হাতে হ্যান্ডমাইক। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে করোনা প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন; বিভিন্ন দোকান ও পাড়া-মহল্লায় মানুষের জটলা দেখলেই সতর্ক করছেন তারা।
Advertisement
ঠিক এভাবে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে ময়মনসিংহের একদল স্বেচ্ছাসেবক। হ্যান্ডমাইক হাতে সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন মহল্লায় ও রাস্তায় ঘুরে ঘুরে অসচেতন মানুষকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রতিনিয়ত সচেতন করছেন এসব স্বেচ্ছাসেবক। অথচ এমন প্রচারণার কাজে তাদের একটি হ্যান্ডমাইক দেয়নি কেউ। ধার করা হ্যান্ডমাইক দিয়ে করোনা প্রতিরোধের সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। এই স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রধান লাভলী আকন্দ।
লাভলী আকন্দ বলেন, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষকে সচেতন করার জন্য করোনা সংক্রমণের প্রথমদিকে একটি হ্যান্ডমাইক ভাড়া করেছিলাম। সেটি দিয়ে প্রচারণা চালিয়ে গেছি আমরা। পরে ওই হ্যান্ডমাইক আর ভাড়া দেয়া হয়নি আমাদের। এ অবস্থায় একটি হ্যান্ডমাইক ধার করি আমরা। প্রচারণা শেষে এই হ্যান্ডমাইক আবার ফেরত দেয়া হয়।
বিষয়টি নিয়ে আক্ষেপ করে নিজের ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে লাভলী আকন্দ লিখেছেন, ‘বাংলাদেশে করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার উদ্দেশ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বাস্থ্যবিধি মানুষকে জানানোর জন্য সবার কাছেই একটা হ্যান্ডমাইক চেয়েছি। কেউ দেয়নি। তবুও বসে থাকিনি। ময়মনসিংহের জুবলিঘাট এরিয়ায় প্রিয়া মাইকের দোকানের বাচ্চু ভাইয়ের কাছ থেকে মাইক নিয়েছি ভাড়ায়, তাও বাকিতে। সারাদিন মাইকিং করেছি। মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা চালিয়েছি। এরপর খালি গলায় শুরু করলাম। পরে ভাবলাম সম্ভব নয়, আবারও কয়েকজনকে জানানো হলো একটা হ্যান্ডমাইকের ব্যবস্থা করার জন্য। না! কেউ পাত্তাই দিলো না।’
Advertisement
তিনি আরও লিখেছেন, ‘তারপর স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে জানতে পারি ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফারুক ভাইয়ের হ্যান্ডমাইক আছে। জানতে পেরে তাকে কল দিলাম। গেলাম তার কাছে। তিনি আন্তরিকতার সঙ্গে হ্যান্ডমাইক ধার দিলেন। তারপর হ্যান্ডমাইক নিয়ে কাজ শুরু করলাম। কয়েকদিন প্রচারণা করলাম। মানুষ আমাদের কথাকে গুরুত্বও দিতে লাগলো (কিছু মানুষ বাদে)। হ্যান্ডমাইক ফেরত দেয়ার কথা। ফিরিয়ে দিলাম। তাদের এলাকায় তারাও কাজ করছেন। আবার করোনা সতর্কতা নিয়ে মুখে মুখে মানুষকে জানানো, আর প্ল্যাকার্ডে সচেতনতামূলক বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছি। একটা হ্যান্ডমাইকের জন্য আমাদের কাজ থেমে থাকেনি। কাজ করে যাচ্ছি। হয়তো কষ্ট হচ্ছে আমাদের।’
লাভলী আকন্দ বলেন, একজন মানুষও যদি আমাদের কথা শুনে তাহলে শ্রম সার্থক হবে। আমি পুরো ধামরাই উপজেলায় ঘুরে ঘুরে করোনাভাইরাস সম্পর্কে সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করব।
করোনা প্রতিরোধে প্রচারণায় হ্যান্ডমাইকের ব্যবস্থা না করার বিষয়ে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ হাফিজুর রহমান বলেন, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়রকে বিষয়টি জানান।
এএম/এমকেএইচ
Advertisement