বিভিন্ন মহলের সমালোচনার মধ্যে কর্মীদের বেতন কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড (এআইবিএল)। ৪০ হাজার টাকার উপরে বেতন পান এমন কর্মকর্তাদের বিভিন্ন স্তরে মোট (গ্রোস) বেতনের ওপর ১০ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়েছে ব্যাংকটি।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) ভার্চুয়াল বোর্ড মিটিংয়ে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে। ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সম্প্রতি একই রকম সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবি ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও সিটি ব্যাংক।
পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কয়েকটি ভাগে ভাগ করে বেতন কমিয়েছে এআইবিএল। এর মধ্যে সব মিলিয়ে যারা ৪০ হাজার টাকার বেশি বেতন পান, এমন কর্মীদের বেতন কমানো হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ভাগে ৪০ হাজার টাকার উপরে কিন্তু এক লাখ টাকার নিচে যাদের বেতন তাদের ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমবে। এক লাখ থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত কমবে ১৫ শতাংশ। যারা দুই লাখ বেতন পান তাদের কমবে ২০ শতাংশ। ব্যাংকের ডিএমডিদের কমছে ২৫ শতাংশ। ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) বেতন ৪০ শতাংশ কমিয়ে আট লাখ টাকা করা হয়েছে। করোনায় অর্থনৈতিক মন্দার প্রেক্ষিতে কর্মী ছাঁটাই না করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকটি।
চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এ নিয়ম কার্যকর থাকবে বলে জানা গেছে। এ সময় ইনসেনটিভ, বোনাস ও ইনক্রিমেন্টও দেয়া হবে না। নতুন শাখা খোলাও বন্ধ থাকবে। সব প্রকার স্থায়ী সম্পদ ক্রয় এবং কর্মীদের বিদেশে প্রশিক্ষণও বন্ধ থাকবে। এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার আলোকে করোনা সংক্রান্ত সিএসআর ও শিক্ষাবৃত্তি কার্যক্রম ছাড়া অন্যসব খরচ বন্ধ থাকবে।
Advertisement
এর আগে সম্প্রতি ব্যাংক কর্মীদের বেতন-ভাতা ১৫ শতাংশ কমানো, পদোন্নতি, ইনক্রিমেন্ট, ইনসেনসিভ বোনাস বন্ধ করাসহ ১৩ দফা সুপারিশ করে দেশের সব বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও চেয়ারম্যানের কাছে চিঠি দেয় বেসরকারি ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (বিএবি)। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ব্যাংকে ব্যাংকে কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন মহলে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। এমন পরিস্থিতিতে বেতন-ভাতা কমানোর সুপারিশ থেকে সরে আসে বিএবি।
কিন্তু বিএবি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের মালিকাধীন এক্সিম ব্যাংকের কর্মীদের বেতন ঠিকই কমানো হয়েছে। চলমান সংকটে ব্যাংক বাঁচাতেই এ সিদ্ধান্ত নেয় হয়েছে। দেশের আর্থসামাজিক পরিস্থিতিতে ব্যাংকারদের বেতন-কাঠামো এমনিতেই বেশি ছিল। ১৫ শতাংশ বেতন কমালে ব্যাংকারদের কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয় বলে মনে করছে ব্যাংটির পরিচালনা পর্ষদ।
এর আগে করোনার প্রাদুর্ভাবে আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কর্মীদের ১৬ শতাংশ বেতন-ভাতা কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় বেসরকারি খাতের সিটি ব্যাংক লিমিটেড। এতে কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
এদিকে গত মাস থেকেই বেসরকারি এবি ব্যাংক এন্ট্রি লেভেল থেকে এমডি পর্যন্ত ৩ ও ৫ শতাংশ হারে বেতন-ভাতা কর্তন শুরু করেছে।
Advertisement
এসআই/এএইচ/জেআইএম