বানর চঞ্চল প্রকৃতির প্রাণি। প্রচলিত আছে- মানুষ একসময় নাকি বানর ছিলো। বানর দেখেতে যাওয়ার মধ্যে কোনো বাহাদুরি না থাকলেও শহরের বুকে বানরের বসতি দেখলে যে কেউ থমকে দাঁড়াবেন। বানর-রাজ্য খ্যাত মাদারীপুরের চরমুগুরিয়া বন্দরে তাই ভিড় জমে বানর দর্শনার্থীদের। আপনিও একদিনের জন্য ঘুরে আসতে পারেন।বানর-রাজ্য কেন: আড়িয়াল খাঁ নদবেষ্টিত মাদারীপুর অঞ্চল একসময় বন-জঙ্গলে পূর্ণ ছিল। স্থানীয়দের ধারণা, সুন্দরবন এক সময় বাকেরগঞ্জ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। এই বাকেরগঞ্জ হয়ে কিছু বানর মাদারীপুরে আসে। ১৯২০ সাল থেকে মাদারীপুরের কুলপদ্বী, পুরানবাজার ও চরমুগুরিয়া এলাকায় বানরের বিচরণ রয়েছে। ধর্মীয় অনুভূতি: দেশ ভাগের আগে এ অঞ্চলে অনেক হিন্দু সম্প্রদায়ের বসতি ছিল। অনেকে বানরকে দেবতা মনে করে কলা, ফল-মূল, মোয়া, মুড়ি, চিড়া ইত্যাদি খেতে দিত। আস্তে আস্তে এই বানরগুলো চরমুগুরিয়া বন্দরে মানুষের মাঝে থাকতে শুরু করে। অবস্থান: ৯ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই বন্দরে বানররা মানুষের একান্ত পড়শী। ঘর-বাড়ি, দোকান-পাট, রাস্তা-ঘাট এমনকি হাটের মধ্যে অবাধে বিচরণ করে। বানরগুলোকে চরমুগুরিয়া বন্দরের কালীবাড়ি, স্বর্ণকারপট্টি, জেটিসি, আদমজী, চাল আড়ৎ ও চৌরাস্তা এলাকায় বেশি বিচরণ করতে দেখা যায়।বানরের সংখ্যা: বর্তমানে চরমুগুরিয়া বন্দরে প্রায় দেড় হাজার বানরের বসতি রয়েছে। বিনোদন: বানর-রাজ্যে প্রবেশ করে কিছু খাবার ছিটালেই ছুটে আসবে বানরদল। খাবার না দিয়েও ঘুরে ঘুরে দেখতে পাবেন- কেউ গাছে ঝুলছে, কেউ বাচ্চাকে দুধ খাওয়াচ্ছে, কেউ বাচ্চার মাথার উকুন মেরে দিচ্ছে। আবার কোনটি খুটে খুটে মাঠের ঘাস ছিড়ে খাচ্ছে, কোনটি আবার খাবারের জন্য অন্য বানরকে তাড়া করছে।কীভাবে যাবেন: ঢাকার গাবতলী, গুলিস্তান ও কেরানীগঞ্জ থেকে সড়ক পথে ও সদরঘাট থেকে নৌ-পথে মাদারীপুর যাওয়া যায়। সড়কপথে সার্বিক ও চন্দ্রা পরিবহনে মাদারীপুর শহরে না গিয়ে চরমুগুরিয়া বাসস্ট্যান্ডে নেমে রিকশা বা অটোরিকশায় বানর-রাজ্যে প্রবেশ করতে পারেন। গাবতলী থেকে বরিশালগামী যেকোনো বাসে মস্তফাপুর নেমে বাস বা অটোরিকশায় চরমুগুরিয়া যাওয়া যায়।ঢাকার সদরঘাট থেকে নৌ-পথে পারাবাত, তরিকা, দ্বীপরাজ লঞ্চে চড়ে মাদারীপুর শহরে যাওয়া যায়। শহর থেকে রিকশা বা অটো রিকাশায় চরমুগুরিয়া যেতে হবে।থাকা-খাওয়া: থাকতে চাইলে মাদারীপুর শহরে অবস্থান করতে হবে। সেখানে সার্বিক ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল পলাশ, সুমন হোটেল, হোটেল মাতৃভূমি, হোটেল সৈকত ও হোটেল জাহিদসহ বেশকয়েকটি হোটেল রয়েছে। সেখানেই খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে বা বাহির থেকেও খেয়ে আসতে পারবেন।ছবি- ইন্টারনেট থেকে সংগৃহিতএসইউ/পিআর
Advertisement