আন্তর্জাতিক

ছায়াপথেই রয়েছে কয়েক ডজন উন্নত ও বুদ্ধিমান প্রাণীর বসবাস!

এই মহাবিশ্বে একমাত্র পৃথিবী নামক গ্রহটিই বসবাসযোগ্য। এবং আমরা মানুষরাই সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রাণী। জ্ঞানে-বিজ্ঞানে, তথ্যপ্রযুক্তি-কোন ক্ষেত্রে পিছিয়ে মানুষ? আমাদের আছে উন্নত সব আবিষ্কার।

Advertisement

তবে এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের একমাত্র বুদ্ধিমান প্রাণী হিসেবে নিজেকে গর্ব করার দিন মনে হয় শেষ হয়ে আসছে। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, পৃথিবী থেকে হাজার হাজার আলোকবর্ষ দূরে ছায়াপথে মানুষের মতো বা তার থেকেও উন্নত ও বুদ্ধিমান প্রাণী বসবাস করার সম্ভাবনা রয়েছে।

অনেক আগে থেকেই বিজ্ঞানীরা বলে আসছেন পৃথিবীর বাইরে এলিয়েন নামের বুদ্ধিমত্ত্বাসম্পন্ন প্রাণীর উপস্থিতির কথা। তবে এ বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেননি তারা। ফলে এলিয়েনদের উপস্থিতি নিয়েও রয়েছে দ্বিমত।

তবে নটিংহ্যাম ইউনিভার্সিটির গবেষকরা বলছেন, পৃথিবী থেকে অন্তত ১৭ হাজার আলোকবর্ষের দূরত্বে ছায়াপথে অন্তত ৩৬ ধরনের সভ্যতা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তারা অত্যন্ত বুদ্ধিমত্ত্বাসম্পন্ন, যোগাযোগে সক্ষম ও সক্রিয়।

Advertisement

তাদের এ-সংক্রান্ত গবেষণা নিবন্ধটি সোমবার দ্য অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, এতদিন যে পদ্ধতিতে পৃথিবীর বাইরে প্রাণের সন্ধান করা হতো বিজ্ঞানীরা সেই পদ্ধতিতে পরিবর্তন এনেছেন। তাদের প্রাথমিক অনুমান হলো, যেভাবে পৃথিবীতে উন্নত প্রাণীর বিকাশ ঘটেছে সেই একইভাবে ছায়াপথেও বুদ্ধিমান প্রাণের বিকাশ হবে, যদি সেখানকার এক্সোপ্ল্যানেটের (এক ধরনের গ্রহ যা তারাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়) পরিবেশ পরিস্থিতি পৃথিবীর মতো হয়। অর্থাৎ সেই এক্সোপ্ল্যানেট চরিত্রের দিক থেকে সূর্যের মতো একটি নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে পৃথিবীর মতো সমদূরত্বে আবর্তিত হতে হবে। ছায়াপথে এ রকম অন্তত ৩৬টি এক্সোপ্ল্যানেটের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীর মতোই এই এক্সোপ্ল্যানেটগুলোতে ৫০০ কোটি বছরই লেগেছে উন্নত জীবের বিকাশের জন্য।

তবে প্রশ্ন হলো উন্নত বা বুদ্ধিমান জীব বলতে কাদের বোঝাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের মতে, যারা মহাকাশে রেডিও তরঙ্গ পাঠাতে সক্ষম তারাই বুদ্ধিমান প্রাণী।

তবে রেডিও তরঙ্গ পাঠিয়ে তার উত্তর জানার জন্য ১৭ হাজার আলোকবর্ষ দূরত্বটা একটু বেশি মনে হচ্ছে বিজ্ঞানীদের কাছে। গবেষকদের ধারণা, এখনো এই গ্রহের বুদ্ধিমান প্রাণীদের আয়ত্বে সে রকম কোনো প্রযুক্তি নেই।

Advertisement

গবেষক দলের প্রধান ও নটিংহ্যাম ইউনিভার্সিটির অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের প্রফেসর ক্রিস্টোফার কনসেলিস বলেছেন, মিল্কিওয়ে ছায়াপথে অন্তত কয়েক ডজন সভ্যতার অস্তিত্ব রয়েছে। তাদের উপস্থিতি তখনই বোঝা যাবে যদি তারা ক্রমাগত নিয়মিতভাবে রেডিও সিগন্যাল পাঠাতে থাকে। তাদের গবেষণা অবশ্য শুধুমাত্র পৃথিবীর বাইরেও বুদ্ধিমান জীবের অন্বেষণেই নিয়োজিত রয়েছে তা নয়; মানবসভ্যতার ‘ভবিষ্যৎ’ ও ‘ভবিতব্য’ সম্পর্কে একটি ধারণাও তারা করতে চাইছেন বলে জানিয়েছেন গবেষক দলের নেতা।

তবে এমন এক্সোপ্ল্যানেটের সংখ্যা মাত্র ৩৬টি হলেও শূন্য নয় ভেবে পুলকিত বিজ্ঞানীরা। এখন দেখার বিষয় সত্যিই এমন বুদ্ধিমত্ত্বাসম্পন্ন প্রাণী রয়েছে কি-না।

এসআর/জেআইএম