ধর্ম

অসুস্থ হয়ে গেলেও যে সাওয়াব পাবে মুমিন

সুস্বাস্থ্য ও সুস্থতা মহান আল্লাহ তাআলার নেয়ামত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুস্বাস্থ্য ও সুস্থতার মর্যাদা তুলে ধরে বলেন, 'তোমরা অসুস্থ হওয়ার আগে সুস্থতাকে মর্যাদা বা গুরুত্ব দাও।'

Advertisement

তারপরও যদি কেউ কোনো কারণে অসুস্থ হয়ে যায়। এ অসুস্থতাও ওই ব্যক্তির গোনাহের কাফফারা বলে ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্বনবি। এ অসুস্থতার ফলে ওই ব্যক্তির গোনাহ মাফ হয়ে যায়। হাদিসে এসেছে-হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, মুমিন ব্যক্তি রোগাক্রান্ত হলে আল্লাহ তাকে (গোনাহ থেকে) এমনভাবে পরিচ্ছন্ন করেন, যেমন হাপড় লোহাকে পরিচ্ছন্ন করে।' (আদাবুল মুফরাদ)

অসুস্থ ব্যক্তির সাওয়াব লাভঅসুস্থ ব্যক্তি সুস্থ থাকাকালীন সময়ে যেসব নেক আমল, ইবাদত-বন্দেগি করতো, অসুস্থ হওয়ার পর আল্লাহ তাআলা ওই ব্যক্তিকে সুস্থথাকাকালীন সময়ের ইবাদত-বন্দেগির সাওয়াব দান করেন। হাদিসে এসেছে-- হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, 'কোনো ব্যক্তি রোগাক্রান্ত হলে সেই অবস্থায় সে তার সুস্থাবস্থায় যেরূপ আমল করতো সেরূপ সাওয়াব তার জন্য লেখা হয়।' (মুসনাদে আহমাদ, মুসনাদে বাযযার, মুসতাদরাকে হাকেম, আদাবুল মুফরাদ)

- হজরত আনাস ইবনে মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে কোনো মুসলমানকে আল্লাহ যখন দৈহিকভাবে পরীক্ষায় ফেলেন, তার সুস্থাবস্থায় সে যেরূপ আমল করতো ঠিক তদ্রুপ সাওয়াব তার আমলনামায় লেখা হতে থাকে, যতক্ষণ সে রোগাক্রান্ত থাকে। অতপর যদি তিনি তাকে রোগমুক্ত করেন তবে তাকে (গোনাহ থেকে) ধুয়ে (পরিচ্ছন্ন করে) দেন, আর যদি তাকে মৃত্যু দান করেন তবে তাকে ক্ষমা করে দেন।' (মুসনাদে আহমাদ, মুশকিলুল আছার, আদাবুল মুফরাদ)

Advertisement

উল্লেখিত হাদিসগুলো থেকে এ বিষয়টি সুস্পষ্ট যে, কোনো আমলই কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। মুমিন মুসলমানের প্রতি মহান আল্লাহর একান্ত অনুগ্রহ যে, আল্লাহ তাআলা তার মুমিন বান্দাকে সুস্থ অবস্থায় আমল করার তাওফিক দান করেন। আবার বান্দা যখন অসুস্থ হয়ে যায়, তখন সুস্থ অবস্থায় যেভাবে আমল-ইবাদত করতো সেভাবে আমল-ইবাদতের সাওয়াব দানে ধন্য করেন।

এ কারণে মুমিন মুসলমান উভয় অবস্থায় যেমন মহান আল্লাহর পরিপূর্ণ কৃতজ্ঞতা আদায় করে। তেমনি আল্লাহর রহমত এবং নেয়ামতও মুমিন বান্দার প্রতি সব সময় নাজিল হতে থাকে।

মুমিন মুসলমানের উচিত, সুস্থতাকে মর্যাদা দেয়া। স্বাস্থ্যের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখা। ইবাদত-বন্দেগিতে মনোযোগী হওয়া। আর অসুস্থ হয়ে গেলেও মহান আল্লাহর উপর পরিপূর্ণ আস্থা এবং বিশ্বাস রাখা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সুস্থ অবস্থায় যথাযথভাবে ইবাদত-বন্দেগি করার তাওফিক দান করুন। অসুস্থ অবস্থায়ও আল্লাহর স্মরণে নিজেকে নিয়োজিত রাখার তাওফিক দান করুন। হাদিসে ঘোষিত যথাযথ ফজিলত ও মর্যাদা লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।

Advertisement

এমএমএস/এমকেএইচ