ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার পদ্মা নদীর গোপালপুর ঘাটে ঢাকাগামী এক গৃহবধূকে চার যুবক মিলে গণধর্ষণের পর ভিডিও ধারণ করে চাঁদা দাবি করেছেন। এ ঘটনায় চরভদ্রাসন থানায় মামলা করা হয়েছে। এরই মধ্যে এক ধর্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
Advertisement
জানা যায়, রোববার (১৪ জুন) বেলা ১১টার দিকে ওই গৃহবধূ দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন। গোপালপুর ঘাটের যাত্রী ছাউনিতে অবস্থানকালে চার যুবক তাকে তুলে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। এ সময় ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করেন যুবকরা।
এরপর গত দুইদিন ভিডিও চিত্র ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে গৃহবধূর কাছে ৩০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন ধর্ষকরা। পরে বিষয়টি থানা পুলিশকে জানান গৃহবধূ।
মঙ্গলবার রাতে ধর্ষকদের চাঁদা দেয়ার কথা বলে উপজেলার চরহাজীগঞ্জ বাজার এলাকা থেকে শাহীন মোল্যা (২৫) নামের এক ধর্ষককে গ্রেফতার করে পুলিশ। শাহীন মোল্যা উপজেলার গাজীরটেক ইউনিয়নের রহমান প্রামাণিকের ডাঙ্গী গ্রামের আব্দুস সালাম মোল্যার ছেলে।
Advertisement
নির্যাতিত গৃহবধূর স্বামী জানান, তার বাড়ি সদরপুর উপজেলার ভাষানচর ইউনয়নের নতুন বাজার গ্রামে। তিনি ঢাকার একটি আইস ফাক্টরিতে চাকরি করেন। ঘটনার দিন সকালে দুই শিশুসন্তান নিয়ে গ্রামের বাড়ি থেকে স্বামীর কাছে ঢাকায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন স্ত্রী। এ সময় স্ত্রী-সন্তানদের এগিয়ে নেয়ার জন্য ঢাকা থেকে এসে উপজেলার পদ্মা নদীর চরমৈনট ঘাটে অবস্থান করতে থাকেন স্বামী।
এদিকে, গৃহবধূ সন্তানদের নিয়ে বৃষ্টির মধ্যে উপজেলা পদ্মা নদীর গোপালপুর ঘাটে এসে যাত্রী ছাউনিতে অপেক্ষা করতে থাকেন। এ সময় গৃহবধূকে তুলে নির্জন স্থানে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন যুবকরা। সেই সঙ্গে গণধর্ষণের ভিডিও ধারণ করেন তারা।
গৃহবধূর স্বামী আরও জানান, পদ্মা নদীর অপর প্রান্তে স্ত্রী-সন্তানদের অপেক্ষায় থাকার পর হঠাৎ স্ত্রীর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়ায় সন্দেহ হলে মৈনট ঘাট থেকে পদ্মা পার হয়ে গোপালপুর ঘাটে এসে স্ত্রীকে অসুস্থ অবস্থায় খুঁজে পান।
ঘটনার পর থেকে ধর্ষকরা ভিডিও ভাইরাল করার হুমকি দিয়ে গৃহবধূ ও তার স্বামীর কাছে ৩০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করলে ধর্ষকরা গৃহবধূর স্বামীর মোবাইলে ধর্ষণের ভিডিও পাঠান। মঙ্গলবার গৃহবধূ ও তার স্বামী পুলিশের কাছে সেই ভিডিও জমা দেন। পরে চাঁদার টাকা দেয়ার ফাঁদ পেতে এক ধর্ষককে গ্রেফতার করে পুলিশ।
Advertisement
বুধবার (১৭ জুন) চরভদ্রাসন থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজনীন খানম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চরভদ্রাসন থানার এসআই ইকবাল হোসেন বুধবার দুপুরে জানান, মামলাটির তদন্ত চলছে। পরে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানানো হবে।
এদিকে, গৃহবধূকে গণধর্ষণের বিষয়টি ধামাচাপা দিকে তৎপর রয়েছে একটি মহল। অপরদিকে, ধর্ষকদের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
বি কে সিকদার সজল/এএম/পিআর