মাত্র ১০ মাস আগে প্রেম করে পালিয়ে বিয়ে। প্রেমিকার পরিবার প্রথম দিকে এ বিয়ে মেনে না নিলেও সন্তানের মঙ্গল কামনা করে পরে মেনে নেয়। নববধূকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতেই ওঠে রোমান (১৯)। কিন্তু বিয়ের বছর পেরোতে না পেরোতেই নিজের হাতে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন স্ত্রীকে। এরপর নতুন নাটক সাজান। তবে শেষ পর্যন্ত স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন আদালতে।
Advertisement
কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার চৌদ্দশত ইউনিয়নের চুপিনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গত বৃহস্পতিবার রাতে স্ত্রী রোজা আক্তার শারমীনকে (১৯) গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করেন রোমান (১৯)। শনিবার বিকেলে কিশোরগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাসলিম আক্তারের আদালতে স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন রোমান।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মো. রোমান চৌদ্দশত ইউনিয়নের চুপিনগর গ্রামের ওয়াহেদ ওরফে অহিদ মিয়ার ছেলে। আর নিহত রোজা আক্তার শারমীন একই গ্রামের আব্দুল করিমের মেয়ে।
Advertisement
পুলিশ জানায়, রোমানের সঙ্গে প্রতিবেশী শারমীনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায় ১০ মাস আগে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে তারা বিয়ে করে। বিয়ের পর প্রথমে মেয়ের অভিভাবক মেনে না নিলেও এলাকাবাসীর উদ্যোগে তারা এই বিয়ে মেনে নেন। এরপর থেকে শারমীনদের বাড়িতেই রোমান স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন।
কিছুদিন আগে থেকে শারমীন মোবাইলে অন্য কারো সঙ্গে কথা বলে এমন অভিযোগ তুলে স্ত্রীর সঙ্গে তর্কাতর্কি হয় রোমানের। এ ঘটনার জের ধরে বৃহস্পতিবার (১১ জুন) রাত সাড়ে ৮টার দিকে পার্শ্ববর্তী একটি ইটভাটার খালি জায়গায় শারমীনকে ডেকে নিয়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে রোমান। পরে লাশ ঘটনাস্থলে ফেলে রেখে শ্বশুরবাড়িতে ফিরে যায়।
ঘটনা ধামাচাপা দিতে শ্বশুরবাড়িতে ফিরে গিয়ে রোমান তার শাশুড়ি হালিমা খাতুনের কাছে শারমীনের খোঁজ করে। তখনই শাশুড়ি হালিমা খাতুন মেয়ে শারমীনকে আশপাশের বাড়িতে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। এক পর্যায়ে রাত ৯টার দিকে বাড়ির পাশে একটি ইটভাটা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় নিহত শারমীনের মা হালিমা খাতুন বাদী হয়ে শুক্রবার রাতে মো. রোমানকে একমাত্র আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। এর পরই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
Advertisement
নূর মোহাম্মদ/এফএ/পিআর