খুলনা মহানগরীর গল্লামারীর রাইসা ক্লিনিকের মালিক ডা. আব্দুর রকিব খান হত্যার প্রতিবাদে চিকিৎসকদের চলমান কর্মবিরতি ৭২ ঘণ্টার জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
Advertisement
এরই মধ্যে ডা. আব্দুর রকিব খান হত্যা মামলায় এক আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। অন্য আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুন ) দুপুর ২টায় খুলনা প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে চলমান কর্মবিরতি ৭২ ঘণ্টার জন্য স্থগিত করা হয়।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) খুলনার সভাপতি ও সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম কর্মবিরতি স্থগিতের ঘোষণা দেন।
Advertisement
তিনি বলেন, রোগীদের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে চিকিৎসকদের কর্মবিরতি ৭২ ঘণ্টার জন্য স্থগিত করা হয়েছে। তবে ডা. রকিব হত্যা মামলার সব আসামিকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার ও সদর থানার ওসিকে প্রত্যাহার করতে হবে। তা না হলে পরবর্তীতে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
ডা. রকিব খান হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের এসআই বিএম মনিরুজ্জামান বলেন, ডা. রকিব খান হত্যা মালার আসামি খাদিজা এ ঘটনায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তিনি বলেণ, বৃহস্পতিবার খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহীদুল ইসলাম এ জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন। অপর আসামি আব্দুর রহিমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে তার তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
এর আগে খুলনায় চিকিৎসককে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় এজাহারভুক্ত তিন আসামিসহ চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বুধবার রাতে গাজীপুরের টঙ্গী ও খুলনার রূপসা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয় বলে খুলনা সদর থানার ওসি আসলাম বাহার বুলবুল জানিয়েছেন।
গ্রেফতাররা হলেন- জমির, আবুল আলী, গোলাম মোস্তফা ও খাদিজা। চিকিৎসক হত্যার ঘটনায় খুলনায় সব সরকারি-বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালে চিকিৎসকদের কর্মবিরতি চলে। রাইসা ক্লিনিকের পরিচালক ডা. মো. আব্দুর রকিব খানকে হত্যার ঘটনায় সব আসামি গ্রেফতারসহ বেশকিছু দাবিতে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) ডাকে এ কর্মবিরতি পালিত হয়। তবে এর আওতার বাইরে রয়েছে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ও করোনা হাসপাতাল।
Advertisement
উল্লেখ্য, নগরীর মোহাম্মদ নগরের পল্লবী সড়কের বাসিন্দা আবুল আলীর স্ত্রী শিউলী বেগমকে ১৪ জুন সিজারের জন্য রাইসা ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। ওই দিন বিকেল ৫টায় অপারেশন হয়। বাচ্চা ও মা প্রথমে সুস্থ ছিলেন। পরে রোগীর রক্তক্ষরণ হলে ১৫ জুন সকালে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানকার চিকিৎসকরাও রোগীর রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে না পেরে ঢাকায় রেফার্ড করেন। ঢাকায় নেয়ার পথে ১৫ জুন রাতে শিউলী বেগম মারা যান।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ১৫ জুন রাতেই এ ঘটনায় সম্ভাব্য হামলাকারী রোগীর স্বজন কুদ্দুস, আরিফ, সবুরসহ কয়েকজন নারী রাইসা ক্লিনিকের পরিচালক ডা. রকিবকে লাথি, ঘুষি ও লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। এতে তার মাথার পেছনে জখম হয়। তাকে প্রথমে গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে শেখ আবু নাসের হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৬ জুন তার মৃত্যু হয়।
আলমগীর হান্নান/এএম/এমকেএইচ