প্রবাস

কানেকটিকাটের ম্যানচেস্টারে সাধু আন্তনীর তীর্থোৎসব

প্রতি বছরের মতো এবারও যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের কাছে পরম আরাধ্য ব্যক্তিত্ব সাধু আন্তনীর তীর্থোৎসব পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে। নয়দিন নভেনা প্রার্থনার পর সম্প্রতি সন্ধ্যায় ম্যানচেস্টার প্রবাসী খ্রীষ্টভক্ত মীরা ও সুধীর পালমার বাসভবনে অনুষ্ঠিত হয়।

Advertisement

২০০৮ সাল থেকে খ্রীষ্টভক্ত মীরা ও সুধীর পালমার ব্যক্তিগত উদ্যোগে এবং কানেকটিকাটে বসবাসরত সকল খ্রীষ্টভক্তদের সহযোগিতায় সার্বজনীনভাবে মহান সাধু আন্তনীর তীর্থোৎসব পর্ব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। অনুষ্ঠানে সাধু আন্তনীর মধ্যস্ততায় সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের পদতলে সমবেতভাবে প্রার্থনা নিবেদন করা হয়। ধর্মীয় ভাবগাম্ভির্যের মধ্য দিয়ে বরিশাল ডায়োসিস-এর বিশপ লরেন্স সুব্রত হাওলাদার সিএসসি-এর পরিচালনায় খ্রীষ্টযাগ প্রার্থনায় অংশ নেন উপস্থিত সকল খ্রীষ্টভক্ত।

খ্রীষ্টযাগে সংগৃহীত অর্থ বাংলাদেশের আর্তমানবতার সেবায় ব্যয় করা হবে বলে আয়োজকরা জানান। খ্রীষ্টভক্তরা মনে করেন সাধু আন্তনীর মধ্যস্ততায় প্রাথর্না করলে মনকামনা পূরণ হয় এবং অসুস্থ ব্যক্তি সুস্থতা লাভ করেন।

খ্রীষ্ট সম্প্রদায়ের মতে, মহান সাধু আন্তনীর জীবনে তিনি পিতা ঈশ্বরের দেয়া সদ্গুণ মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করেছেন। তিনি মাত্র ১৭ বৎসর বয়স থেকে ঈশ্বরের কাজে নিবেদিত হয়েছিলেন এবং আমৃত্যু ঈশ্বরের রাজ্য বিস্তারে কাজ করেছেন। তিনি প্রায় একযুগ ধরে যারা ঈশ্বরের প্রতি, তার একমাত্র পুত্র প্রভু যীশু খ্রিষ্টের প্রতি এবং মা মারীয়ার প্রতি যাদের বিশ্বাস ছিল না তাদের বিশ্বাসকে দৃঢ় করেছেন বক্তিমা দিয়ে। তিনি তার জিহ্বা ব্যবহার করে খ্রীষ্ট ধর্মের প্রচার করেছেন। তার মনোমুগ্ধকর কথা শোনার জন্য দূর দূরান্ত থেকে মানুষ আসতো তার কাছে।

Advertisement

মহান সাধু আন্তনী প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মতো অনেক আশ্চর্য কাজ করেছেন যা তার জীবদ্দশায় তাকে করেছে মহান। তার জীবনের অনেক ঘটনা আমরা বিভিন্ন পুস্তিকা পড়ে জানতে পেরেছি এবং আজও কোনো দ্রব্য হারিয়ে গেলে সাধু আন্তনীর কাছে প্রার্থনা করলে তা পাওয়া যায় বলে ভক্তদের বিশ্বাস। তার মৃত্যুর এতো বৎসর পরও সাধু আন্তনীর নিকট প্রার্থনা করলে ফল পাওয়া যায়।

সাধু আন্তনী অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী আধ্যাত্মিক পুরুষ ছিলেন। তিনি দুরারোগ্য ব্যাধিগ্রস্তকে ছুঁয়ে দিলে রোগী সুস্থ হয়ে উঠত। সাধু আন্তনী ১১৯৫ খ্রিস্টাব্দে ইউরোপে (বর্তমান পর্তুগাল) জন্মগ্রহণ করেন। তার কর্মজীবন কাটে ইতালির পাদুয়ায়। সাধুর অনুসারীরা বিশ্বাস করেন তার সঙ্গে শিশু যিশুর সাক্ষাৎ ঘটেছিল। এর মধ্য দিয়ে সাধু আন্তনী অলৌকিক ক্ষমতা অর্জন করেন।

তার অনুসারীদের মতে, সাধু আন্তনীর নাম মুখে নিলে অন্তরে ভক্তিভাবের জন্ম নেয় এবং হারানো জিনিস ফিরে পাওয়ার জন্য সাধু আন্তনীর কাছে প্রার্থনা করলে সুফল পাওয়া যায়। মাত্র ৩৯ বছর বয়সে ক্ষণজন্মা এ মহাপুরুষ ইহলোক ত্যাগ করেন। কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যের ম্যানচেস্টারসহ পার্শ্ববর্তী বেশ কয়েকটি শহরের প্রচুর সংখ্যক খ্রীষ্টভক্ত উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও পরদিন ১৩ জুন সন্ধ্যায় জুম ভার্চুয়াল সভায় কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া, ম্যারিল্যান্ড ও কানেকটিকাটে বাসবাসরত প্রবাসী খ্রীষ্টভক্তরা অংশ নেন।

Advertisement

এমআরএম/এমকেএইচ