আন্তর্জাতিক

দখলে নিতে গালওয়ান নদীর গতিপথ বদলে দিয়েছে চীন

সম্প্রতি গালওয়ান উপত্যকায় চীন ও ভারতের সেনাদের যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল সেই বিতর্কিত অঞ্চলটিকে সম্পূর্ণ নিজেদের বলে দাবি করেছে বেইজিং। চীন বলছে, ওই অঞ্চল পুরোপুরি তাদের ভূখণ্ডের মধ্যে পড়ে। তবে চীনের এই দাবিকে নাকচ করে দিয়ে ভারত সরকার বলেছে, গালওয়ান উপত্যকার ওপর চীনের দাবি অগ্রহণযোগ্য।

Advertisement

এ পরিস্থিতির মধ্যে এবার একটি স্যাটেলাইট ইমেজ প্রকাশ্যে এসেছে। ওই ছবি বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিজেদের দাবি করার জন্য গালওয়ান নদীর স্রোত অন্যদিকে ঘুরিয়ে নিয়েছে চীন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১০ সালের ছবিতে দেখা গেছে গালওয়ান উপত্যকায় কোনো রাস্তা ছিল না। ২০১৫ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে ধীরে ধীরে রাস্তা নির্মাণ করতে শুরু করে চীন। আর স্যাটেলাইট ইমেজে দেখা যাচ্ছে, সেখানে চীনের কোনো সেনা নেই। শুধু একটা ছোট ঘর রয়েছে। ২০২০ সালের এপ্রিলে ওই এলাকায় সেনা প্রবেশ করাতে থাকে চীন। নদীর ধারে ধরে ঘাঁটি তৈরি করছে চীনের সেনাবাহিনী।

অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল বিনায়ক ভাট বলেন, চীন যখন বুঝতে পারল যে নদীর ধারে বেশি সেনা মোতায়েন করা যাচ্ছে না, তখন দেশটির ইঞ্জিনিয়াররা ড্রেজার দিয়ে নদীর স্রোত ঘোরাতে শুরু করে।

Advertisement

ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের ইঞ্জিনিয়াররা চেষ্টা করছেন যাতে নদী আরও গভীর করা যায়। ফলে এটির চওড়া অংশ কমে আসবে ও নদীর ধারে আরও বেশি সেনা মোতায়েন করা সম্ভব হবে। ইতোমধ্যে গালওয়ানে ২৫ মাইল পর্যন্ত চীনের সেনা প্রবেশ করেছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এনডিটিভির হাতে যে ছবি এসেছে তাতে দেখা গেছে, বিরোধপূর্ণ ভারত-চীন সীমান্ত প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলএসি ওপারে নিজেদের প্রান্তে কাজ চালাচ্ছে চীনা সেনা। নদীর পানি নীল হলেও কিছু অংশে কাদা রয়েছে, সেখানেই কাজ চালাচ্ছে তারা। স্যাটেলাইট ইমেজ বলছে, এটা স্পষ্ট যে সেখানো কোনো নির্মাণ কাজ চলছে।

সেক্ষেত্রে গালওয়ান উপত্যকার এলএসি থেকে ২ কিলোমিটার দূরে ভারতীয় ক্যাম্প দেখা গেলেও, চীনারা যে নদীর ওপর বোল্ডার ফেলছে তা জানা যাচ্ছে। যে অংশে ভারতীয় সেনাদের গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে, সেই অংশ পুরোপুরি শুকনা। গত ২৯ মে থেকে এই কাজ চালাচ্ছে চীনা সেনা। এই তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে এনডিটিভি ভারতে অবস্থিত চীনা দূতাবাসে এই ছবি ও প্রতিবেদন নিয়ে যাওয়া হয়। তবে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

৪৫ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম গত ১৫ জুন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে গালওয়ান উপত্যকায়। এই সংঘর্ষে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ২০ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন প্রায় অর্ধশতাধিক। একাধিক চীনা সেনাসদস্যও হতাহত হয়েছেন বলে ভারতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। যদিও এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কিছু বলেনি চীন।

Advertisement

এমএসএইচ