আন্তর্জাতিক

ট্রায়াল শেষ হওয়ার আগেই ভ্যাকসিনের প্রয়োগ শুরু করেছে চীন?

ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে সাধারণত তিনটি ধাপ থাকে। চীনে এখন পর্যন্ত পাঁচটি ভ্যাকসিন হিউম্যান ট্রায়ালের পর্যায়ে আছে। এর মধ্যে অন্তত দুটি প্রথম দুই ধাপের ট্রায়ালে ‘সফলতা’ পেয়েছে।

Advertisement

অথচ ট্রায়াল পুরোপুরি শেষ হওয়ার আগেই নভেল করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু করেছে চীন। এমনটাই দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অর্থনীতি বিষয়ক গণমাধ্যম ব্লুমবার্গ।

ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন বলছে, বেইজিংয়ের রাষ্ট্র-পরিচালিত কিছু কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শরীরে করোনার ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হচ্ছে। চায়না ন্যাশনাল বায়োটেক গ্রুপ বা সিএনবিজি এই ভ্যাকসিন তৈরি করেছে।

এর আগে শহরের যারা রাষ্ট্রীয় কাজে বিদেশে যাওয়া-আসা করছেন তাদের ওপর ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হয়। বর্তমানে ভ্যাকসিন প্রয়োগের ওই কর্মসূচির আওতা বাড়ানো হয়েছে। এখন বেইজিং শহরের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করতে চায় চীন।

Advertisement

ট্রায়াল শেষ হওয়ার আগেই মে মাসের শেষের দিকে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম শুরু করতে পারে, সেটি জানা যায় মে মাসের শেষ দিকে। ওই সময় সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, কাদের ভ্যাকসিন দেয়া হবে সে বিষয়ে চীনের জাতীয় টিকাদান কর্মসূচি থেকে একটি গাইডলাইন তৈরি করা হচ্ছে।

গত ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে নতুন এই ভাইরাসটি গোটা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর চীনসহ অনেক দেশ ভ্যাকসিন আবিষ্কারের লড়াইয়ে নামে। চীনে এখন সংক্রমণ কমে যাওয়ায় তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে।

তবে চীন জানিয়েছে, তাদের দেশে সংক্রমণ কমে আসায় ব্রাজিলে চূড়ান্ত ধাপের ট্রায়াল চালানো হবে। এর ভেতর বেইজিংয়ে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সেখানকার স্বাস্থ্যকর্মীদের ভ্যাকসিন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, চীনের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের যেসব কর্মকর্তা বেইজিংয়ে কাজ করছেন প্রায় দুই সপ্তাহ আগে তাদের ভ্যাকসিন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আর যে কর্মকর্তারা এই মুহূর্তে বিদেশে আসা-যাওয়া করছেন, প্রথমে শুধুমাত্র তাদের চায়না ন্যাশনাল বায়োটেক গ্রুপ বা সিএনবিজি’র ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছিল। পরে পরিধি বাড়িয়ে বেইজিংয়ের বিভিন্ন জেলার কর্মকর্তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

Advertisement

ট্রায়ালের বাইরে আগেভাগে ভ্যাকসিন প্রয়োগের এই খবরের বিষয়ে মুখ খোলেননি চীনের কর্মকর্তারা। ব্লুমবার্গ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এসব তথ্য দিয়েছেন চীনের তিন সাংবাদিক। তবে চীন থেকে ঠিক কতজন কর্মকর্তা বিদেশে আসা-যাওয়া করছেন এবং কতজন কর্মকর্তাকে এই ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে তা জানাতে পারেননি তারা। এমনকি এই ভ্যাকসিন প্রয়োগের ফলে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে কি-না, বা শরীরে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়েছে কি-না, তাও জানা সম্ভব হয়নি।

এসআর/পিআর