দেশজুড়ে

রাতের আঁধারে পলিথিনে মুড়িয়ে ছেলের লাশ ফেলে গেলেন বাবা

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ছেলের মরদেহ রাস্তার পাশে ফেলে গেলেন বাবা। অবশেষে ওই মরদেহ উদ্ধার করে সৎকার করেছে হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট ও টাঙ্গাইল জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ কর্তৃক গঠিত বিশেষ কমিটি।

Advertisement

এর আগে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে ছেলের মরদেহ ফেলে যান বাবা। পরে ওই মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করা হয়। মৃতের নাম চেতন চন্দ্র দাস। তিনি টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার আমজানী গ্রামের নকুল চন্দ্র দাসের ছেলে।

পুলিশ জানায়, ঢাকার এযারপোর্ট এলাকায় রিকশা চালাতেন চেতন চন্দ্র দাস। ৬-৭ দিন আগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

গত রোববার রাতে মারা যান চেতন চন্দ্র। মরদেহ এলাকায় সৎকার করতে বাধাপ্রাপ্ত হবেন ভেবে বাবা নকুল চন্দ্র দাস ও বড় ভাই অতুল চন্দ্র দাস রাতের কোনো একসময় পলিথিনে মুড়িয়ে মরদেহ দেলদুয়ার উপজেলার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ডুবাইল এলাকায় ফেলে যান।

Advertisement

রোববার সকালে দেলদুয়ার থানা পুলিশ অজ্ঞাত হিসেবে মরদেহ উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। পরে টাঙ্গাইল সিআইডি ক্রাইমসিন টিম ১৪ জুন ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করে। সোমবার টাঙ্গাইলের কাগমারী রানীদিনমনি শ্মশানে তার মরদেহ সৎকার করা হয়।

সৎকারকার্যে উপস্থিত ছিলেন হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের উপপরিচালক রমেশ চন্দ্র সরকার, পূজা পরিষদ টাঙ্গাইল জেলার সভাপতি অধ্যক্ষ আনন্দ মোহন দে ও সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার গুণ।

দেলদুয়ার থানা পুলিশের ওসি সাইদুল হক ভূইয়া বলেন, মৃত ব্যক্তির পরিবার সূত্রে জানা গেছে ঢাকায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। বাবা ও বড় ভাই মরদেহ এলাকায় না নিয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের নাসির গ্লাস কোম্পানির দক্ষিণ পাশে ডুবাইল এলাকায় ফেলে যান। ময়নাতদন্ত শেষে মৃতের কাকা পূন্য চন্দ্রের কাছে মরদেহ হস্তান্তর এবং সৎকার করতে খরচ হিসেবে পাঁচ হাজার টাকা দেয়া হয়।

পূজা উদযাপন পরিষদ টাঙ্গাইল জেলার সভাপতি অধ্যক্ষ আনন্দ মোহন দে বলেন, সড়কের পাশে ফেলে যাওয়া মৃত ব্যক্তি চেতন চন্দ্র দাস করোনাভাইরাসে মারা গেছেন। সৎকারের ব্যয়ভার বহন আর গ্রামবাসী আপত্তির ভয়ে পরিবারের লোকজন মরদেহটি ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে ফেলে যান। পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করাসহ নিহতের পরিচয় শনাক্ত করে। ধর্মীয় রীতি অনুসরণ করে তাকে সৎকার করা হয়েছে।

Advertisement

আরিফ উর রহমান টগর/এএম/এমকেএইচ