ডিএনডির মেগা প্রকল্পের কাজে যে ৫টি পাম্প হাউজ বসানো হচ্ছে সেগুলোর দুটি পাম্প উদ্বোধন করা হয়েছে। জলাবদ্ধ ডিএনডিবাসীর দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে অস্থায়ী ভিত্তিতে সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইলস্থ বড় ওই পাম্প হাউজের দুটি পাম্প শুক্রবার বিকেলে উদ্বোধন করেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংদস সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান।
Advertisement
নতুন করে উদ্বোধন করা পাম্প দুটি ৪০০ কিউসেক পানি নিষ্কাশন করতে সক্ষম। এসময় ১৯ ইসিবি’র প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল মাশফিকুল আলম, প্রকল্পের ইঞ্জিনিয়ার্স মেজর কাজী মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ মো. মজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক হাজি ইয়াছিন মিয়া, নাসিক কাউন্সিলর ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক আরিফুল হক হাছান, নাসিক কাউন্সিলর শাহজালাল বাদল এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তার উপস্থিত ছিলেন।
পাম্প হাউজ উদ্বোধনের সময় উপস্থিত সাংবাদিক ও ডিএনডিবাসীর কাছে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জলাবদ্ধতা নিরসনের আশ্বাস দেন প্রভাবশালী এ রাজনীতিবিদ।
শামীম ওসমান জানান, নতুন দুটি পাম্প চালু হলে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ডিএনডির পানি নিষ্কাশন হয়ে যাবে। ডিএনডি জলাবদ্ধতার ছবি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ডিএনডির পরিপূর্ণ কাজটি করতে হলে আরও বেশ কিছু টাকার প্রয়োজন।
Advertisement
যদিও করোনাকে মোকাবেলা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যেই জিডিপির ৩ দশমিক ৬ ভাগ অনুদান দিয়ে দিয়েছেন। তারপরও আমি আশা করি, আল্লাহর হুকুমে আগামী ২৫ তারিখের মিটিংয়ে আমাদের ডিএনডির প্রকল্প সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজনীয় টাকা জাতির জনকের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আল্লাহ সুস্থ রাখলে আমরা পেয়ে যাব এবং এ কাজ সম্পন্ন হবে।
এসময় ১৯ ইসিবি’র প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল মাশফিকুল আলম বলেন, আমরা পরিকল্পনা করেছিলাম এ বছর বর্ষায় আমরা পাম্পগুলো চালু করবো। সেই প্রেক্ষিতে আমরা আমাদের কাজ করে যাচ্ছিলাম। কিন্তু মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে লোকবল সমস্যার কারণে আমরা কাজ করতে পারিনি।
তিনি বলেন, কয়েকদিন পূর্বে যখন মুষলধারে বৃষ্টিপাত শুরু হলো স্থানীয় সংসদ সদস্যের দিকনির্দেশনায় আমরা এলাকা ঘুরে দেখলাম অনেক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এর কারণে গতকাল সারারাত আমরা কাজ করেছি। তাই অস্থায়ীভাবে আমরা ৪০০ কিউসেক ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি পাম্প চালু করার ব্যবস্থা করেছি। এ পাম্প চালুর ফলে আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ডিএনডির ২০ লাখ লোকের দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতার সমস্যা সমাধান হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৬২-৬৮ সালে ৮ হাজার ৩৪০ হেক্টর জমি নিয়ে তৈরি করা হয় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) বাঁধ। যার মধ্যে নারায়গঞ্জ-৪, ঢাকা-৪ ও ঢাকা-৫ আসনের ঢাকার ডেমরা, যাত্রাবাড়ী, কদমতলী, শ্যামপুর, নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লা থানা এলাকা রয়েছে।
Advertisement
১৯৮৮ ও ১৯৯৮ সালের বন্যায় ডিএনডিতে পানি প্রবেশ না করায় মানুষ ডিএনডিতে বাড়ি-ঘর, স্কুল-কলেজ, শিল্প প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করতে থাকে। এতে করে অল্প বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতে থাকে ডিএনডিতে। ইতোপূর্বেও একাধিকবার ডিএনডিতে কৃত্রিম বন্যার সৃষ্টি হয়েছিল। গত এপ্রিল মাস থেকে ফের ডিএনডিতে শুরু হয় জলাবদ্ধতা, যা এখন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।
এদিকে ডিএনডির অনেক স্থানে প্রভাবশালীরা মাছ চাষের জন্য বিভিন্ন স্থানে পানি আটকে রেখেছে। এতে ডিএনডিবাসীর দুর্ভোগ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে উল্লেখ করে এলাকাবাসী।
এমএএস/পিআর