পরিবারের সবার কিংবা প্রিয়জনদের অসুখ-বিসুখে খেয়াল রাখেন, তাদের মন খারাপের দিনে পাশে থাকেন- এগুলো খুবই ভালো স্বভাব। কিন্তু একটু লক্ষ করুন তো, সবার খেয়াল কম-বেশি রাখলেও নিজের প্রতি আপনি কতটা যত্নবান? হয়তো নানা অপ্রাপ্তি, ছোট ছোট মন খারাপ লুকিয়ে রাখতে গিয়ে এক সময় তা বড় আকার ধারণ করবে। তখন আপনি হঠাৎই অচেনা আচরণ শুরু করবেন। অবাক হবেন নিজেও, আমি তো এমন নই! কিন্তু দিনে দিনে যে অজান্তেই আপনি ডুবেছেন হতাশায়, সেই খবর রাখেননি নিজেও!
Advertisement
শরীরের যেকোনো সমস্যা যেমন শুধু প্রিয়জনদের সঙ্গে কথা বললেই সারে না, মানসিক নানা সমস্যাও তেমনই। দুই ক্ষেত্রেই প্রয়োজন হয় চিকিৎসার। কিন্তু আমরা শুধু শারীরিক সমস্যার দিকেই গুরুত্ব দেই, মানসিক সমস্যা দেখেও দেখি না।
পৃথিবীতে প্রচুর মানুষ রয়েছেন যারা দুঃখ কষ্টের সঙ্গে লড়াই করে টিকে আছেন। তবু তারা চেষ্টা করেন প্রিয় কাজটি করার, প্রিয় মানুষের সঙ্গে মেশার। এর কারণ হলো নিজেকে ভালো রাখা। তাই কে কী বললো তা না ভেবে বরং নিজের প্রিয় কাজটিই করুন। তবে হ্যাঁ, এটুকু দেখতে হবে যে আপনার কারণে যেন কারো ক্ষতি না হয়। দৃষ্টিকটু নয়, এমন যেকোনো কাজই আপনি করতে পারেন নিজের মন ভালো রাখার জন্য।
এমনটা ভাববেন না যে, অন্যরা আপনাকে পুরোটাই বুঝতে পারবে। বরং নিজেই নিজেকে বোঝার চেষ্টা করুন। কীসে আপনি ভালো থাকছেন তা খুঁজে বের করুন। কাউকে অনুসরণ না করে বরং নিজের ভালোলাগার কাজটাই করুন।
Advertisement
একটি তালিকা করতে পারেন। কীসের তালিকা? আপনার কোন কাজগুলো করতে ভালোলাগে, কোন কাজগুলো করার ইচ্ছা রয়েছে, তার। তারপর সেই তালিকা ধরে এগিয়ে যান।
জীবনে ভালো থাকতে হলে বিরক্তিকর মানুষগুলোকে এড়িয়ে চলার বিকল্প নেই। যারা আপনাকে ছোট করে কথা বলে আনন্দ পায়, আপনার উচিত হবে তাদের সেই সুযোগটা না দেয়া। তাই মানুষ বাছতে শিখুন।
যারা খারাপ সময়েও পাশে থাকবে, তাদের সংস্পর্শে থাকার চেষ্টা করুন। দুঃসময়ে যারা সাহস জোগাবে, মনে রাখবেন, সেই আপনার প্রকৃত শুভাকাঙ্ক্ষী।
আপনার ভেতরকার কোনো সমস্যা আপনার থেকে ভালো অন্য কেউ বুঝতে পারবে না। তাই ভেতরে কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না তা ভেবে দেখুন। সমস্যা মনে হলে তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন। আর খুঁজে পেলে তা সমাধানের চেষ্টা করুন।
Advertisement
যত ব্যস্ততাই থাকুক না কেন, নিজের জন্য একান্ত কিছু সময় রাখুন। সেই সময়টা আপনি সম্পূর্ণই নিজের মতো করে কাটাবেন। নিজেকে নিয়ে ভাবার জন্য অবসরটুকু থাকতেই হবে।
প্রিয়জনদের উপহার দিলে বা মজার মজার রান্না করে খাওয়ালে খুশি হয় না? একইভাবে খুশি রাখুন নিজেকেও। নিজেই নিজেকে উপহার দিন, পছন্দের খাবার রান্না করে খান। যত্ন নিন নিজের।
সব রকম ভালো অভ্যাস গড়ে তুলুন। স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, নিয়মিত শরীরচর্চা করা, সবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা, প্রিয়জনদের খোঁজ-খবর রাখা, কাউকে সাহায্য করা, ধর্মীয় প্রার্থনা করা, বই পড়া ইত্যাদি কাজগুলো নিয়মিত করার চেষ্টা করুন। মন ভালো থাকবে।
এইচএন/এমকেএইচ