উলুধ্বনি, ভক্তদের উপচেপড়া ভিড় আর ঢাকের বাদ্যে বিসর্জন দেওয়া হল দেবী দুর্গাকে। শেষ হল সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। মর্তলোকে পূজিত হয়ে আবার কৈলাসে স্বামীগৃহে ফিরে গেলেন দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গা।শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকেশ্বরী মন্দিরের নেতৃত্বে ১২৫টি প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয় বুড়িগঙ্গায়। এর আগে বিকেল ৪টায় বিসর্জনের উদ্দেশ্যে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির মেলাঙ্গন থেকে কেন্দ্রীয় বিজয়া শোভাযাত্রা বের হয়। প্রথমে পলাশীর মোড়ে বিভিন্ন পূজামণ্ডপের অধিকাংশই এসে জমা হয়। সেখান থেকে সম্মিলিত বাদ্য-বাজনা, মন্ত্র উচ্চারণ ও পূজা-অর্চনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিজয়ার শোভাযাত্রা। নগরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শাভাযাত্রাটি পুরান ঢাকার সদরঘাটের গিয়ে শেষ হয়।এদিকে প্রতিমা বিসর্জনে সকল প্রকার নিরাপত্তায় সকাল থেকেই সদরঘাটে পুলিশ, আনসারসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কয়েক স্তরের নিরাপত্তা জোড়দার করেন। ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে পুলিশ সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে।ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় সাংবাদিকদের জানান, প্রতিমা বিসর্জন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি নৌ-পুলিশ ও র্যাব সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করেছেন।ঢাকা মহানগর সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটির প্রতিনিধিরা জানান, মূলত ‘দর্পণ বিসর্জনের’ মাধ্যমে আগের দিনই দেবীর শাস্ত্রীয় বিসর্জন সম্পন্ন হয়েছে। মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে প্রতিমা থেকে ঘটে এবং ঘট থেকে আবার ভক্তের হৃদয়ে ‘মাকে’ নিয়ে আসাকে বিসর্জন বলে।গত ১৯ অক্টোবর মহাষষ্ঠী থেকে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতায় সামিল হন এ ধর্মাবলম্বীরা। একে একে মহাসপ্তমী, মহাষ্টমী পেরিয়ে বৃহস্পতিবার মহানবমী ও বিজয়া দশমীতে হিন্দু সম্প্রদায়ের লাখো নারী-পুরুষ নানা আচার-অনুষ্ঠান পালন করেন। বৃহস্পতিবার বিজয়া দশমীতে ‘বিহিত পূজা’ আর ‘দর্পণ বিসর্জনের’ মধ্য দিয়ে ঘটে দুর্গাপূজার শাস্ত্রীয় সমাপ্তি। আর একদিন পর শুক্রবার হল প্রতিমা বিসর্জন।হিন্দু পঞ্জিকা মতে, দেবী দুর্গা এবার ঘোড়ায় চড়ে এসেছেন, গেলেন দোলায় (পালকি) চড়ে। বিসর্জনের আগে শুক্রবার সকাল থেকে ঢাকার মন্দিরে মন্দিরে চলে সিঁদুর খেলা আর আনন্দ উৎসব।এএম/আরএস/আরআইপি
Advertisement