দেশজুড়ে

ঠাকুরগাঁওয়ে ঠিকাদারদের টেন্ডার বাতিলের চক্রান্ত

ঠাকুরগাঁও সড়ক ও জনপদ বিভাগের একটি কাজ না পাওয়ায় প্রকৌশলীকে লাঞ্ছিত করার পর এবার টেন্ডার বাতিলের চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে কাজ না পাওয়া ঠিকাদাররা। কাজ না পাওয়া ঠিকাদার গত মঙ্গলবার জেলা সড়ক ও জনপদ বিভাগের অফিস ঘেরাও করে প্রকৌশলীকে লাঞ্ছিত করে। এ সময় তারা অফিসের কাগজপত্র তছনছ করে। আর এবার তারা টেন্ডার বাতিলের কৌশল বেছে নিয়েছে। টেন্ডারটি বাতিল করতে ইতোমধ্যে কিছু ঠিকাদার বিভিন্নস্থানে তদবির শুরু করেছেন।ঠাকুরগাঁয়ের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল ঠাকুরগাঁও-পীরগঞ্জ সরু সড়কটি প্রসস্তকরণের। অবশেষে সেই দাবি বাস্তবায়নের রূপ নিলেও থমকে যেতে বসেছে কিছু ঠিকাদারের ষড়যন্ত্রের কাছে।জানা গেছে, ই-টেন্ডারের মাধ্যমে ঠাকুরগাঁও হতে পীরগঞ্জ পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার করণের জন্য ঠাকুরগাঁও সড়ক ও জনপদ বিভাগ থেকে পাঁচ কোটি ১৮ লাখ ৪৬ হাজার ১৫৮ দশমিক ১৬০ টাকার প্রাক্কলন ধরে টেন্ডার আহ্বান করা হয়। যার আইডি নং ২৯৮৪৫। যথারীতি উক্ত কাজের বিপরীতে ১৪টি সিডিউল বিক্রি হয় এবং টেন্ডার ফেলার শেষদিনে ৯ জন ঠিকাদার সিডিউল ড্রপও করে। এর মধ্যে সঠিকভাবে টেন্ডার দাখিলে ব্যর্থ হওয়ায় পাঁচজন ঠিকাদারের সিডিউল অযোগ্য ঘোষণা করা হয়।পরে দিনাজপুর তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী অফিস ই-টেন্ডারে লটারির মাধ্যমে মো. জামাল হোসেন নামে এক ঠিকাদারকে কাজটি দেওয়া হয়। এ কারণে ঠাকুরগাঁওয়ের কিছু স্বার্থলোভী ঠিকাদার ওই টেন্ডার বাতিলের জন্য উঠে পড়ে লেগে যায় এবং গত মঙ্গলবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও সড়ক ভবন ঘেরাও করে নির্বাহী প্রকৌশলীকে টেন্ডার বাতিলের জন্য চাপ প্রয়োগ করে। পরে সরকার দলীয় এক নেতার নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী নির্বাহী প্রকৌশলীর কক্ষে ঢুকে তাকে লাঞ্ছিত করে ও দাফতরিক কাগজপত্র তছনছ করে। তাৎক্ষণিকভাবে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার আগেই সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।এ ঘটনায় ঠাকুরগাঁও থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান জানান, খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে সড়ক ও জনপদ অফিসে গেলে সন্ত্রাসী পালিয়ে যায়। এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁওয়ের প্রথম শ্রেণির ঠিকারদার মো. মনিরুজ্জামান জুয়েল জানান, বর্তমানে ই-টেন্ডারের মাধ্যমে সকল বড় বড় কাজের প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ই-টেন্ডারের মাধ্যমে কোনো অবৈধ কাজ করার সুযোগ নেই। এ বিষযে ঠাকুরগাঁও সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ মো. সোহেল আহম্মদ জানান, টেন্ডার আহ্বানের পর নিয়ম অনুযায়ী ঠিকাদাররা সিডিউল ড্রপ করে। সঠিকভাবে টেন্ডার দাখিল করতে না পারায় পাঁচজন ঠিকাদারের সিডিউল অযোগ্য ঘোষণা করা হয়। তারাই মূলত চেষ্টা করছে টেন্ডারটি বাতিল করতে।তিনি আরো বলেন, ই-টেন্ডারের মাধ্যমে কাউকে কাজ ভাগ করে দেয়ার সুযোগ নেই। এটি অনলাইনের মাধ্যমেই নিয়ন্ত্রণ করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। যেহেতু তিন কোটির উপরের কাজ তাই দিনাজপুর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী অফিস এটি নিয়ন্ত্রণ করেছে। কিন্তু যারা টেন্ডার ড্রপ করেনি তারা অফিসে এসে আমাকে লাঞ্ছিত করেছে।এ বিষয়ে দিনাজপুর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বুলবুল হোসেন জানান, ই-টেন্ডারে মাধ্যমে ঠিকাদাররা টেন্ডার ড্রপ করা হয়। এরপর লটারির মাধ্যমে মো.জামাল হোসেন নামে এক ঠিকাদার কাজের দায়িত্ব পান। তিন কোটি টাকার উর্ধ্বে হওয়ায় টেন্ডারের লটারি কাজটা করেছে দিনাজপুর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী অফিস।রবিউল এহসান রিপন/এআরএ/আরআইপি

Advertisement