ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের সামনের রাস্তা বাঁশ দিয়ে আটকে দেয়া হয়েছে। একটি বিলবোর্ডে বড় বড় করে লেখা রয়েছে নীলক্ষেত ও ফুলার রোড ব্যবহার ও প্রবেশ নিষেধ। টিএসসির সামনের রাস্তা খোলা থাকলেও মানুষের উপস্থিতি খুব একটা নেই। রাজু ভাস্কর্য চত্বরের অদূরের ক্যান্টিনে তালা ঝুলছে। টিএসসিতে প্রবেশের গেট দুটিও তালাবদ্ধ। সামনের রাস্তায় কয়েকজন হকার চা সিগারেট নিয়ে বিক্রির অপেক্ষায়।
Advertisement
একজন হকার রংবেরংয়ের গ্যাস বেলুন হাতে নিয়ে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে একটি বেলুনও বিক্রি করতে পারলেন না। হতাশা নিয়ে সোজা পথে রওনা হলেন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের দিকে। ডাক্তার মিলন ভাস্কর্য চত্বরের সামনে কয়েকজন রিকশা চালক এবং সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালককে যাত্রীর অপেক্ষায় দেখা যায়। রোকেয়া হল থেকে কলাভবন, ভিসি চত্বর পর্যন্ত যতদূর চোখ যায় সুনসান ফাঁকা রাস্তা চোখে পড়ে।
গত ২০ জুন বিকেলে সরেজমিন পরিদর্শনকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির এমনই দৃশ্য চোখে পড়ে।
করোনা পরিস্থিতির কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের পদচারণায় নিত্য মুখরিত টিএসসি এখন চিরায়ত রূপ হারিয়েছে। হঠাৎ দেখলে মনে হবে এ যেন এক অচেনা স্থান।
Advertisement
দল বেঁধে টিএসসিতে বিরতিহীন আড্ডা, ক্যান্টিন থেকে খাবার কিনে ভাগ করে খাওয়া, ফুটপাতে বসে চায়ের কাপে চুমুক, সহপাঠী কিংবা বান্ধবীর জন্য হলের গেটে অপেক্ষা, বই-পুস্তক হাতে ক্যাম্পাসে ছুটে চলা কিংবা লাইব্রেরিতে পড়াশোনা, বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের গান-গল্প-কবিতার সভা ইত্যাদি নানা আয়োজনের চিরায়ত দৃশ্য যেন উধাও হয়ে গেছে।
গোটা ক্যাম্পাস জুড়ে সুনসান নীরবতা। নীলক্ষেত মোড় থেকে টিএসসি এবং ফুলার রোডের রাস্তা গত তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস বন্ধ থাকার কারণে অধিকাংশ শিক্ষার্থী এখন গ্রামের বাড়িতে। ফলে দিনের বেলায়ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গা ছমছম পরিবেশ বিরাজ করে।
সরেজমিন ক্যাম্পাস পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, স্বাভাবিক সময়ে টিএসসিতে শতশত মানুষের উপস্থিতি থাকলেও এখন ভাসমান কিছু মানুষ ছাড়া বাইরে থেকে আসা মানুষের সংখ্যা খুবই কম। যারা আসছেন তারাও খুব বেশি সময় অবস্থান করছেন না। পরিচিতজন বা বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে দেখা করেই বাসায় ফিরে যাচ্ছেন।
ফাঁকা ক্যাম্পাসে যেসব রাস্তা খোলা আছে সে রাস্তা মূলত সীমিত যাতায়াতের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। এদিকে সন্ধ্যা নামতে না নামতেই একেবারে জনমানবশূন্য হয়ে পড়লো কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার।
Advertisement
এমইউ/এমএফ/পিআর