জনমানবশূন্য সুনসান নীরব রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে ছোট্ট একটি শিশু। বয়স বছর পাঁচেক হবে। হাফ প্যান্টের উপরে একটি গেঞ্জি বেঁধে খালি গায়ে খেলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল সে। শিশুটির একহাতে কোমল পানীয়ের একটি খালি প্লাস্টিকের বোতল। আরেক হাতে সাইকেলের টায়ার। ফাঁকা রাস্তায় টায়ার ঠেলে দিয়ে হাতে থাকা প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে ধাক্কা মেরে দৌড়াদৌড়ি করে আপন মনে খেলছিল শিশুটি। মঙ্গলবার রাজধানীর নিউমার্কেটের প্রধান সড়কের দু’পাশে এমন একটি দৃশ্য জাগো নিউজের এ প্রতিবেদকের চোখে পড়ে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের আতঙ্কে যেখানে উচ্চবিত্ত ঘরের এ বয়সের শিশুরা গত তিন মাসেরও বেশি সময় যাবৎ গৃহবন্দি হয়ে ঘরে সময় কাটাচ্ছে, গ্যারেজ কিংবা ছাদের ছোট্ট জায়গাটিতে খেলতে যাওয়ার অনুমতি পাচ্ছে না, কখনো কিছুক্ষণের জন্য ছাদে ওঠার অনুমতি পেলেও মুখে মাস্ক হাতে গ্লাভস থাকবে তবেই যেতে পারে।
Advertisement
আর সেখানে ছোট্ট শিশুটির মতো অসংখ্য পথশিশু রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছে। করোনার ভয়ই নেই ওদের মনে। হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় ওদের পড়াশোনা করার সুযোগ হয় না। তারা দিনের বেলায় কাগজ কুড়িয়ে বিক্রি করার ব্যাপারে বাবা মা কে সাহায্য করে। দিনের বেলা ওদের খেলার ফুসরত মেলে না।
তাই রাতের বেলা কখনো টায়ার ঘুরিয়ে সাইকেল চালানো কিংবা কাগজ গোল করে বেঁধে বল বানিয়ে কখনো ফুটবল খেলে আবার কখনো কাঠের টুকরা দিয়ে ব্যাগ বানিয়ে ক্রিকেট খেলে। বর্তমানে করোনা সংক্রমণের কারণে রাস্তাঘাট ফাঁকা থাকায় ওরা ভীষণ খুশি।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে নিউ মার্কেটের সামনে খেলায় ব্যস্ত শিশুটি জানায়, রাস্তাঘাটে যানবাহন ও মানুষ কম থাকায় ওরা প্রতিদিনই রাতের বেলায় ফুটবল ক্রিকেট ও ছোঁয়াছুঁয়ি ইত্যাদি খেলা খেলতে পারে। এ কারণে সে ও তার বন্ধুরা ভীষণ খুশি।
Advertisement
এমইউ/এমআরএম