বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণের প্রথম থেকেই সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে কাজ করে আসছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. বায়েজীদুর রহমান। করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের দিন-রাত সেবা ও দেখভাল করতে গিয়ে নিজেই আক্রান্ত হয়েছেন প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে।
Advertisement
সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. বায়েজীদুর রহমান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড অ্যানালাইসিস বিভাগে কর্মরত আছেন। বর্তমানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। বায়েজীদুর রহমান রাজারবাগ সংলগ্ন ট্রাফিক পূর্ব বিভাগের ব্যারাকে রূপান্তরিত অস্থায়ী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পুলিশ সদস্যদের দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন।
একক পেশা হিসেবে পুলিশের সর্বাধিক সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত সদস্যরা কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল এবং হাসপাতালের অধীনে বিভিন্ন রূপান্তরিত অস্থায়ী হাসপাতালে চিকৎসাধীন রয়েছেন। ইতোমধ্যে এই বাহিনীর প্রায় আট সহস্রাধিক সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে গিয়ে শাহাদাতবরণ করেছেন ২৬ জন দেশপ্রেমিক বীর পুলিশ সদস্য।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের সাথে ঈদ উদযাপনে দেয়া তার একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়। সেদিন তিনি সাধারণ মানুষের কাছে অকুতোভয় পুলিশ অফিসার হিসেবে নিজের পরিচিতি লাভ করেছিলেন।
Advertisement
ট্রাফিক ব্যারাকের অস্থায়ী হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় আইজিপির নির্দেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার শর্তসমূহ প্রতিপালন সাপেক্ষে ২৪ ঘণ্টা ডাক্তার এবং নার্সদের নিয়ে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করেছেন ওই কর্মকর্তা। সেই সাথে পুলিশ হাসপাতাল থেকে বিনামূল্যে সব ধরনের ওষুধ সরবরাহসহ রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স থেকে তিন বেলা পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ করতেন।
তার সার্বিক তদারকিতে সুস্থ হয়ে উঠছিলেন একের পর এক পুলিশ সদস্যরা। কিন্তু বিধিবাম এবার নিজেই সামিল হলেন তাদের দলে, তিনি নিজেই এখন করোনা আক্রান্ত।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে করোনা আক্রান্ত বায়েজীদুর রহমান রোববার দুপুরে জাগো নিউজকে বলেন, ঊর্ধ্বতনদের নির্দেশনায় এই ক্রান্তিকালে আক্রান্ত সহকর্মীদের পাশে থাকতে পারাটা এক ধরনের সৌভাগ্যও বটে। অনুমিত ছিল আমি নিজেও আক্রান্ত হতে পারি। সেটা ভেবেই এগিয়েছি।
গত ৯ জুন করোনা পরীক্ষায় পজিটিভ আসে তার। এরপর বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি। টেলিফোনে চিকিৎসকদের সাথে যোগাযোগ হচ্ছে। এখন অনেকটা ভালোর দিকে। আগামী ২৩ জুন করোনার পরীক্ষায় নেগেটিভ এলে আবারও সহকর্মীদের সুস্থতার লড়াইয়ে দায়িত্ব পালনে ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
Advertisement
জেইউ/বিএ/এমএস