পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া জেলার বাগনানের পিপুল্যানের বাসিন্দা ১৬ বছর বয়সী নূর হোসেন। ২০১৮-তে জুনিয়র (অনূর্ধ্ব ১৫) আই লিগে খেলেছিল সে। গত বছর সুব্রত কাপও খেলেছিল। সাব জুনিয়র প্রতিযোগিতায় বেঙ্গল টিমেও খেলেছে বছর দুয়েক আগে। গত মৌসুমে দাপিয়ে বেড়িয়েছে কলকাতা লিগে। সেই ফুটবলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল চলতি বছরের নার্সারি লিগের। সবই ছন্দে চলছিল। কিন্তু করোনা আর আম্ফান যেন সব ওলটপালট করে দিল নূর হোসেনের জীবন। বুটজোড়া আপাতত তুলে রেখে সবজি বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছে নূর।
Advertisement
স্ট্রাইকার পজিশনে খেলা নূর ড্রিবল করে মাঠে বিপক্ষকে পরাস্ত করেছে বহুবার। কিন্তু এখন সে করোনার ড্রিবলে কুপোকাত। কাজ বন্ধ বাবা শেখ রফিক আলীর। যিনি পেশায় ট্রেনের হকার। রেল পরিষেবা বন্ধ থাকায় রোজগার নেই তার। সংসারের দায়িত্ব এসে পড়ে নূরের কাঁধে। পরিবারের পেট চালাতে সাইকেলে চেপে পাড়ায় পাড়ায় সবজি বিক্রি করতে হচ্ছে তরুণ ফুটবলারকে। তবে এমন অবস্থায় তার পাশে দাঁড়ালেন দিন প্রধানে খেলা ফুটবলার রহিম নবী।
করোনার দোসর হিসেবে এসেছিল আম্ফান। ঘূর্ণিঝড়ে তাদের বাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়। ছাউনির টালি, মাটির দেয়াল নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এমন করুণ পরিস্থিতিতে নূরের পরিবারের পাশে দাঁড়ায় বাগনানের বিধায়ক অরুণাভ সেন। সরকারের দেয়া ২০ হাজার টাকা পাওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করেন। মঙ্গলবার প্লেয়ার্স ফর হিউম্যানিটিও নূরের সাহায্যে এগিয়ে আসে। সেই সংস্থার সঙ্গেই যুক্ত ময়দানের চেনা মুখ নবি। এদিন নূরের বাড়ি যান তিনি। প্রিয় ফুটবলারকে দেখে আপ্লুত নূর। বাড়ি মেরামতির জন্য নবীদের সংস্থার পক্ষ থেকে প্রায় ৩৪ হাজার টাকা দেয়া হয়। মাথার ওপর ছাদের ব্যবস্থা হলেও অবশ্য পেটের টান পিছু ছাড়ছে না।
নূরের মা নূর নেহা বেগমের কথায়, 'নূরের বাবা এখন ১০০ দিনের কাজ করছেন। যদিও আয় সামান্যই। তাই আপাতত নূরকে সবজি বিক্রি করেই হয়তো দিন গুজরান করতে হবে।'
Advertisement
তবে তরুণ ফুটবলারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন ইউটিলিটি ফুটবলার নবী। বড় হয়ে জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন দেখে নূর। কিন্তু লকডাউনের মধ্যে দারিদ্র্য আষ্টেপৃষ্ঠে ধরেছে তাকে। তবে নূরের আশা, একদিন সব প্রতিকূলতা কেটে যাবে।
সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন
জেডএ/এমকেএইচ
Advertisement