ভারতের করোনা সংক্রমণের কেন্দ্রস্থল বলা হচ্ছে দেশটির বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বাইকে। কিন্তু সংক্রমণ ব্যাপক হারে বাড়তে শুরু করায় অচিরেই এ তকমা দিল্লির কপালে জুটবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
Advertisement
দিল্লি সরকার ইতোমধ্যেই জানিয়েছে, জুলাই মাসের মধ্যে ভারতের রাজধানী শহরটিতে করোনা রোগীর সংখ্যা সাড়ে পাঁচ লাখে পৌঁছাতে পারে। তবে সেই ভয়াবহ পরিস্থিতি আসার আগে এখনই রোগী সামাল দিতে নাভিশ্বাস উঠছে দিল্লির।
পুরো শহরজুড়ে করোনা রোগীরা এখনই হাসপাতালে বেড পাচ্ছেন না। সরকারি হাসপাতালগুলোর বাইরে একটা বেডের জন্য অসহায়ভাবে ছুটোছুটি করছেন রোগীদের স্বজনেরা। এর মধ্যেই হঠাৎ করোনা টেস্টিং কমিয়ে দিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। চার-পাঁচদিন ছুটোছুটি করেও টেস্ট করাতে না পারার অভিযোগ তুলেছেন অনেকেই।
দুরবস্থা শুধু সাধারণ মানুষের নয়, সাবেক এমপি কিংবা জনপ্রিয় তারকাদেরও। বিভিন্ন টিভি সিরিয়ালের পরিচিত মুখ দীপিকা সিং গোয়েল দু’দিন আগে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে ভিডিও বার্তা পোস্ট করে জানিয়েছেন, তার বৃদ্ধা মা করোনা পজিটিভ শনাক্ত হলেও কোথাও ভর্তি করাতে পারছেন না। হাসপাতালে বেডের ব্যবস্থা করে মাকে বাঁচানোর তীব্র আকুতি জানিয়েছেন তিনি।
Advertisement
রাজ্যসভার সাবেক সদস্য শাহিদ সিদ্দিকি টুইটারে জানিয়েছেন, দিল্লির কোনও হাসপাতালে ভর্তি করাতে না পেরে তিনি এক নিকটাত্মীয়কে হারিয়েছেন।
এমন সংকটের জন্য বেসরকারি হাসপাতালগুলোকেই দায়ী করছে দিল্লি সরকার। তাদের দাবি, বেসরকারি হাসপাতালগুলো মুখে বেড নেই বললেও চার-পাঁচ লাখ টাকা দিলেই ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
দিল্লিতে এমন শোচনীয় পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবকে দায়ী করছেন অনেকে। এমনকি সার্বিক অব্যবস্থাপনার জন্য সুপ্রিম কোর্টও দিল্লি সরকারের কড়া সমালোচনা করেছে।
তবে রোববার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে দিল্লি সরকারের মুখোমুখি বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন।
Advertisement
অমিত শাহও জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকার দিল্লিতে ৫০০ রেলের কামরা দিয়ে বাড়তি আট হাজার বেডের ব্যবস্থা করবে। দু’দিনের মধ্যে দ্বিগুণ করা হবে করোনা টেস্টিংয়ের সংখ্যাও।
কিন্তু দিল্লি সরকারের হিসাব মতো সত্যিই যদি দেড় মাসের মধ্যে শহরটিতে সাড়ে পাঁচ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়, তখন সেই পরিস্থিতি কি সামলানো যাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে অনেকের মনে।
সূত্র: বিবিসি বাংলাকেএএ/