করোনাভাইরাসে হার্ড ইমিউনিটির কোনও প্রমাণ নেই মন্তব্য করে মার্কিন এক বিজ্ঞানী বলেছেন, এটা শুধু কল্পনা। তিনি এমন এক সময় এই হার্ড ইমিউনিটির ব্যাপারে কথা বললেন যখন যুক্তরাষ্ট্রে তরুণদের মাঝে করোনা সংক্রমণ ক্রমান্বয়ে বাড়ছে; বাড়ছে বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তেও।
Advertisement
কোনও ভ্যাকসিন না আসা পর্যন্ত শেষ পর্যন্ত এই হার্ড ইমিউনিটির দিকেই হাঁটতে হবে কিনা সেটি নিয়ে বিতর্ক আছে। এর মাঝেই মার্কিন বিজ্ঞানী ও লেখক উইলিয়াম হ্যাসেলাইন মঙ্গলবার বলেন, করোনাভাইরাস জটিল হতে পারে।
সিএনএনের নিউ ডে অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে মার্কিন এই বিজ্ঞানী বলেন, ‘আমি বলি- এই ভাইরাসটিতে আপনি আক্রান্ত হন এবং তারপর আপনার শরীর এটিকে ভুলে যায়। এটি কোনও স্ট্যান্ডার্ড ভাইরাস নয় যে, আপনি হার্ড ইমিউনিটি পেতে যাচ্ছেন।’
তিনি বলেন, করোনাভাইরাসে হার্ড ইমিউনিটির কোনও প্রমাণ নেই। এর কোনও অস্তিত্ব নেই। প্রত্যেক বছর এ ধরনের চারটি করোনাভাইরাস ফিরে আসে, আমাদের স্বর্দি জ্বর হয়। আপনার যদি এসব করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হয়, তাহলে এক বছর পরও একই ধরনের রোগ হবে।
Advertisement
উইলিয়াম হ্যাসেলাইন বলেন, এখন আমরা গবেষণা থেকে জানতে পাই যে, মাত্র দুই মাস পর শরীরে করোনার ইমিউনিটি নষ্ট হয়ে যায়। এটা বিলীন হয়ে যায় না, তবে খুব অল্প সময় পরে দুর্বল হয়ে যায়। সুতরাং করোনাভাইরাসে হার্ড ইমিউনিটি বলে কোনও সমাধান নেই।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে হার্ড ইমিউনিটির দিকে অনিচ্ছা সত্ত্বেও হাঁটতে বাধ্য হলেও মার্কিন এই বিজ্ঞানী বলেন, এটা একেবারেই উদ্ভট কল্পনা। এটা কয়েকটি ভাইরাসের ক্ষেত্রে হয়। তবে এই ভাইরাসের ক্ষেত্রে সেটি হবে, তেমন কিছু দেখা যাচ্ছে না।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহান থেকে বিশ্বের দুই শতাধিক দেশে ছড়িয়েছে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস। প্রথম দিকে ইউরোপ এবং আমেরিকায় ব্যাপক তাণ্ডব চালালেও বর্তমানে এশিয়া, উত্তর আমেরিকা এবং আফ্রিকা হয়ে উঠছে ভাইরাসটির উপকেন্দ্র। অতীতে সংক্রমণের দৈনিক সব রেকর্ড ভেঙে প্রত্যেক দিন নতুন রেকর্ড গড়ছে।
ওয়ার্ল্ডওমিটার বলছে, কয়েক দিন ধরে গড়ে এক লাখের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ ৩৯ হাজার ৬০৭ জন। তার আগের দিন আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ ৩০ হাজার। তবে এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ এক লাখ ৮২ হাজার ২০২ জন আক্রান্ত হয়েছে গত ১৯ জুন।
Advertisement
নতুন ও অপ্রতিরোধ গতিতে বিস্তার ঘটাতে থাকা করোনায় বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যাও প্রায় কোটি (৯২ লাখ ২৮ হাজারের বেশি) ছুঁতে চলেছে। এই ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার পর মারা গেছেন ৪ লাখ ৭৫ হাজারের বেশি। সূত্র: সিএনএন, ওয়ার্ল্ডওমিটার।
এসআইএস/এমএস