ব্যবসায়ী দম্পতিকে জবাই করে হত্যার প্রতিবাদে ক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে নেত্রকোণার দুর্গাপুর উপজেলার ব্যবসায়ীসহ স্থানীয় লোকজন। খুনিদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিতে শনিবার শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভা থেকে আজ (রোববার) সকাল-সন্ধা উপজেলা শহরের সকল দোকানপাট বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আর স্থানীয় সংসদ সদস্য ছবি বিশ্বাস আসামিদের ধরতে প্রশাসনকে সাতদিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন।শনিবার বিকেলে শহীদ সন্তোষ পার্কে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও পূজা উদযাপন পরিষদ হত্যার প্রতিবাদে শোকর্যালিসহ প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে। সংগঠনের সভাপতি ও সুসং ডিগ্রি কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল রেমন্ড আরেং এর সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন নেত্রকোণা পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রশান্ত কুমার রায়, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি সিতাংশু বিকাশ আচার্য্য,দুর্গাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান এমদাদুল হক খান, সিপিবি কেন্দ্রীয় নেতা ডা. দিবালোক সিংহ, দুর্গাপুর উপজেলা বিএনপি সভাপতি মো. জহিরুল আলম ভূইয়া।শুক্রবার বেলা পৌনে ৩টার দিকে দুর্গাপুর পৌর শহরের মধ্যবাজারের সুবর্ণা বস্ত্রালয়ের স্বত্তাধিকারী অরুণ কুমার সাহা (৬২) ও তার স্ত্রী হেনা রাণী সাহার (৪৮) গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।দুর্গাপুর থানার ওসি রেজাউল ইসলাম খান জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্যে শনিবার সকালে নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে সাতজনকে আটক করা হয়েছে।আটককৃতরা হলেন ঝন্টু চন্দ্র দাস, রিপন সাহা, শাহেদ আলী, কাঞ্চন, জসিম, অশেষ ও বাড়ির গৃহকর্মী শান্তির মা। এরা সকলেই দুর্গাপুর উপজেলার বাসিন্দা ও নিহত অরুন কুমার সাহার দোকানের কর্মচারী। এদের মধ্যে শান্তির মা বাড়ির গৃহপরিচিকা হিসেবে দীর্ঘ ১৫ বছরেরর অধিক সময় ধরে কাজ করতেন এই দম্পতির বাসাতে।নিহত দম্পতির দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। তার মধ্যে বড় সুজিত সাহা বৃহস্পতিবার তার ছেলের চিকিৎসার জন্য ঢাকায় অবস্থান করছিলেন ও ছোট ছেলে সুদীপ সাহা দীর্ঘদিন যাবৎ ইতালিতে বসবাস করছেন। এছাড়া বড় মেয়ে কানাডা থাকেন বলে জানান নিহতর স্বজনরা।বাজারের এক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাগোনিউজকে জানান, খুন হওয়া এই ব্যবসায়ী এক উপজাতি নারীকে বিয়ে করেন প্রায় বিশ/বাইশ বছর পূর্বে। ওই তরফের একজন মেয়েও রয়েছে। সে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে। খুনটি পারিবারিক দ্বন্দ্বে হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা তার।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি জানান, হত্যাকাণ্ডটি ব্যবসায়িক কারণে হয়ে থাকতে পারে। এছাড়া খুন হওয়া ওই ব্যবসায়ী কিছুদিন আগে বিরিশিরি এলাকার উৎরাইল বাজারে একটি আবাসিক হোটেল ক্রয় নিয়ে স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে বিরোধ চলছিল।নেত্রকোনার পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী জাগো নিউজকে জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সাতজনকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর ঘটনার মোটিভ সম্পর্কে বলা যেতে পারে।তবে স্থানীয় কেউ কেউ ধারণা করছেন পূজায় সীমান্ত অঞ্চলে পাহারা কড়াকড়ি না থাকায় খুনিরা ভারতে পালিয়ে যেতে পারে।কামাল হোসাইন/বিএ
Advertisement