জাতীয়

করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা দেড় হাজার ছাড়াল

দেশে মহামারি করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৮ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মোট মারা গেলেন এক হাজার ৫০২ জন। একই সময়ে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরও তিন হাজার ৪৮০ জনের দেহে। ফলে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল এক লাখ ১৫ হাজার ৭৮৬ জনে।

Advertisement

সোমবার (২২ জুন) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানান অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

দেশজুড়ে ৬২টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে বুলেটিনে বলা হয়, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৬ হাজার ২৮৭টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ১৫ হাজার ৫৫৫টি। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো ছয় লাখ ২৭ হাজার ৭১৯টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরও তিন হাজার ৪৮০ জনের মধ্যে। ফলে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল এক লাখ ১৫ হাজার ৭৮৬ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ৩৮ জন। এ নিয়ে মোট মারা গেলেন এক হাজার ৫০২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও এক হাজার ৬৭৮ জন। সব মিলিয়ে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা এখন ৪৬ হাজার ৭৫৫ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছেন তাদের ৩৩ জন পুরুষ ও পাঁচজন নারী। এদের ১৫ জন ঢাকা বিভাগের, ১২ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, চারজন ব‌রিশাল বিভা‌গের, দুজন করে খুলনা, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের এবং একজন সিলেট বিভাগের। এদের মধ্যে ১১ থেকে ২০ বছরের একজন, ২১ থেকে ৩০ বছরের তিনজন, ত্রিশোর্ধ্ব একজন, চল্লিশোর্ধ্ব তিনজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ১৬ জন, ষাটোর্ধ্ব ১০ জন, সত্তরোর্ধ্ব তিনজন এবং ৮০ বছরের বেশি বয়সী একজন মারা গেছেন। হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে ২৫ জনের, বাসায় ১২ জনের এবং হাসপাতালে আনার পর একজনকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

Advertisement

গত রোববারের (২১ জুন) বুলেটিনে জানানো হয়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। ১৫ হাজার ৫৮৫টি নমুনা পরীক্ষায় করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরও তিন হাজার ৫৩১ জনের মধ্যে। সে হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু এবং রোগী শনাক্ত- উভয় সংখ্যাই কমেছে। দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড আছে ৫৩ জনের। সে তথ্য জানানো হয় ১৬ জুনের বুলেটিনে। আর সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড আছে চার হাজার আট জনের। এ তথ্য জানানো হয় ১৭ জুনের বুলেটিনে।

সোমবারের বুলেটিনে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় রোগী শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৩৭ শতাংশ। এ পর্যন্ত রোগী শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৪০ দশমিক ৩৮ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩০ শতাংশ।

গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ৬১৮ জনকে এবং এ পর্যন্ত আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে ২০ হাজার ৪৩২ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৩৪১ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন সাত হাজার ৯৬৫ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন ১২ হাজার ৪৬৭ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে দুই হাজার ৬৬৩ জনকে, এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে তিন লাখ ৪৩ হাজার ২৪৬ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন এক হাজার ৯৭২ জন, এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইন থেকে মোট ছাড় পেয়েছেন দুই লাখ ৭৮ হাজার ৩৫০ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৬৩ হাজার ৮৯৬ জন।

Advertisement

দেশে কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে।

ডা. নাসিমা সুলতানা বরাবরের মতো করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান বুলেটিনে।

গোটা বিশ্ব এখন করোনাভাইরাসের ছোবলে বিপর্যস্ত। গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে ছড়ানোর পর এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৯০ লাখ ৬০ হাজার ছাড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা চার লাখ ৭১ হাজার প্রায়। তবে সাড়ে ৪৮ লাখের মতো রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন। গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয় করোনাভাইরাস।

এমইউ/এইচএ/জেআইএম