আন্তর্জাতিক

সিয়াটলের নির্দিষ্ট এলাকাকে স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল ঘোষণা

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের সিয়াটল শহরের বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের কর্মীরা একটি নির্দিষ্ট এলাকা দখলে নিয়ে ওই অঞ্চলকে স্বায়ত্তশাসিত হিসেবে ঘোষণা করেছে। গত ৮ জুন সিয়াটল পুলিশের ইস্ট প্রিসিংক্ট ভবন খালি করে পুলিশ সদস্যরা চলে গেলে তা দখলে নেয় আন্দোলনকারীরা।

Advertisement

জর্জ ফ্লয়েড হত্যার পর যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য শহরের মতো সিয়াটলেও ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ এর ব্যানারে বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। এরপর সেখানে পুলিশ ও আন্দোলনকারীরা মুখোমুখি অবস্থানে ছিল। টানা কয়েকদিন পর মুখোমুখে অবস্থানের সমাপ্তির পুলিশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করলে বিক্ষোভকারীর এমন ঘোষণা দেয়।

শুক্রবার সিয়াটল পুলিশের ইস্ট প্রিসিংক্ট ভবনসহ এর আশপাশের ছয়টি ব্লককে ‘স্বায়ত্তশাসিত’ অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করে আন্দোলনকারীরা। সিয়াটলের ক্যাপিটল হিল এলাকার ভবনটিতে স্প্রে পেইন্ট দিয়ে বিক্ষোভকারীরা লিখে দিয়েছে, ‘সিয়াটল পিপলস ডিপার্টমেন্ট’। সেখানে পুলিশকে ‘অবাঞ্ছিত’ বলে ঘোষণা করেছে তারা।

মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, আন্দোলনকারীরা ভবনটি দখলে নিয়ে তার আশপাশের ছয়টি ব্লক নিয়ে নিজেদের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করে। একে তারা ক্যাপিটল হিল অটোনমাস জোন বা চ্যাজ নামে অভিহিত করছে। স্বায়ত্তশাসিত এই অঞ্চলটি নিউইয়র্কের জুকোটি পার্কের কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছে।

Advertisement

‘উই আর ৯৯ পারসেন্ট’ স্লোগান তুলে জুকোটি পার্কে যে ‘ওকিউপাই ওয়ালস্ট্রিট আন্দোলন’ ২০১১ সালে হয়েছিল, সেখানেও আন্দোলনকরীরা বিশেষ একটি অঞ্চল নিজেদের বলে ঘোষণা করেছিল। জুকোটি পার্কে শুরু হওয়া সেই আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্র ছিল এই সিয়াটলেই।

পূর্বের মতোই এবারও সিয়াটলের ওই স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে চলছে গান, কবিতা ও চিত্রকর্মের এক উৎসব বলা যায়। বিক্ষোভকারীদের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তরফ থেকে আসছে খাবার, চিকিৎসাসেবার জন্য রয়েছেন স্বেচ্ছাসেবীরা। রাস্তাগুলো তারা রাঙিয়ে দিচ্ছেন নানা ছবি, স্লোগান ও প্রতিবাদী শব্দমালায়।

এখন পর্যন্ত ওই এলাকা পুনরায় নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার কোনো চেষ্টা পুলিশ করেনি। সিয়াটলের মেয়র জেনি ডারকান অবশ্য আগেই আন্দোলনকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘এখন কথা বলার সময় নয়। কথা অনেক হয়েছে। এখন কাজের সময়। কৃষ্ণাঙ্গদের অধিকার প্রশ্নে আমি কী করছি, তা জনগণই দেখবে।’

এর আগে বুধবার সিয়াটলের পরিস্থিতি নিয়ে টুইট করেন ট্রাম্প। তিনি দাবি করেন, শহরটির পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ফেলেছেন বিক্ষোভকারীরা। ‘পুলিশমুক্ত শহরটির’ নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে সেনা মোতায়েনের হুঁশিয়ারি দেন। ট্রাম্প বলেন, ‘এটা খেলা নয়, অনেক হয়েছে। এখনই দ্রুত এসব কুৎসিত নৈরাজ্যবাদীকে থামাতে হবে।’

Advertisement

ট্রাম্পের ওই হুমকির জবাবে বৃহস্পতিবার বেশ বিদ্রূপাত্মকভাবে দিয়েছেন মেয়র জেনি ডারকান। তিনি টুইট করেন, ‘সবাই নিরাপদে আছে। আপনি আপনার বাংকারে ফিরে যান।’ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে বিদ্রূপ করতে টুইটারে যোগ দেন ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের গভর্নর জে ইনসেলও।

এসএ