আইন-আদালত

ভার্চুয়াল কোর্টে ২৫ দিনে ৩৯২০২ জনের জামিন

করোনার প্রাদুর্ভাবে দেশের অধস্তন আদালতগুলোতে গত ১১ মে থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত মোট ২৫ কার্যদিবসে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে ৭৩ হাজার ১১৬ টি জামিন আবেদন নিষ্পত্তি করে ৩৯ হাজার ২০২ জনের জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দিয়েছেন আদালত।

Advertisement

শনিবার (২০ জুন) সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ও স্পেশাল অফিসার ব্যারিস্টার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান।

বিবৃতিতে জানানো হয়, গত ১৪ থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত সারাদেশে অধস্তন আদালতে ভার্চুয়াল শুনানিতে ১২ হাজার ৬৯৭টি জামিন-আবেদন নিষ্পত্তি করে ৬ হাজার ৪৭ জন আসামির জামিন মঞ্জুর করা হয়।

এ ছাড়া ১১ মে থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত মোট ২৫ কার্যদিবসে সারাদেশের অধস্তন আদালতে ভার্চুয়াল শুনানিতে মোট ৭৩ হাজার ১১৬ টি জামিন-দরখাস্ত নিষ্পত্তি করে ৩৯ হাজার ২০২ জন আসামির জামিন মঞ্জুর করা হয়।

Advertisement

আর গত ১৮ জুন পর্যন্ত মোট ২৫ কার্যদিবসে ভার্চুয়াল আদালতের মাধ্যমে মোট জামিন প্রাপ্ত শিশুর সংখ্যা ৫৩৬ জন। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত ৪৭১ জন শিশুকে তাদের আভিভাবকের নিকট বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে বলেও বিবৃতিতে জানানো হয়।

প্রসঙ্গত, গত ১০ মে নিম্ন আদালতের ভার্চুয়াল কোর্টে শুধু জামিন শুনানি করতে নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। সে নির্দেশ অনুসারে জামিন আবেদন ও এ সংক্রান্ত দরখাস্তের শুনানি নিয়ে অধস্তন আদালতে জামিন আবেদনের শুনানি ও নিষ্পত্তি শুরু হয়।

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতে সাধারণ ছুটিতে আদালত বন্ধ রেখে গত ২৬ এপ্রিল ভার্চুয়াল কোর্ট চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়। এ জন্য সুপ্রিম কোর্টের রুলস কমিটি পুনরায় গঠন এবং ভার্চুয়াল কোর্ট চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় আইনগত প্রতিবন্ধকতা দূর করতে পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

ওইদিন প্রথমবারের ভিডিও কনফারেন্সে প্রধান বিচারপতির সভাপতিত্বে ফুলকোর্ট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কনফারেন্সে সংযুক্ত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের ৮৮ জন বিচারপতি। এ অবস্থায় গত ৭ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভপতিত্বে গণভবনে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ ২০২০’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়।

Advertisement

এর ২ দিন পর ৯ মে ভার্চুয়াল কোর্ট সম্পর্কিত অধ্যাদেশ জারি করা হয়। অধাদেশে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বা ক্ষেত্রমত হাইকোর্ট বিভাগ, সময় সময়, প্র্যাকটিস নির্দেশনা (বিশেষ বা সাধারণ) জারি করতে পারবে।

অধ্যাদেশে আরও বলা হয়, ফৌজদারি কার্যবিধি বা দেওয়ানি কার্যবিধি বা আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে ভিন্নতর যাই থাকুক না কেন, যেকোনো আদালত এ অধ্যাদেশের ধারা ৫ এর অধীন জারি করা প্র্যাকটিস নির্দেশনা (বিশেষ বা সাধারণ) সাপেক্ষে, অডিও-ভিডিও বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে বিচারপ্রার্থী পক্ষরা বা তাদের আইনজীবী বা সংশ্লিষ্ট অন্য ব্যক্তি বা সাক্ষীদের ভার্চুয়াল উপস্থিতি নিশ্চিত করে যেকোনো মামলার বিচার বা বিচারিক অনুসন্ধান বা দরখাস্ত বা আপিল শুনানি বা সাক্ষ্যগ্রহণ বা যুক্ততর্ক গ্রহণ বা আদেশ বা রায় দিতে পারবে।’

'অডিও-ভিডিও বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে বিচারপ্রার্থী পক্ষ বা তাদের আইনজীবী বা সংশ্লিষ্ট অন্য ব্যক্তি বা সাক্ষীদের ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতি নিশ্চিত করা ছাড়া অন্যান্য বিষয়ের ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধি বা ক্ষেত্রমতে দেওয়ানি কার্যবিধি অনুসরণ করতে হবে।'

'কোনো ব্যক্তির ভার্চুয়াল উপস্থিতি নিশ্চিত করা হলে ফৌজদারি কার্যবিধি বা দেওয়ানি কার্যবিধি বা অন্য কোনো আইনের অধীন আদালতে তার সশরীরে উপস্থিতির বাধ্যবাধকতা শর্ত পূরণ হয়েছে বলে গণ্য হবে।'

এফএইচ/জেডএ/এমকেএইচ