনা থাকবে না টাইগারদের।

এ বিষয়ে জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু মনে করেন, সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে গেলেও জাতীয় দলের মাঠে ফেরার জন্য কিছু নির্দিষ্ট সময় অবশ্যই প্রয়োজন। বৃহস্পতিবার জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপে প্রধান নির্বাচক জানান, ‘খেলোয়াড়দের সুস্থতাই সবার আগে এবং কোনরকম স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে তাদের ঠেলে দেয়ার কোন ইচ্ছে আমাদের তথা বোর্ডের নেই।’

নান্নু আরও জানান যে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার আগে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের যথাযথ প্রস্ততিও খুব দরকার। তার ব্যাখ্যা, করোনা সংকট কেটে অবস্থা ভাল হয়ে গেল আর অল্প কদিনের প্রস্তুতিতে জোর করে মাঠে নেমে পড়ল জাতীয় দল- এমন ভাবা হবে চরম বোকামি।

প্রধান নির্বাচকের অনুভব, ‘ক্রিকেটাররা এরই মধ্যে তিন মাসের বেশি সময় ধরে ঘরে। জানি, তারা ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করছে। কেউ কেউ ঘরে নিয়মিত হালকা ফিজিক্যাল ট্রেনিংটাও করেছে। কিন্তু সেটাই যথেষ্ঠ নয়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে একজন ক্রিকেটারের তার চেয়ে বহু গুণ বেশি ফিটনেস দরকার। ক্রিকেটের পর্যাপ্ত স্কিল ট্রেনিং এবং সর্বোপরি মানসিক প্রস্তুতিও খুব প্রয়োজন। যার কিছুই এখন হয়নি।’

Advertisement

নান্নু আরও বলেন, ‘আমাদের ক্রিকেটারদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরাতে খেলার আগে অনেক বেশি সময় ধরে প্রস্তুতি নিতে হবে। আর তার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় দরকার। ফিটনেস ট্রেনিংয়ের পর মাঠে নামার আগে অন্তত তিন সপ্তাহ কঠোর ফিজিক্যাল ট্রেনিং করতে হবে। তারপর আরও অন্তত দুই সপ্তাহ স্কিল ট্রেনিং করা জরুরি।’

প্রধান নির্বাচকের শেষ কথা হলো, ‘এই ৫ সপ্তাহর প্রস্তুতিই শেষ নয়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার আগে ম্যাচ প্র্যাকটিসটাও অত্যন্ত জরুরি। শুধু ব্যাটিং-বোলিং অনুশীলন আর সেন্টার উইকেটে নিজেকে ঝালিয়ে নিলেই হবে না। দরকার পর্যাপ্ত ম্যাচ প্র্যাকটিস। ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেই সে ম্যাচ ঘাটতি পোষাতে হবে। আমি মনে করি বর্তমানে ক্রিকেটাররা যে অবস্থায় আছে, সেখান থেকে তাদের টেস্ট-ওয়ানডে খেলার আগে অতি অবশ্যই ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে হবে।’

‘এখন যা অবস্থা, তাতে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের আগে হয়তো তাও সম্ভব না। আমি খুব করে চাইব সেপ্টেম্বরের শেষ ভাগেও যদি ঘরোয়া ক্রিকেট চালু করা যায়, তাহলে অক্টোবরের মাঝামাঝি বা শেষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা সম্ভব। এর আগে কোনভাবেই না। ক্রিকেটারদের তো আগে মাঠে নামতে হবে। চার মাস ঘরে বসে থাকার পর হুট করে অল্প কদিন অনুশীলন করেই তো আর টেস্ট-ওয়ানডে খেলতে নামা সম্ভব না। সেটা ঠিকও হবে না। তাতে ভালোর চেয়ে খারাপ হবার সম্ভাবনাই বেশি।’

এআরবি/এসএএস/পিআর