দেশজুড়ে

বরিশালে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হাজার ছাড়াল

বরিশালে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৬০ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৫৭ জনে। এ জেলায় করোনায় মারা গেছেন ১৪ জন।

Advertisement

অন্যদিকে করোনার উপসর্গ নিয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ৬২ জন। মারা যাওয়া ওই রোগীদের বাড়ি বিভাগের বিভিন্ন জেলায়। তাদের মধ্যে ২০ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন।

বরিশাল জেলা প্রশাসনের মিডিয়া সেল সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় উজিরপুর উপজেলার ৩ জন, মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলায় ৩ জন পুলিশ সদস্যসহ ৪ জন ও বাবুগঞ্জ, গৌরনদী, বানারীপাড়া ও বাকেরগঞ্জ প্রত্যেক উপজেলার ১ জন করে মোট ৪ জন, র‌্যাব-৮ এ কর্মরত ৪ জন, বিভিন্ন ব্যাংকে কর্মরত ৬ জন, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ৫ জন সদস্য, জেলা পুলিশের ১ জন, আরআরএফে কর্মরত ২ জন, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত ৬ জন নার্স, ৪ জন স্টাফ ও ১ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্টসহ ১১ জন, বরিশাল সিটি করপোরেশনের বগুড়া রোড এলাকার ৩ জন, ভাটিখানা, বাংলাবাজার, বটতলা প্রত্যেক এলাকার ২ জন করে মোট ৬ জন, নবগ্রাম রোড, সাগরদী, সদর রোড, রূপাতলী, কাউনিয়া, সিঅ্যান্ডবি রোড, বজলু কমিশনার গলি, আলেকান্দা, কাশিপুর, ফজলুল হক এভিনিউ, করিম কুটির প্রত্যেক এলাকায় ১ জন করে মোট ১১ জনসহ মোট ৬০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ১৩ বছরের শিশু এবং ৬৫ বছর বয়সী রোগী রয়েছেন।

মিডিয়া সেল সূত্রে আরও জানা গেছে, এ পর্যন্ত বরিশাল জেলায় ২৭৬ জন নারী এবং ৭৮১ জন পুরুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে শূন্য থেকে ২০ বছর বয়স পর্যন্ত আক্রান্ত ৫৬ জন, ২০ থেকে ৫০ বছর পর্যন্ত আক্রান্ত ৮০৯ জন, ৫০ থেকে তার ঊর্ধ্বে ১৯০ জন।

Advertisement

এলাকা ভিত্তিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বরিশাল মহানগরীর ৮৩৩ জন, সদর উপজেলার ১৭ জন (রায়পাশা কড়াপুর, শায়েস্তাবাদ-৩, টুংঙ্গীবাড়িয়া, চাঁদপুরা, জাগুয়া-৪, চরকাউয়া-৪, চরমোনাই-৩), বাবুগঞ্জ উপজেলায় ৩৭ জন, উজিরপুর উপজেলায় ৩৮ জন, বাকেরগঞ্জ উপজেলায় ৩০ জন, মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলায় ২২ জন, মুলাদী উপজেলায় ১৭ জন, গৌরনদী উপজেলায় ২১ জন, বানারীপাড়ার ২২ জন, আগৈলঝাড়ার ১২ জন এবং হিজলার ৮ জনসহ মোট ১০৫৭ জন। গত ১২ এপ্রিল এ জেলায় প্রথম মেহেন্দীগঞ্জ ও বাকেরগঞ্জ উপজেলায় ২ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ১৭৭ জন ।

বরিশাল জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান জানান, রিপোর্ট পাওয়ার পরপরই গত ২৪ ঘণ্টায় ৬০ জন ব্যক্তির অবস্থান অনুযায়ী তাদের আবাসস্থল লকডাউন করা হয়েছে। তাদের আশপাশের বসবাসের অবস্থান নিশ্চিত করে লকডাউন করার প্রক্রিয়া চলছে। পাশাপাশি আক্রান্তরা কোন কোন স্থানে যাতায়াত ও কার কার সংস্পর্শে এসেছিলেন তা চিহ্নিত করার কাজ চলছে।

এদিকে বুধবার দিনগত রাত ১টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ৯০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। তার বাড়ি পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলায় বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এসএম বাকির হোসেন বলেন, করোনার উপসর্গ নিয়ে ওই ব্যক্তিকে বুধবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন তার স্বজনরা। ভর্তির সময় তার অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। পরে রাত ১টার দিকে তার মৃত্যু হয়। ওই রোগী করোনায় আক্রান্ত ছিলেন কিনা তা জানতে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য মেডিকেল কলেজের ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।

Advertisement

সাইফ আমীন/বিএ