সোমবার, ভোর সাড়ে ৬টা। রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতর চারদিকে সুনসান নীরবতা। হাতেগোনা দু-চারজন প্রাতঃভ্রমণকারীকে চুপিসারে হাঁটতে দেখা যায়। করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে গত তিন মাসের বেশি সময় ধরে উদ্যানে প্রবেশ নিষেধ! ঘরবন্দি মানুষ নিরাপত্তারক্ষীদের অনুরোধ করে ভেতরে প্রবেশ করে নীরবে হাঁটাহাঁটি করে বাড়ি ফিরে যায়।
Advertisement
তাদের সবার মুখে মাস্ক, চেহারায় এক ধরনের অজানা আতঙ্ক। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ-মৃত্যুজনিত আতঙ্ক মানুষের জন্য অভিশাপ হয়ে এলেও প্রকৃতি, পরিবেশ ও পশুপাখির জন্য তা আশীর্বাদ হয়ে দেখা দিয়েছে।
জনমানবহীন পরিবেশে সবুজ ঘাসে ছেয়ে গেছে উদ্যান। চারদিকে সবুজ গাছপালা, গাছে গাছে ফুটেছে নানা রঙের ফুল। কোকিলের ডাক শোনা যায়। বিভিন্ন প্রজাতির পাখি গাছের ডালে ডালে ঘুরে বেড়ায়। কাঠবিড়ালীরা অবাধে ঘুরে বেড়ায় এদিক সেদিক। এক অপরূপ দৃশ্য।
জাগো নিউজের এ প্রতিবেদক আজ সকালে সরেজমিনে দেখতে পান, উদ্যানের পায়ে হাঁটার পথগুলোতে কাঠবিড়ালীরা নির্ভয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। একাধিক কাঠবিড়ালী এদিক সেদিক ছোটাছুটি করে কখনও গাছের আবডালে কখনও গাছের কুঠুরিতে আবার কখনও সবুজ ঘাসের নিচে মুখ ডুবিয়ে খাবার সংগ্রহ করে খাচ্ছে। বিভিন্ন প্রজাতির পাখিও কখনও গাছের ডালে কখনও লেকের পানিতে আবার কখনও হাঁটার রাস্তায় বসে বিশ্রাম নিচ্ছে।
Advertisement
স্বাভাবিক সময়ে উদ্যানে এমন দৃশ্য কল্পনাও করা যায় না। কাকডাকা ভোর থেকে সন্ধ্যা অবধি হাজার হাজার মানুষের পদচারণা ও হইচই-হট্টগোলের কারণে গাছে গাছে পাখিদের কদাচিৎ দেখা মেলে। গাছে ফুল ফুটলেও নিরাপত্তারক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে অধিকাংশ সময়ই সেগুলো কেউ না কেউ নিয়ে যায়।
মানুষের উপস্থিতির কারণে কদাচিৎ কাঠবিড়ালীর দেখা মেলে। কিন্তু বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কারণে মানুষজনের উপস্থিতি প্রায় না থাকায় কাঠবিড়ালীরা মনের আনন্দে ঘুরে বেড়ায়। তাই উপস্থিত অনেকেই বললেন, করোনা অনেক কিছু কেড়ে নিলেও প্রকৃতিকে ফিরিয়ে দিয়েছে তার স্বরূপ।
এমইউ/বিএ/জেআইএম
Advertisement